
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে দুই যুবক নিহতের জেরে প্রতিপক্ষের বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১ হাজার ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আজ শনিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে গ্রাম পুলিশ সুশীল চন্দ্র দাস বাদী হয়ে এ মামলাটি করেন।
ঘোড়াঘাট থানার ওসি আবু হাসান কবীর জানান, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামে ১০ শতক জায়গার মালিকানা নিয়ে হায়দার আলীর সঙ্গে ওমর আলীর বিরোধিতা চলে আসছিল। এ বিষয়ে আদালতেও মামলা চলমান রয়েছে। বুধবার সকালে ওমর আলীসহ তার পরিবারের লোকজন বিরোধপূর্ণ ওই জমিতে এলে বাধা দেয় হায়দার আলীর ছেলেরা। একপর্যায়ে কথা কাটাকাটি এবং সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ সংঘর্ষে খোদাদাদপুর চারমাথা এলাকার হায়দার আলীর ছেলে মিম (২৪) ও একই এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে রাকিব (২৫) নামে দুই যুবকের মৃত্যু হয়।
পরের দিন বৃহস্পতিবার বিকালে খোদাদাদপুরের বিক্ষুব্ধ লোকজন পাশের চুনিয়া গ্রামে প্রবেশ করে বাড়িঘর ও খড়ের পালায় আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে বসতবাড়ির আসবাবপত্র ও মালামাল পুড়ে যায়। খবর পেয়ে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের লোকজনেরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে নেয়।
এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর আতঙ্কে দিন কাটছে গ্রামবাসীর। তারা বলছেন, গ্রামে দুটি সন্তান হারানোর শোক আর মামলার আতংক বিরাজ করছে। অথচ এ ঘটনার সঙ্গে তারা জড়িত ছিলেননা। পাশ্ববর্তী বিভিন্ন গ্রামের লোকজন পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। গ্রামটির স্থানীয় বাসিন্দা ফিজুমিয়া বলেন,আমাদের গ্রামের মারা যাওয়া দুজন যুবকের জানাযার নামাজে আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের লোকজন অংশ গ্রহণ করেছিলো। নামাজ শেষে তারাই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। এই ঘটনায় আমাদের গ্রামের কেও জড়িত ছিলনা। তারেকুজ্জামান নামের আরেকজন বলেন, আমরা তো সন্তান হারানোর শোকে শোকাহত। এ শোক নিয়ে আমরা কেন মানুষের বাড়িতে আগুন লাগাতে যাব। আমার মনে হয় কোন একটি চক্র হত্যার ঘটনার মোড় ঘুরাতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা উভয়পক্ষ দীর্ঘদিন থেকে শান্তিতে বসবাস করে আসছিলাম। তবে দুঃখজনক ইস্যুকে কেন্দ্র করে কারা আমাদের বাড়িঘরে আগুন দিল, তাদেরকে শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান ভুট্টু বলেন, সম্প্রীতি কমিটিতে আমাকে প্রধান করা হয়েছে। আমরা উভয়পক্ষকে নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে শান্তি বজায় রাখতে চেষ্টা করছি। আশা করছি সব কিছু আবার আগের মতই স্বাভাবিক হবে। ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু হাসান কবির বলেন,বাড়ি ঘরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আমরা ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে এবং আমাদের সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদেরকে শনাক্তের চেষ্টা করছি।