ছেলেদের টেনিসে নোভাক জোকোভিচের কর্তৃত্ব এখানেই শেষ হবে কি? তিনি বলেছেন ‘না’, কোচও বলেছেন ‘না’।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে রেকর্ড দশম ও যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ গ্র্যান্ডস্লাম শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়ার পর র্যাংকিংয়েরও এক নম্বরে উঠেছেন জোকোভিচ। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স আর অর্জন অন্তত এটাই বলছে যে, জোকোভিচ এখনই থামছেন না।
স্তেফানো সিসিপাসকে হারানোর পর রোববার রাতে সংবাদ সম্মেলনে জোকোভিচ বলেছেন, ‘আমার এখনো অনেক উদ্দীপনার জায়গা রয়েছে। দেখা যাক, এটি আমাকে কতদূর টেনে নেয়। আমি সত্যিই এখানে থামতে চাই না। আমার এখানেই থামার কোনো ইচ্ছাও নেই। টেনিসটা এ মুহূর্তে দারুণ লাগছে। আমি জানি, যখন শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালো অনুভব করি, তখন যেকোনো খেলোয়াড়কে হারিয়ে গ্র্যান্ডস্লাম জিততে পারি।’
এ কথার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করা কঠিনই।
কোনো পুরুষ খেলোয়াড় তার চেয়ে বেশি মেজর শিরোপা জেতেননি। ২২টি শিরোপা জিতে রাফায়েল নাদালের সঙ্গে যুগ্মভাবে চূড়ায় অবস্থান করছেন সার্বিয়ান সুপারস্টার। তার চেয়ে বেশি শিরোপা আছে শুধু দুজন নারীর (মার্গারেট কোর্ট ২৪ ও সেরেনা উইলিয়ামসের ২৩)।
গত বছর কভিড-১৯ টিকা না নেয়ায় জোকোভিচকে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেলতেই দেয়া হয়নি। সেই টুর্নামেন্টে এভাবে ফেরা যায়? জয় শেষে তিনি আবেগটা ধরে রাখতে পারেননি, মা ও টিম সদস্যদের সঙ্গে উদযাপন করতে গিয়ে কেঁদেছেন তিনি। পরে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘এক বছর পর টুর্নামেন্টে খেলা, প্রতিদিন মনোযোগ ধরে রাখা ও অনেক বেশি প্রাণশক্তি খুঁজে নেয়া সত্যিই কঠিন ছিল। দেখা যাক, এখন আর কতদূর যেতে পারি আমি।’
তাকে নিয়ে সিসিপাস বলেছেন, ‘নোভাক এমন একজন খেলোয়াড় যে কিনা আপনার সেরাটা বের করে আনবে।’
সিসিপাস এটা ভালো করেই জানেন। কেননা সার্বিয়ান খেলোয়াড়ের বিপক্ষে বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছেন। ২০২১ সালের ফ্রেঞ্চ ওপেন ফাইনালে হেরেছেন। এবার হারলেন মেলবোর্নে। গ্রিক খেলোয়াড়টি বলেন, ‘আমি এটিকে অভিশাপ হিসেবে দেখছি না। এটি বিরক্তিকরও নয়। এটি খেলার জন্যই ভালো—তার মতো প্রতিদ্বন্দ্বী পাওয়া, তার মতো চ্যাম্পিয়ন পাওয়া।’
৪১ বছর বয়সী ফেদেরার অবসর নিয়েছেন। নাদাল আগামী জুনে পা দেবেন সাইত্রিশে। মে মাসে জোকোভিচ পা দেবেন ছত্রিশে। টেনিসের তিন বিখ্যাত খেলোয়াড়ের অন্যতম জোকোভিচকে আর কতদিন দেখা যাবে? এ নিয়ে ২০১৯ সাল থেকে জোকোভিচের কোচ হিসেবে কাজ করা ও ২০০১ সালের উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন গোরান ইভানিসেভিচ বলেন, ‘নিঃসন্দেহে দুই থেকে তিন বছর। সে যেভাবে শরীরের যত্ন নেয়, খাদ্যাভাস ও অন্য সবকিছু যেভাবে সামলায় তা অবিশ্বাস্য।’
এ নিয়ে দুই সন্তানের জনক জোকোভিচ কী ভাবছেন? তার কথায়, ‘আমি কতদিন খেলব কিংবা আর কতটি স্ল্যাম জিতব, তা জানি না। এটা কিন্তু শুধু আমার শরীরের ওপরই নির্ভর করে না। শারীরিকভাবে আমি হয়তো নিজেকে ফিট রাখতে পারব। অবশ্যই ৩৫ কিন্তু ২৫ নয়। যদিও সেরকম বিশ্বাসই রাখি আমি। আমি মনে করি, সামনে সময় আছে আমার। দেখি কতদূর যেতে পারি।’ এপি।