গৌতম আদানির মোট সম্পদ এখন কত?

বণিক বার্তা ডেস্ক

গৌতম আদানি ছবি: দ্য ন্যাশনাল

ভারত এশিয়ার অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির সম্পদের পরিমাণ কমেছে। মূলত গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিনডেনবার্গ রিসার্চের এক প্রতিবেদন প্রকাশের পর গৌতম আদানির শেয়ারদরে তীব্র পতন দেখা যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছিল, ধনকুবেরের মালিকানাধীন শেয়ারের বিষয়ে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে এবং ভুল তথ্য দিয়ে বাজার প্রভাবিত করেছে। বিষয়ে দুই বছরের তদন্ত শেষে প্রতিবেদন প্রকাশ করে হিনডেনবার্গ রিসার্চ।

২০২২ সালে বিশ্বের যে ধনীরা আরো ধনী হয়েছিলেন, তাদের মধ্যে গৌতম আদানি অন্যতম। ধনকুবের বিল গেটস ওয়ারেন বাফেটকে পেছনে ফেলে নিজের নামের পাশে যোগ করেছিলেন হাজার ২২০ কোটি ডলার। গৌতম আদানির তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর বাড়তে শুরু করলে গত বছরের এপ্রিলে বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় উপরের দিকে উঠতে শুরু করেন তিনি। ১১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের সম্পদ নিয়ে বিশ্বের তৃতীয় ধনী হিসেবে ২০২২ সাল শেষ করেন তিনি।

গত বুধবার হিনডেনবার্গের প্রতিবেদনটি প্রকাশ পেলে, আদানির কোম্পানির শেয়ারদরে পতন দেখা দেয়। সম্পদ কমে যাওয়ায় শীর্ষ ধনীর তালিকার নম্বরে নেমে এসেছেন গৌতম আদানি। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, এখন তার সম্পদের পরিমাণ ১১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। গত জানুয়ারির পর ৭১১ কোটি ডলারের সম্পদ খুইয়েছেন তিনি।

আদানি গ্রুপের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা যুগেশিন্দার সিং অবশ্য হিনডেনবার্গের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। প্রতিবেদনকে ভুল তথ্য সংবলিত, ভিত্তিহীন অভিযোগের সমন্বয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানিয়েছে আদানি গ্রুপ।

জানা গেছে, এমন দিনে হিনডেনবার্গের প্রতিবেদনটি প্রকাশ হয়েছে যেদিন বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে আদানি এন্টারপ্রাইজের একটি গুরুত্বপূর্ণ শেয়ার বিক্রির কথা ছিল। প্রতিবেদনটির কারণে ওই শেয়ারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই প্রতিবেদনকে প্রকাশকে প্রতিহিংসামূলক বলেও মনে করছে আদানি গ্রুপ।

গৌতম আদানিকে বলা হয় প্রথম প্রজন্মের ব্যবসায়ী। ১৯৮০ সালে ভারতের মুম্বাইয়ে হীরার ব্যবসার মাধ্যমে তার উদ্যোক্তাজীবন শুরু। ১৯৮৮ সালে আদানি এন্টারপ্রাইজ শুরু করার আগ পর্যন্ত নিজের শহর গুজরাটে ভাইয়ের প্লাস্টিকের ব্যবসা দেখাশোনা করতেন তিনি। গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে ব্যবসার পরিধি বাড়িয়েছেন গৌতম আদানি। বন্দর, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং বিতরণ, বিমানবন্দর, ডাটা সেন্টার ডিজিটাল পরিষেবা; এসব খাতেই এখন আদানি গ্রুপের বিচরণ। মুহূর্তে গৌতম আদানির আদানি গ্রুপ হলো ভারতের শীর্ষ বন্দর অপারেটর। সেই সঙ্গে ভারতের শীর্ষ তাপীয় কয়লা উৎপাদন বৃহৎ কয়লা ব্যবসায়ী। আবাসন খাতেও বিস্তৃত তার ব্যবসা।

গত বছরের মার্চের শেয়ার বাজারের তথ্য অনুযায়ী, আদানি এন্টারপ্রাইজ, আদানি পাওয়ার আদানি ট্রান্সমিশনে গৌতম আদানির অংশীদারত্ব ৭৫ শতাংশ। এছাড়া আদানি টোটাল গ্যাসে তার মালিকানা ৩৭ শতাংশ, আদানি পোর্ট স্পেশাল ইকোনমিক জোনে ৬৫ শতাংশ এবং আদানি গ্রিন এনার্জিতে ৬১ শতাংশ।

ধনী বিখ্যাতদের সম্পদের তথ্য পর্যালোচনাকারী প্রতিষ্ঠান সেলিব্রেটি নেট ওর্থ বলছে, বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ ব্যবসায়ীর মধ্যে গৌতম আদানি একজন। সেটা পণ্য পরিবহন ব্যবসা অবকাঠামো খাত উভয় ক্ষেত্রেই।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন