
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা থেকে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার স্পট রফতানি আদেশ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ২৭তম বাণিজ্য মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। মাসব্যাপী এ মেলার আয়োজন করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আহমেদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
টিপু মুনশি বলেন, ‘এবারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় মানুষের আগ্রহ অনেক বেড়েছে। অংশগ্রহণকারী বেড়েছে প্রায় ৩৭ শতাংশ। মেলায় প্রায় ৩০-৩৫ লাখ দর্শনার্থী এসেছে, বেচাকেনা হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকার। স্পট রফতানি আদেশ মিলেছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার।’
বাণিজ্য মেলা রফতানির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত বছর ৫১ বিলিয়ন (৫ হাজার ১০০ কোটি) মার্কিন ডলার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করে প্রকৃত রফতানি হয়েছিল ৬১ বিলিয়ন (৬ হাজার ১০০ কোটি) মার্কিন ডলার।
গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের নতুন পণ্য উৎপাদন করে প্রক্রিয়াকরণ, বহুমুখীকরণ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে রফতানির বাজার সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তিনির্ভর বর্তমান সময়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে হবে। সেদিকে লক্ষ রেখে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।’
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপায়ণের লক্ষ্যে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে শিল্পসমৃদ্ধ উন্নত সোনার বাংলা গড়ার পথে অগ্রসর হচ্ছেন। এ লক্ষ্যে তিনি রূপকল্প ঘোষণা করে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে নিয়ে যেতে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারীর সময়ে প্রধানমন্ত্রী বস্ত্র খাতসহ সকল ব্যবসায়ীদের মাঝে আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেন। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্পপ্রতিষ্ঠান খুলে রাখার পক্ষে সাহসী সিদ্ধান্ত নেন, ফলে বিশ্বব্যাপী চরম অর্থনৈতিক মন্দার সময়েও দেশের প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সঠিক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের কারণে দেশ এক মহাবিপর্যয় কাটিয়ে উন্নত বিশ্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’
উল্লেখ্য, মেলায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার দেয়া হয়েছে ১০টি প্যাভিলিয়ন ও স্টলকে, দ্বিতীয় পুরস্কার দেয়া হয়েছে ১৩টি প্যাভিলিয়ন ও স্টলকে এবং তৃতীয় পুরস্কার দেয়া হয়েছে ১১টি প্যাভিলিয়ন ও স্টলকে। এছাড়া শ্রেষ্ঠ নারী উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে চার প্রতিষ্ঠানকে, বেস্ট ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে তিনটি প্রতিষ্ঠান, বেস্ট ফার্নিচার উৎপাদনকারী বা রফতানি প্রতিষ্ঠান হিসেবে চার প্রতিষ্ঠানকে এবং ইনোভেটিভ পণ্য উৎপাদনকারী বা বিক্রেতা হিসেবে দুটি প্রতিষ্ঠানকে ট্রফি দেয়া হয়।