রংপুরে সালিশে দুই নারীকে নির্যাতন

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৯ জনের কারাদণ্ড

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, রংপুর

রংপুরের বদরগঞ্জে সালিশে দুই নারীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বেঁধে নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আয়নাল হকসহ তিনজনকে ১৪ বছরের সশ্রম এবং আরো ছয় আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২-এর বিচারক রোকনুজ্জামান এ রায় দেন।

১৪ বছরের দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন বদরগঞ্জ উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আয়নাল হক ও তার সহযোগী মহুবুল ও চিকনা এনামুল। তাদের আরো ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া অন্য ছয় আসামি ইলিয়াছ, বাবলু, সেকেন্দার মণ্ডল, রউফ মণ্ডল, মোটা এনামুল ও মজম আলীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। 
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৫ জুন বদরগঞ্জ উপজেলার তৎকালীন মধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান আয়নাল হকের নির্দেশে অন্য আসামিরা রাজারামপুর গ্রামের দুই নারীকে চরিত্রহীন অপবাদ দিয়ে বাড়ি থেকে মারতে মারতে তুলে নিয়ে আসেন। পরে স্থানীয় কাশিপুর লিচুবাগান এলাকার একটি মাঠে সালিশের নামে ইউপি চেয়ারম্যান আয়নাল হকের উপস্থিতিতে দুই নারীর হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করা হয়। এ সময় কয়েক দফা জ্ঞান হারিয়ে ফেললেও তাদের ওপর নির্যাতন অব্যাহত রাখা হয়।
বিষয়টি নিয়ে সে সময় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় মামলা করেন ভুক্তভোগী এক নারী। মামলায় চেয়ারম্যান আয়নালসহ ৫৬ জনকে আসামি করা হয়। পুলিশ তদন্ত শেষে ৫৬ জন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। মামলার বিচারকাজ চলাকালে দুই আসামি মারা যান। পরে ৫৪ আসামির বিরুদ্ধে পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন দেয়। দীর্ঘ ১১ বছর পর বিচারক নয়জনকে কারাদণ্ড ও বাকি ৪৫ আসামিকে মামলা থেকে বেকসুর খালাস দেন।
এ বিষয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-২-এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন জানান, আদালতে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের সাজা দেয়া হয়েছে। এ রায়ে বাদীপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে। এ রায়ের মাধ্যমে আদালত বার্তা দিলেন, নারীদের প্রতি সহিংসতা করলে তার শাস্তি পেতেই হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন