এশিয়ায় ইতিহাসের সর্বোচ্চ জ্বালানি তেল আমদানি

বণিক বার্তা ডেস্ক

চীনের জেইজিয়াং প্রদেশের নিংবো জাওসান বন্দরে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল টার্মিনালে ভিএলসিসি ট্যাঙ্কার ছবি: রয়টার্স

এশিয়ায় চলতি বছরের প্রথম মাসে ইতিহাসের সর্বোচ্চ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি হয়েছে। আমদানি বাড়া-কমার পেছনে সাধারণত শীর্ষ আমদানিকারক চীনের প্রভাব থাকে সবচেয়ে বেশি। তবে মাসে রেকর্ড আমদানিতে দেশটির অবদান ছিল না। চীন জাপান ছাড়া অন্যান্য দেশে আমদানি বেড়েছে। খবর রয়টার্স।

জ্বালানি তেলের বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান রেফিনিটিভের সমন্বিত তথ্যানুযায়ী, জানুয়ারিতে এশিয়ার দেশগুলোয় প্রতিদিন কোটি ৯১ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি হয়েছে, যা ডিসেম্বরের তুলনায় ১১ দশমিক শতাংশ বেশি। ওই সময় প্রতিদিন কোটি ৬২ লাখ ২০ হাজার টন করে আমদানি হয়েছিল।

রেফিনিটিভ জানায়, গত বছরের নভেম্বরে এশিয়ায় ইতিহাসের সর্বোচ্চ জ্বালানি তেল আমদানি রেকর্ড করা হয়। আমদানির পরিমাণ ছিল দৈনিক কোটি ৯১ লাখ ব্যারেল। গত মাসে এর চেয়েও বেশি আমদানি হয়েছে। কভিড-১৯-সংক্রান্ত বিধিনিষেধ থেকে চীনের অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত হতে শুরু করায় দেশটিতে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা ব্যাপক হারে বাড়বে বলে ধারণা করছিলেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। কিন্তু বাস্তবে তেমনটা ঘটেনি।

জানুয়ারিতে চীনের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দৈনিক কোটি লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল, যা গত বছরের ডিসেম্বরে আমদানীকৃত কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার এবং নভেম্বরের কোটি ১৪ লাখ ২০ হাজার ব্যারেলের চেয়ে কম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি তুলনামূলক কমে যাওয়ার মূল কারণ চীনে নতুন বছরের ছুটি। কারণে চলতি মাসের আমদানিও কিছুটা নিম্নমুখী থাকতে পারে। তবে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এর পরের মাস থেকে আমদানি ব্যাপক হারে বাড়ার প্রত্যাশা রয়েছে।

যদিও বেশকিছু বিষয় এখনো অনিশ্চয়তার আভাস দিচ্ছে। কারণ ভবিষ্যৎ সরবরাহের পাশাপাশি প্রত্যক্ষ বাজারে চাহিদার ঘাটতিও আমদানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এছাড়া পর্যটন ভ্রমণ খাতের প্রসারের ওপরও চাহিদা প্রবৃদ্ধির গতি নির্ভর করছে।

বেইজিং সম্প্রতি পরিশোধন কেন্দ্রগুলোর জন্য রফতানি কোটা ইস্যু করায় চীনের ডিজেল গ্যাসোলিনের মতো পরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি বেড়েছে। দেশের পরিশোধকদের মুনাফায় জ্বালানি জোগাচ্ছে এটি।

এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় শীর্ষ জ্বালানি তেল আমদানিকারক দেশ ভারত। জানুয়ারিতে দেশটির আমদানি রেকর্ড স্পর্শ করেছে। সময় আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দৈনিক ৫২ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল, ডিসেম্বরে যা ছিল দৈনিক ৪৭ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল। রাশিয়া থেকেই সবচেয়ে বেশি আমদানি করা হয়েছে। জানুয়ারিতে দেশটি থেকে আমদানির পরিমাণ ছিল দৈনিক ১৩ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল।

ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর আগে রাশিয়া ভারতের বাজারে সামান্য পরিমাণে জ্বালানি তেল সরবরাহ করত। কিন্তু যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশটি চীন ভারতসহ এশিয়ার বাজারে জ্বালানি তেল বিক্রি রেকর্ড পরিমাণ বাড়িয়েছে।

এশিয়ার অন্যান্য দেশের আমদানিতেও গত মাসে প্রবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার আমদানি দৈনিক সাড়ে ২৮ লাখ থেকে বেড়ে ৩১ লাখ ১০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত হয়েছে। সিঙ্গাপুরের আমদানি দৈনিক লাখ ১০ হাজার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১৬ লাখ ব্যারেলে। এক্ষেত্রে জাপানে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। গত বছরের ডিসেম্বরে দৈনিক ২৯ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেল আমদানি করলেও জানুয়ারিতে তা কমে ২৮ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেলে নেমেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন