সচিবালয়ে প্রাইমার্কের সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রীর বৈঠক

তৈরি পোশাকের ক্রয় বাড়িয়ে উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিতের আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের অন্যতম বড় ক্রেতা প্রাইমার্ক। আয়ারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটির প্রতি তৈরি পোশাকের ক্রয় বাড়িয়ে উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। গতকাল সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রাইমার্কের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পাউল মার্চেন্টের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

পাউল মার্চেন্টের নেতৃত্বে বাংলাদেশে সফররত বিশ্বখ্যাত তৈরি পোশাক ব্র্যান্ড প্রাইমার্ক অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটের একটি প্রতিনিধি দল টিপু মুনশির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ৪০ লাখের বেশি শ্রমিক তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মবান্ধব পরিবেশে কাজ করছে। এর মধ্যে প্রায় ৬৫ ভাগই নারী। গত বছর ৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পোশাক বাংলাদেশ রফতানি করেছে। ২০৩০ সালে রফতানির পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে আমরা কাজ করছি। বাংলাদেশ এখন চাহিদা অনুযায়ী যেকোনো পরিমাণ পণ্য যথাসময়ে সরবরাহ করার সক্ষমতা অর্জন করেছে।

প্রাইমার্ক প্রতিনিধিদের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাইমার্ক আমাদের বড় ক্রেতা, বিশ্বখ্যাত পোশাক ব্র্যান্ড বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি তৈরি পোশাক ক্রয় করবে বলে বিশ্বাস করি। একই সঙ্গে শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে, এর সঙ্গে জড়িত জনবলকে উৎসাহ দিতে তৈরি পোশাকের উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের উন্নয়নে সরকার প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করছে।

তিনি আরো বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পের কর্মীদের সক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে, পণ্যের মান ডিজাইন আধুনিক করা হচ্ছে। বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পে কিছু বিদেশী দক্ষ কর্মী ছিল, এখন আমাদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ কর্মীরাই কাজ করছে। শিল্প বিকাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। অনেকগুলোর কাজ শেষ পর্যায়ে। ২০২৬ সালে বাংলাদেশ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন করবে, তখন বিভিন্ন দেশ থেকে বাণিজ্য সুবিধা পেতে পিটিএ বা এফটিএর মতো বাণিজ্য চুক্তি করার জন্য আমরা কাজ করছি।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব বাণিজ্যে বাংলাদেশ দক্ষতার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। বিগত যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে বিশ্বমানের আধুনিক তৈরি পোশাক তুলনামূলক কম দামে সরবরাহ করতে সক্ষম আমরা। কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে অনেক ক্রেতার ক্রয়াদেশ বাতিলের কারণে আমাদের ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

প্রাইমার্কের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পাউল মার্চেন্ট বলেন, বাংলাদেশ বাণিজ্য ক্ষেত্রে আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশটি তৈরি পোশাক খাতে অনেক উন্নতি করেছে। গ্রিন ফ্যাক্টরিতে কর্মবান্ধব পরিবেশে এখানে তৈরি পোশাক উৎপাদন হচ্ছে। শিল্পক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার আরো উন্নত করেছে। দেশের তৈরি পোশাক আমাদের কাছে খুবই প্রিয়।

প্রতিনিধি দলে ছিলেন এবিএফের পরিচালক কোম্পানি সেক্রেটারি পাউল লিস্টার এবং গ্রুপ করপোরেট রেসপনসিবিলিটি ডাইরেক্টর কাথারিন স্টিওয়ার্ট; ইকোলক বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান জুয়ান চাপারো, প্রাইমার্কের হেড অব পলিসি অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্স ইম্মা অরমন্ড, প্রাইমার্কের হেড অব সোর্সিং মাদিউ আরহোডস এবং বেক্সিমকো বাংলাদেশ লিমিটেড গ্রুপের পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ নাভেদ হোসেইন।

পরে সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশনের (জেট্রো) প্রেসিডেন্ট কাজুশিক নোবুতানির নেতৃত্বে আগত একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন