বাংলাদেশ ও ভারতের অর্থনীতিতে কৃষি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এগ্রি মেকানাইজেশন (কৃষি যান্ত্রিকীকরণ) সামিট আয়োজনের মধ্য দিয়ে দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে। আজ শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) তিনদিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধান
অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কৃষিখাতের উন্নয়নে বিনিয়োগ
ও বাণিজ্য অবশ্যই দু’দেশকে এগিয়ে আসতে হবে। প্রতিবছর শিল্পায়ন ও অন্যান্য কারণে ১ শতাংশ
হারে কৃষিজমি কমছে। অপরদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির অনুপাতে উত্পাদনও অনেক বেড়েছে। বাংলাদেশ
কৃষিনির্ভর দেশ হলেও কৃষিখাতে এখন শ্রমিকের অভাব রয়েছে। ফলে পুরনো কৃষি পদ্ধতি বদলানোর
বিকল্প নেই।
প্রাকৃতিক
দুর্যোগে প্রতিবছর আমাদের অনেক ফসল নষ্ট হয় জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, সবদিক বিবেচনায়
এবং উত্পাদন খরচ কমিয়ে আনতে কৃষিকে আধুনিকায়ন করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বাংলাদেশ বর্তমানে
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্কের শীর্ষে আছে। ভারতে রফতানি আরও বাড়াতে চায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে খাদ্য ও শিল্পের উন্নয়নে কৃষি খাতের ব্যাপক অবদান আছে। এই সামিটের মাধ্যমে
দুই দেশের কৃষিতে নতুন প্রযুক্তি আসবে। এতে করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব
হবে।
অনুষ্ঠানে
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। তিনি
বলেন, বাংলাদেশের কৃষিখাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিনিয়োগ করবে ভারত। আধুনিক সরঞ্জাম
উত্পাদনে কারখানা স্থাপন করা হবে। আমাদের দু’দেশেরই সমান কৃষি জলবায়ু অঞ্চল। এখানে
জ্ঞান আদান-প্রদানের একটি অপার সম্ভাবনা রয়েছে যার ফলে দু’দেশই লাভবান হবে।
এফবিসিসিআই
সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, যে হারে জনসংখ্যা বাড়ছে তাতে ভবিষ্যতের খাদ্যের চাহিদা
মেটাতে এবং উত্পাদন বৃদ্ধি করতে দু’দেশের মধ্যকার যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। ২০২২
সালে আমাদের কৃষিতে রফতানি প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৩০ শতাংশ। বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় চাল
উত্পাদনকারী দেশ। আম উত্পাদনে শীর্ষ দশে রয়েছে। অন্যান্য খাদ্যশস্য উত্পাদনেও বাংলাদেশের
অবস্থান শুরুর দিকে। কৃষি যন্ত্রপাতি উত্পাদনের দিক থেকে শীর্ষদেশগুলোর মধ্যে একটি
ভারত। ভারতের প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও দক্ষতা বিনিয়োগের মাধ্যমে দু’দেশই লাভবান হবে।
অনুষ্ঠানে
এসিআই মোটরস লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট ড. এফ এইচ আনসারী এবং দি মেটাল প্রাইভেট লিমিডেডের
ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিদ জামিল উপস্থিত ছিলেন। এফবিসিসিআই, সিআইআই, ট্রাক্টর অ্যান্ড
মেকানাইজেশন অ্যাসোসিয়েশন (টিএমএ) এবং ভারতীয় হাইকমিশনের অংশীদারত্বে আয়োজিত এক্সপো
চলবে আগামী ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত। এতে বাংলাদেশ ও ভারতের শতাধিক স্টল রয়েছে। প্রতিদিন
সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে।