বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর ১.১৫ কিলোমিটার দৃশ্যমান

শামীম রাহমান, টাঙ্গাইল থেকে ফিরে

ছবি : বণিক বার্তা

যমুনা নদীতে গড়ে উঠছে স্বতন্ত্র রেল সেতু। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটির কাজ এগিয়ে চলছে পুরোদমে। এরই মধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর প্রায় ১ দশমিক ১৫ কিলোমিটার অংশ। সেতুটির নির্মাণ কাজের মেয়াদ ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকলেও ২০২৪ সালের আগস্টের মধ্যেই সেতুটি চালুর সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। আজ সোমবার (৩০ জানুয়ারি) টাঙ্গাইলে সেতুর নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে গিয়ে এমন সম্ভাবনার কথা জানান তিনি।


রেলমন্ত্রী বলেন, ‘সেতুর পশ্চিম প্রান্তে  অগ্রগতি কিছুটা কম তবে ঠিকাদার তাদের কাজের গতি বাড়িয়ে দিয়েছে।  ফলে পুরো প্রকল্পটি তার নির্ধারিত সময় ২০২৪ সালের আগস্টের আগেই ট্রেন চলাচলের জন্য খুলে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’


মন্ত্রী আরো বলেন, ‘এই সেতু ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন হচ্ছে। এখানে ব্রডগেজে  ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলবে এবং সেতু পার হতে পাঁচ মিনিট সময় লাগবে যেটি এখন প্রায় ৪০ মিনিট সময় লাগছে। ফলে সময় অনেক কমে যাবে।  এই সেতুর মাধ্যমে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হবে ।ফলে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল, ভুটানের সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ বাড়বে। অধিক সংখ্যক ট্রেন চালানো সম্ভব হবে যার ফলে অভ্যন্তরীণ ট্রেন বৃদ্ধিসহ আন্তঃদেশীয় ট্রেনও অধিক হারে চালানো যাবে এবং ভারত থেকে সরাসরি মালবাহী ট্রেন চালানো সম্ভব হবে।’


সরেজমিন প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সেতুর পূর্ব পাশের টাঙ্গাইল অংশে ১২টি পিয়ারের ওপর ১১টি স্প্যান বসানো হয়েছে, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। সেতুর দুই পাশেই কাজ চলছে। তবে পূর্ব পাশে কাজ এগিয়েছে বেশি। এই অংশের ২৭টি পিলারের বেশিরভাগ কাজ শেষ। সেতুর পশ্চিম প্রান্ত সিরাজগঞ্জ অংশে বসবে প্রায় ২৩টি পিয়ার। এই প্রান্তের কাজ পিছিয়ে আছে। ৩টি পিলারের কাজ শেষ হয়েছে। বাকিগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ে নির্মানকাজ চলছে।


প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, ৪৯টি স্প্যানের মধ্যে ২৪টি স্প্যান এরই মধ্যে সাইটে এসে পৌঁছেছে। অবশিষ্ট ২৫টি স্প্যানের বিভিন্ন ধরণের কাজ চলছে। চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৫৫ ভাগ, আর্থিক অগ্রগতি ৪০ দশনিক ৯০ ভাগ।


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্প ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর অনুমোদন দেয় একনেক সভা। তখন এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। কিন্তু নানা কারণে তখন সেতু নির্মাণে জটিলতা তৈরি হয়। পরে গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি প্রথম সংশোধিত প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। অনুমোদিত প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন বা জাইকার কাছ থেকে ঋণ হিসেবে পাবে বাংলাদেশ। বাকি অর্থ দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। গত ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন