স্যাংশন নয়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় আগামী নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে

ছবি: আইডিএসএ

মনোহর পরিকার ইনস্টিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিসের রিসার্চ ফেলো শ্রুতি এস পাটনায়েক ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি গবেষণা করেন। প্রতিবেশী দেশ দুটির সম্পর্ক, ডোনাল্ড লুর সফর, বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলন আসন্ন নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আনিকা মাহজাবিন

দুই দেশের সরকার দাবি করছেগত এক দশকে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নতুন এক উচ্চতায় পৌঁছেছে। যেটিকে বলা হচ্ছে সোনালি অধ্যায়। সম্পর্কের উচ্চতা নিয়ে আপনার অভিমত জানতে চাই।

বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক প্রথমবারের মতো নয়। সুদীর্ঘ ৫০ বছর ধরে দুদেশের মধ্যে সম্পর্ক আছে। সব সম্পর্কে উত্থান-পতন থাকে। দুদেশের কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হয়নি, যেভাবে হওয়ার কথা। আবার কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে। দুদেশের মধ্যকার উন্নতির বিষয়গুলো হলো বাইলেটারাল ট্রেড। এতে উভয় দেশেরই উন্নতি হয়েছে। যেখানে ১৯ বিলিয়ন ডলার রফতানির মধ্যে ভারতের ১৭ বিলিয়ন ডলার, বাংলাদেশের প্রায় বিলিয়ন ডলার। তবে উন্নতিই শেষ নয়, আরো অগ্রগতির সুযোগ আছে। যেমন এখন দুই দেশ এফটিএর বিষয়ে কথা বলছে। কারণ বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। অনেক সুবিধা বাংলাদেশ পাচ্ছে, উন্নয়নশীল দেশ হলে সেগুলো আর থাকবে না। কেবল ভারতের সঙ্গে নয়, বাংলাদেশ অনেক দেশের সঙ্গেই এফটিএ নিয়ে আলোচনা করছে।

ট্রানজিট নিয়ে চুক্তি হয়েছে কিন্তু তত ভালোভাবে ট্রানজিট হয়নি, ভারত বাংলাদেশের মাধ্যমে সেভাবে উত্তর-পূর্বাংশে জিনিসপত্র পাঠাতে পারছে না। জন্য রাস্তা, কালভার্ট, ব্রিজ, রেলওয়ে দরকার। ওইগুলো এখন ভারত লাইন অব এগ্রিমেন্টের মাধ্যমে কার্যকর করছে। অবশ্য যতগুলো প্রকল্প এখন কার্যকর হওয়ার কথা, সেভাবে হয়নি। রাজনৈতিক সম্পর্ক যখন ভালো থাকে, তখন কিন্তু সমস্যাগুলোর কথা বলে সমাধান করা যায়।

তৃতীয়ত, পিপল টু পিপল কন্ট্যাক্টের অংশ হিসেবে ভারত ১০ লাখ ভিসা দিয়েছে বাংলাদেশীদের। এখন ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন হিসেবে ভারত বাংলাদেশের টপে আছে। উন্নতি হয়েছে বলেই মেডিকেল ভিসায়ও আলাদা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, যাতে রোগীর সঙ্গে আরো একজন আসতে পারে।

সীমান্ত সমস্যাসহ অন্য সমস্যাগুলো কীভাবে বসে আমরা সমাধান করতে পারি, এর জন্য চেষ্টা থাকা দরকার। যে ক্রাইমগুলো সীমান্তে হয়, ওইগুলো যাতে আমরা অ্যাড্রেস করতে পারি। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তে যেসব জায়গায় সমস্যা হচ্ছে, তার সমাধান করতে হবে।

বাণিজ্যের বাধাগুলো আমরা কীভাবে দূর করব। যেমন ল্যাব টেস্টিং বর্ডারের পাশাপাশি একটা জায়গায় করতে পারি, যেখানে বাংলাদেশের কর্মকর্তা থাকবে, একই সঙ্গে ভারতের কর্মকর্তাও থাকবে। যাতে পণ্যগুলো অনেকদিন আটকে থাকবে না। আর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের বিষয়টা সহজ করতে পারি কিনা সেটা দেখতে হবে।

সীমান্তের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো পানির বিষয়টি। এটি নিয়ে এখন নিয়মিত মিটিং হচ্ছে না। প্রতিনিয়ত মিটিং করতে থাকলে একটা না হোক, ১০ নম্বর মিটিংয়ে এসে সমস্যার সমাধান হবে। তিস্তা ইস্যু নিয়ে কোনো রেজল্যুশন নেই। ভারতের দিক থেকে ওয়েস্ট বেঙ্গল থেকে একটা সমস্যা হয়েছে। কারণ যখন নির্বাচন হয়, তখন সবাইকে বলে আমাদের মানুষের জল দরকার। এটার রেজল্যুশন দরকার। তবে আমরা কীভাবে করব সেটি দেখতে হবে।

বাংলাদেশের নির্বাচন পরিস্থিতি মানবাধিকার নিয়ে অন্য দেশগুলোর বিশেষ করে পশ্চিমা রাষ্ট্রদূতরা কথা বলছেন। আগামী নির্বাচনে এটি কোনো প্রভাব ফেলবে কি?

আমি বলব ডিসিশন মেকার হলো বাংলাদেশীরা। তারাই ঠিক করবে কীভাবে নির্বাচন হবে, কীভাবে হবে না। বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলছে, কিন্তু একইভাবে অন্যান্য দেশের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলছে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এখানকার ভূরাজনীতিটা এমন যে তারা নির্দিষ্ট কিছু বিষয় বাছাই করে কথা বলে। বাংলাদেশের সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলার জন্য সিলেক্টিভ ইস্যু নিয়ে কথা বলছে। চীনের বিরুদ্ধে উইঘুর নিয়ে কথা বলে। আবার অনেক জায়গায় ধরনের বিষয় নিয়ে কথা বলে না। এটি অবশ্যই ভূরাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এটা মূলত আসন্ন নির্বাচনে বাংলাদেশের সরকারকে চাপে ফেলার জন্য। বাংলাদেশের মানুষ পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা পেয়েছে। তাই আমি নিশ্চিত বাংলাদেশের মানুষের কাছে শক্তি আছে, তাদের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী পরিবর্তন সাধন করার। তাদেরই সামনে থাকা উচিত। অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর কথা বলাটা বৈধসেটি বিএনপি, ঐক্যজোট বা অন্য বাম দলগুলোও হতে পারে।

বিএনপি বলছে তারা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করছে। আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে বলে আপনি মনে করেন?

বিএনপি একটি নিবন্ধিত দল। দলটির কথা বলার সে অধিকার আছে। আমি তাদের আন্দোলন দেখেছি। তবে আমি বলব তারা নিজেরা যদি এগুলো রেইজ করে মোবিলাইজ করতে পারে, তাহলে সেটি ভালো। সরকারের ওপর প্রেসার তৈরির জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর ওপর নির্ভর করার চেয়ে অবশ্যই সেটি ভালো। যতটুকু হোক, যেভাবে হোক রাজনৈতিক দলগুলোকে পরবর্তী নির্বাচন সামনে রেখে জনসম্পৃক্ততামূলক কর্মসূচি নির্ধারণই সবচেয়ে ভালো স্ট্র্যাটেজি হবে।

বিএনপির আন্দোলনে মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয় ভূমিকা রাখছে বলে আপনি মনে করেন?

২০১৮ সালের নির্বাচনে এতটা জনসম্পৃক্ত ছিল না দলটি। যে ইস্যুগুলো সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করে সে বিষয়গুলো থাকলে জনসম্পৃক্ততা বাড়ে। আমি বলব নির্বাচনের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশন এতটা তাত্পর্যপূর্ণ নয়। বিষয়টি ভোটের বেলায় খুব বেশি প্রভাব ফেলবে বলে মনে হয় না। আন্তর্জাতিক বিষয় নয় বরং দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ই নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে। যেহেতু সরকার অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোতে কাজ করছে, তাই তার বিষয়গুলো নিয়েই সমালোচনা করা উচিত। তাহলে সাধারণ মানুষ ভাববে দল তো আমাদের কথা বলছে।

ডোনাল্ড লুর ভারত হয়ে বাংলাদেশ সফর কী ধরনের ইঙ্গিত দেয় বলে আপনি মনে করেন?

যখন প্রেসিডেন্ট বা প্রধানমন্ত্রী আসেন বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে, তখন তারা একটা-দুইটা বা তিনটা দেশে একসঙ্গে আসেন। চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী যখন শেষবার এসেছিলেন, তিনি বাংলাদেশ থেকে শ্রীলংকা গিয়েছেন। আমার মনে হয় না এখানে বাংলাদেশ নিয়ে কোনো কনসালটেশন হয়েছে। কারণ আমরা পড়শি। বাংলাদেশের কিছু হলে ভারত যেভাবে প্রভাবিত হবে অথবা ভারতের কিছু হলে বাংলাদেশ যেভাবে প্রভাবিত হবে, সেটি আমেরিকা হবে না। যখন ডোনাল্ড ট্রাম্প এসেছিলেন, তিনিও একইভাবে ক্লাস্টার ভিত্তিক ভিজিট করেছেন। এটি প্রথমবার নয়, এর আগে অনেকবার হয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ ভারতের সর্বোচ্চ আমদানিকারক দেশ। কিন্তু প্রতিবেশী বাংলাদেশের ওপর ভারতের বাণিজ্যের বাধাগুলো এখনো বিদ্যমান। বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখেন?

অবশ্যই বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ট্রেড ইমব্যালান্স আছে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে সবসময় রাজনৈতিক বিষয় থাকে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি যেমন, সেটি চীনের সঙ্গে নয়। ভারতের বিষয় হলে মানুষ খুব লক্ষ্য করে শোনে। চীনের বেলায় মানুষের আগ্রহ তেমনটি নয়।

বাংলাদেশ ভারত থেকে যেমন আমদানি করছে সেগুলোর বেশির ভাগই গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কাজে লাগছে। বাংলাদেশকে দুটি কাজ করতে হবে। প্রথমত, বাংলাদেশের ট্রেড বাস্কেট বাড়াতে হবে, যাতে আরো কিছু প্রডাক্ট ভারত বাংলাদেশ থেকে আনতে পারে। দ্বিতীয়ত, নন-ট্যারিফ ব্যারিয়ার যেগুলো আছে যেমন রুল অব অরিজিন, ল্যাবরেটরি টেস্টিংয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে। কিছু বিষয় উন্নতি হয়েছে। যেমন বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং চুক্তি হয়েছে। যেটিতে দুই দেশ কাজ করছে। এগুলো চিহ্নিত করে কাজ করতে হবে। তবে যেহেতু ভারত একটি বড় দেশ, সে তুলনায় বাংলাদেশ অনেক ছোট, সুতরাং এখানে বাণিজ্য বৈষম্য থাকবেই।

বাংলাদেশের ফেনী নদী থেকে পানি উত্তোলন, ট্রানজিটসহ অন্যান্য সুবিধা ভারত পেয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ তিস্তার পানির জন্য অনেক দিন ধরে দাবি করে আসছে। বিষয়ে আপনার অভিমত জানতে চাই।

আমার কাছে মনে হয় কেন্দ্রীয় সরকার আন্তরিক আছে সমস্যাটি সমাধানের জন্য। বাংলাদেশের বিষয়গুলোর সিদ্ধান্ত যেমন রাষ্ট্র একাই নিতে পারে, আমাদের বেলায় এমনটি নয়। এখানে রাজ্যগুলো প্রভাব ফেলে। আন্তর্জাতিক নীতি নিয়ে যেমন কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিতে পারে কিন্তু কৃষিসহ আরো কিছু বিষয়ে কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। সুতরাং কেন্দ্র রাজ্যকে ছাড়া কিছু করতে পারবে না।

আমি বলব এটা নিয়ে ঐকমত্যে আসতে হবে। সম্ভবত ২০১১ সালে কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল, তখন তাদের মাধ্যমে মমতাকে বুঝিয়ে এটির সমাধান করার দরকার ছিল।

এখন আমরা যদি আরেকটা চুক্তি করতে পারি যেখানে সবাই একমত হয়। কারণ বিনাচুক্তি অবস্থায় রেখে দিলে কোনো সমাধান হবে না দিনশেষে সম্পর্কটা মানুষকেন্দ্রিক। তাদেরকে বাদ দিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক হতে পারে না।

চীন বাংলাদেশের উন্নয়নের অনেক বড় একটি অংশীদার হিসেবে অবস্থান করছে। এটি ভারতের জন্য আশঙ্কার কোনো কারণ কি?

চীনের অবশ্যই স্বার্থ আছে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে। আগে তাদের প্রভাবটা এত দৃশ্যমান ছিল না, এখন যতটা। যদি কেউ বলে এটার ফলে ভারতের জন্য ক্ষতি হবে, আমি তা মনে করি না। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশই সবগুলো দেশের সঙ্গে ব্যালান্স সম্পর্ক রক্ষা করছে। তাদের পররাষ্ট্রনীতিও তাই বলছে। কতগুলো প্রজেক্টে ভারতকে, কতগুলোতে চীন এবং কতগুলোতে জাপানকেও সম্পৃক্ত করেছে। আমি বলব এটা বাংলাদেশের জন্য উইন উইন অবস্থা। চীন যেসব প্রজেক্টে আছে সেগুলো ভারতের জন্য হুমকি নয়। চীনের টাকায় পদ্মা রেল সেতু তৈরি হওয়ায় কলকাতা আসতে সময় কম লাগবে। ফলে ভারতই লাভবান হবে দিনশেষে। আমি বলব এখন পর্যন্ত চীনের যত প্রজেক্ট আছে বাংলাদেশে, সেগুলো ভারতের বিপক্ষে যাচ্ছে না। একই সঙ্গে বাংলাদেশ লাভ পাচ্ছে।

ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বঙ্গোপসাগরের গুরুত্ব বাড়ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে অন্য রাষ্ট্রগুলোর সম্পর্ক তৈরিতে কোনো রকম বাধা হিসেবে আছে কিনা?

আমেরিকা সবসময় চীনের কথা বলে কিন্তু ভারত কখনো চীনের বিপক্ষে এভাবে বলে না। যেহেতু চীন আমাদের কাছের প্রতিবেশী। চীন কিংবা ভারত আমেরিকা যা চায় তাতে ঝাঁপিয়ে পড়বে না। তারা একে অপরের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সামরিক চুক্তিতে যায়নি, যাবেও না। এখানে আমেরিকার স্বার্থ আছে। এখন আমাদের দেখতে হবে আমাদের আর আমেরিকার স্বার্থের মধ্যে কোথায় কোথায় মিল আছে। ওই মিলগুলো নিয়ে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

আমার মনে হয় ভৌগোলিক অবস্থার কারণে বাংলাদেশ ভারতের বিপক্ষে গেলে কোনো লাভ হবে না। সুতরাং তারা সেটি করবে না। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিও সেটিকে অনুমতি দেয় না। শুধু ভারতই নয় চীন বা আমেরিকার বিরুদ্ধেও যাবে না বাংলাদেশ।

বিরোধী দলগুলো প্রায়ই বলে থাকে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভারত আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছিল। সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশের ভূমিকা নিয়ে আপনার অভিমত শুনতে চাই?

আমার কাছে এটিকে সঠিক মনে হয় না। কারণ এটি একটি নির্বাচিত সরকার, বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে চেয়েছে সেভাবেই নির্বাচন হয়েছে। যে সরকার হবে, ভারত তার সঙ্গেই চলবে। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। অন্য কোনো সরকার হলেও সেটি বাড়বে।

ভারত সমর্থন না দিলেও সরকার থাকবে, কারণ তাদের মেজরিটি আছে। আমার মনে হয় বাংলাদেশের সরকারের ভারতের সমর্থন প্রয়োজন পড়ে না।

বাংলাদেশের নির্বাচনসহ অন্য রাজনৈতিক বিষয়গুলোতে বিরোধী দলগুলো কথা বলছে। এসব বিষয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে?

আমি মনে করি নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন করা যায়। তবে জনগণ কীভাবে নির্বাচন চায় তা তাদেরই ঠিক করতে হবে। যদি বিরোধী দল মনে করে এটি একটি বিতর্কিত নির্বাচন, তাহলে তাদেরই করণীয় ঠিক করতে হবে। ভারতের জন্যও এটি গুরুত্বপূর্ণ, কেননা প্রতিবেশী রাষ্ট্রে স্থিতিশীলতা না থাকলে সেটি আমাদের ওপর প্রভাব ফেলবে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ ভারতকে পাশে চেয়েও পায়নি। এটিকে কীভাবে দেখেন?

আমি মনে করি বাংলাদেশের মানুষ যেভাবে ভাবছে, বিষয়টি সেভাবে হচ্ছে না। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, ভারত এটি নিয়ে কোনো কাজ করছে না। ভারত সরাসরি কথা বলবে না। কারণ মিয়ানমারের মধ্যে নাগাল্যান্ডের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আছে। সুতরাং দুই দেশই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভারত যদিও সবার সামনে কথা বলছে না, তার মানে এমন নয় যে বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলছে না। রোহিঙ্গা নিয়ে আমরাও সমস্যায় পড়েছি। এটি নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলছি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন