আইএমএফের ঋণ

প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণের প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার বুঝে পেয়েছে বাংলাদেশ। আইএমএফের কাছ থেকে অর্থ পাওয়ার পর গতকাল দিন শেষে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলারে। এদিন রিজার্ভ থেকে ব্যাংকগুলোর কাছে কোটি ৩০ লাখ ডলার বিক্রি করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মুখপাত্র মেজবাউল হক বণিক বার্তাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বছরের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের নির্বাহী বোর্ডের সভায় বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। সাত কিস্তিতে ৪২ মাসে ঋণ পাবে বাংলাদেশ। ঋণের গড় সুদের হার দশমিক শতাংশ। ৪৭০ কোটি ডলারের মধ্যে দুই ধরনের ঋণ রয়েছে। বর্ধিত ঋণ সহায়তা বা বর্ধিত তহবিল (ইসিএফ অ্যান্ড ইএফএফ) থেকে পাওয়া যাবে ৩৩০ কোটি ডলার। রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির আওতায় পাওয়া যাবে ১৪০ কোটি ডলার।

ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের পর এক বিবৃতিতে আইএমএফ জানায়, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষা, সামাজিক উন্নয়নমূলক ব্যয়ে সক্ষমতা তৈরিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা, আর্থিক খাত শক্তিশালী করা, নীতি কাঠামো আধুনিক করে তোলা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার কাজে ঋণ সাহায্য করবে।

বৈদেশিক মুদ্রার সংকট মেটাতে গত বছরের জুলাইয়ে আইএমএফের কাছে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণসহায়তা চেয়েছিল বাংলাদেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থাটির এশীয় প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে গত ২৬ অক্টোবর ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে। তার সফরে সরকার, মন্ত্রণালয় বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে আইএমএফের ঋণসহায়তা পাওয়ার জন্য যেসব সংস্কার শর্ত পরিপালন করতে হবে সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় ঋণসহায়তা চূড়ান্ত করার আগে শেষ মুহূর্তের আলোচনা করতে বছরের ১৪-১৮ জানুয়ারি ঢাকা সফর করেন আইএমএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ। সফরকালীন তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনের সঙ্গে বৈঠক করেন।

প্রসঙ্গত, ঋণসহায়তা পেতে হলে সরকারকে আর্থিক খাত সংস্কার কার্যকর সুশাসন প্রতিষ্ঠার শর্ত দিয়েছে আইএমএফ। ব্যাংকে সুদহারের সীমা তুলে দেয়ার পাশাপাশি ডলারের বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হিসাবায়নে সংস্কার আনারও তাগিদ দিয়েছে বহুজাতিক ঋণ সংস্থাটি। জুড়ে দেয়া হয়েছে রাজস্ব খাতের সংস্কার, ভর্তুকি বন্ধের মতো কঠিন শর্তও।

আইএমএফের দেয়া শর্তগুলো যাতে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হয় সেজন্য এরই মধ্যে একটি উচ্চপর্যায়ের তদারকি কমিটি গঠন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় দপ্তরের ২২ জন সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই কমিটি আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির আওতায় নীতি কার্যক্রম বাস্তবায়নের বিষয়টি পর্যালোচনা করবে। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ের নজরে আনবে কমিটি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন