রোজিনা ইসলামের মামলায় নারাজি আবেদন

বিশিষ্ট নাগরিকদের উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদনের পরও বাদীপক্ষ থেকে নারাজি আবেদন দেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ২০ বিশিষ্ট নাগরিক। গতকাল গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২১ সালের ১৭ মে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি কক্ষে প্রায় ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্তা নির্যাতন করা হয়। পরে শাহবাগ থানার পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়। রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে ১৯২৩ সালের অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট দণ্ডবিধির দুটি ধারায় মামলা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ছয়দিন পর আদালতের আদেশে তিনি জামিনে মুক্তি পান।

রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে যেসব ধারায় মামলা দেয়া হয়েছে, তার কোনোটিই একজন পেশাদার সাংবাদিকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে না। ওই আইনে আছে, গোপন স্থান থেকে কোনো তথ্য নিলে সেটি দণ্ডনীয় হবে। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কোনো গোপন স্থান নয় এবং সেখান থেকে পেশাগত কাজে সাংবাদিকদের তথ্য নিতেও আইনগত বাধা নেই।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলা অধিকতর তদন্তের জন্য গত ২৩ জানুয়ারি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ওই মামলায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ার প্রায় সাত মাস পর বাদীর নারাজি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। তার আগে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ডিবি বলেছিল, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সপক্ষে কোনো উপাদান পাওয়া যায়নি। কারণে চূড়ান্ত প্রতিবেদনে রোজিনা ইসলামকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এর অর্থ রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পেশাগত দায়িত্ব পালনরত একজন নারী সাংবাদিককে হেনস্তা করেই ক্ষান্ত হয়নি, পুলিশের তদন্তে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ার পরও নারাজি আবেদন দিয়ে হয়রানি অব্যাহত রেখেছে। আমরা মনে করি, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আচরণ স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি হুমকি। আমরা আইন আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বিষয়টির সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাই।

বিবৃতিতে সই করা ২০ বিশিষ্ট নাগরিক হলেনসিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি এমএ মতিন, রওনক জাহান, কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, আবুল কাসেম ফজলুল হক, পারভীন হাসান, রামেন্দু মজুমদার, ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, মামুনুর রশীদ, মইনুল ইসলাম, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, আবুল মোমেন, আনু মুহাম্মদ, রাশেদা কে চৌধূরী, শাহরিয়ার কবির, জেড আই খান পান্না, এমএম আকাশ, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, সঞ্জীব দ্রং তানজিম উদ্দিন খান।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন