অভ্যন্তরীণ চাহিদার বেশি লবণ উৎপাদনের আশা বিসিকের

তোফাজ্জল হোসেন

কক্সবাজারে লবণ উৎপাদনে ব্যস্ত চাষীরা ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

দেশে লবণ উৎপাদনে এবার উল্লম্ফনের আশা করছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) গত মৌসুমে ৬১ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উৎপাদন হলেও সেটি দেশের চাহিদার তুলনায় কিছুটা কম ছিল। তবে এবার চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদনের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে করে প্রথমবারের মতো লবণ রফতানির পরিকল্পনাও করছে সরকার।

বিসিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত লবণ উৎপাদন হয়েছে লাখ ৬৫ হাজার ৯৫২ টন। অথচ গত বছর জানুয়ারি পর্যন্ত লবণ উৎপাদন হয় প্রায় ৬৫ হাজার টন। সে হিসেবে জানুয়ারি শেষ হওয়ার আগেই উৎপাদন বেড়েছে প্রায় চার গুণ। গত মৌসুমে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ লাখ ৫৭ হাজার টন। বিপরীতে উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ১৮ লাখ ৩২ হাজার টন। এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২৩ লাখ ৮৫ হাজার টন। গত মৌসুমে ৬৩ হাজার ২৯১ একর জমিতে লবণ চাষ হয়, যা এবার প্রায় সাড়ে ৬৬ হাজার একর।

কক্সবাজার সদরের কামাল উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরেই লবণ চাষ করেন। তিনি বণিক বার্তাকে বলেন, এবার লবণের দাম অন্য মৌসুমের তুলনায় অনেক ভালো। আবহাওয়া ভালো থাকায় উৎপাদন হচ্ছে বেশি। লবণ নষ্ট হচ্ছে না। আগের বছরগুলোতে খরচ ওঠার পর নিজেদের জন্য লাভ খুব একটা থাকত না। এবার আশা করছি দাম বেশি হওয়ায় তেমন হবে না।

তথ্য বলছে, প্রতি বছর ১৫ নভেম্বর থেকে পরের বছরের ১৫ মে পর্যন্ত লবণ উৎপাদন মৌসুম ধরা হয়। এবার মৌসুম শুরুর দেড় মাস আগে শুরু হয়েছে উৎপাদন। অন্যদিকে, শতভাগ জমিতে আধুনিক পলিথিন প্রযুক্তিতে লবণ উৎপাদিত হচ্ছে। সনাতন পদ্ধতির তুলনায় পলিথিন পদ্ধতিতে আড়াই গুণ বেশি লবণ উৎপাদিত হয়। এছাড়া পলিথিন পদ্ধতির লবণের গুণমানও ভালো। পলিথিন পদ্ধতির কারণে পরিবহনের সময়ও লবণের অপচয় রোধ করা সম্ভব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিসিকের উপমহাব্যবস্থাপক সরোয়ার হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, বছর মৌসুম শুরুর দেড় মাস আগে লবণ উৎপাদন শুরু হয়েছে। আগের তুলনায় অনেক বেশি চাষী কাজে যুক্ত হয়েছেন। জমির পরিমাণ বেড়েছে। অন্যদিকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদন বেড়েছে। প্লাস্টিক পদ্ধতি প্রয়োগ করায় প্রক্রিয়াকরণের সময় কোনো রকম অপচয় হচ্ছে না। চাষীরা অন্য সময়ের চেয়ে এবার দামও পাচ্ছেন অনেক বেশি। এসব দিক বিবেচনায় আমরা আশা করছি এবার অভ্যন্তরীণ চাহিদার বেশি লবণ উৎপাদন হবে। জানুয়ারিতে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ লবণ উৎপাদন হয়েছে তা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় তিন-চার গুণ বেশি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন