তিন বছর ধরে মুনাফা কমছে সিঙ্গারের

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের ইলেকট্রনিকস খাতে দীর্ঘদিন ধরেই একচেটিয়া ব্যবসা করে আসছিল বহুজাতিক কোম্পানি সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড। তবে দেশে কভিডের প্রাদুর্ভাব শুরু পর থেকেই কোম্পানিটির আর্থিক পারফরম্যান্সে ছন্দপতন ঘটে। টানা তিন বছর কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফার পরিমাণ কমছে। পাশাপাশি কমছে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশের পরিমাণও।

সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২২ হিসাব বছরে সিঙ্গার বাংলাদেশের কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে কোটি ২৮ লাখ টাকা, যেখানে আগের হিসাব বছরে নিট মুনাফা ছিল ৫১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে প্রায় ৮৬ শতাংশ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭৩ পয়সা, আগের হিসাব বছরে যা ছিল টাকা ২০ পয়সা। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষে পুনর্মূল্যায়নসহ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ২৯ টাকা ৯৭ পয়সায়, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ৩৪ টাকা পয়সা। ২০২২ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের ঘোষণা দিয়েছে সিঙ্গার বাংলাদেশের পর্ষদ। ঘোষিত লভ্যাংশ আলোচ্য হিসাব বছরের অন্যান্য এজেন্ডায় বিনিয়োগকারীদের অনুমোদন নিতে আগামী ১১ এপ্রিল বেলা ২টায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আহ্বান করেছে কোম্পানিটি। -সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি।

সিঙ্গার বাংলাদেশের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৯ হিসাব বছরের পর থেকেই কোম্পানিটির নিট মুনাফার গ্রাফ ক্রমশ নিম্নমুখী। ২০১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছিল ১০৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। ২০২০ হিসাব বছরে মুনাফার পরিমাণ কমে ৮০ কোটি ৩৬ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। ২০২১ হিসাব বছরে মুনাফা আরো কমে দাঁড়ায় ৫১ কোটি ৮৫ লাখ টাকায়। তবে সর্বশেষ ২০২২ হিসাব বছরে কোম্পানিটির নিট মুনাফায় বড় ধস নেমেছে। অবশ্য নিট মুনাফা কমলেও গত তিন বছরে কোম্পানিটির বিক্রির পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। নিট মুনাফা কমায় বিনিয়োগকারীদের জন্য লভ্যাংশের পরিমাণও কমিয়েছে কোম্পানিটি। ২০১৯ হিসাব বছরে ৭৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীরা। ২০২০ হিসাব বছরে ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে কোম্পানিটি। ২০২১ হিসাব বছরে ৬০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীরা। সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২২ হিসাব বছরে মাত্র ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে কোম্পানিটি। মূলত নিট মুনাফায় ধস নামার কারণে ঘোষিত লভ্যাংশেও ধস নেমেছে।

কোম্পানিটির কর্মকর্তারা বলছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি সুদহার বাড়ার কারণে ব্যবসার ব্যয় বেড়েছে। পাশাপাশি কভিড-১৯ বন্যার কারণে সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানির ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সব মিলিয়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যয়বৃদ্ধির চাপের প্রতিফলন দেখা গেছে নিট মুনাফায়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন