থাইল্যান্ড নির্বাচনে থাকসিন কন্যার জয়ের সম্ভাবনা কতটুকু?

বণিক বার্তা ডেস্ক

ব্যাংককে নির্বাচনী প্রচারণায় পিউ থাই পার্টির নেতা পায়টংটার্ন সিনাওয়াত্রা ছবি: দ্য স্ট্রেইটস টাইমস

থাই প্রধানমন্ত্রী পদের স্বপ্ন বুনছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার কন্যা পায়টংটার্ন সিনাওয়াত্রা। থাইল্যান্ডের আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তিনি সে রকম প্রত্যাশাই ব্যক্ত করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, তার দল নির্বাচনে ব্যাপক ব্যবধানে জয় তুলে নেবে। সিনাওয়াত্রা পরিবারের উত্তরসূরি বাবা ফুফুর মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন কিনা তা দেখার অপেক্ষায় আছেন পর্যবেক্ষকরা।

দ্য স্ট্রেইটস টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের মে মাসে থাইল্যান্ডে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে লক্ষ্যেই নিজ দল পিউ থাইয়ের প্রচার কর্মসূচিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন পায়টংটার্ন। অবশ্য নিজ দলের প্রধান নেতা হিসেবে মনোনীত হতে লড়তে হবে ধনকুবের শ্রেত্থা থাবিসিনের সঙ্গে। পায়টংটার্ন জানিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে নিজ দলের মনোনীত প্রার্থী হতে তিনি শতভাগ প্রস্তুত।

থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য নং খেইতে নির্বাচনী প্রচারণাকালে এক সাক্ষাৎকারে পায়টংটার্ন বলেন, থাইল্যান্ডের এখন উন্নতি দরকার। এর জন্য আরো সুপরিকল্পিত নীতি গ্রহণ করতে হবে। সাধারণ জনগণের জন্য আরো উন্নত জীবনমান নিশ্চিত করতে হবে। তারা আট বছর ধরে ভুগছে এবং আমি মনে করি এর সমাধান দরকার। আমাদের দল জনগণকে সহায়তা করতে প্রস্তুত সক্ষম।

থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে সিনাওয়াত্রা পরিবারের আধিপত্য পুরনো। সম্প্রতি এক জরিপে প্রধানমন্ত্রী পদে পায়টংটার্নকে সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জনমত জরিপে দেখা যায়, আগামী নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন জয়ের সম্ভাবনাও রয়েছে তার দল পিউ থাইয়ের। পায়টংটার্ন বলেন, বর্তমানে জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় পারিবারিক ঋণের চাপে ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতি ব্যাপক জনঅসন্তুষ্টি নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে। এর ফলে সামরিক সমর্থিত প্রায়ুত চ্যান-ওচার সরকারকে পরাজিত করে পিউ থাই পার্টির দীর্ঘ আট বছর পর ক্ষমতায় ফেরার পথ সুগম হবে।

২০১৯ সালের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়েছিল পিউ থাই পার্টি। তবে সেনাবাহিনীর সমর্থিত পালাং প্রচারথের নেতৃত্বাধীন দলগুলোর জোটের কারণে সরকার গঠন প্রক্রিয়া ভেস্তে যায়। এর পর থেকে দেশটিতে জনবিক্ষোভ বাড়তে থাকে। কখনো বেতন বাড়ানোর দাবি আবার কখনো খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বাড়ানোর দাবি। কয়েক বছর ধরে সরকারের বিপক্ষে রকম আন্দোলন ঠেকাতে হিমশিম খেতে হয়েছে কর্তৃপক্ষকে।

২০১৪ সালে থাকসিনের বোন ইংল্যাক সিনাওয়াত্রাকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করেছিলেন প্রায়ুত চ্যান-ওচা। এরপরে মূল্যস্ফীতি পারিবারিক ঋণের চাপ বাড়ায় বিপাকে পড়েন তিনি।

গত দুই দশকে থাই সাধারণ নির্বাচনে সিনাওয়াত্রা বংশের সঙ্গে জড়িত দলগুলো সবচেয়ে বেশি আসন জিতেছে। অতীতে কৃষকদের জন্য ফসলের মূল্য সহায়তা ব্যবস্থা বীমা পরিকল্পনা চালু করেছিল দলগুলো। আগামী নির্বাচনে বর্তমান সরকারের প্রতি জনবিক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করার পথে হাঁটছে পিউ থাই পার্টি। এদিকে নির্বাচনী প্রচারণায় বেশ ভালোই আলো ছড়াচ্ছেন পায়টংটার্ন সিনাওয়াত্রা। নির্বাচনী ফলাফল কেমন হবে, কতটা দক্ষ নেতৃত্বে দলকে এগিয়ে নিতে পারবেন সেটা এখন দেখার বিষয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন