এক যুগ ধরে এচিং নিয়েই কাজ করছি

ভূমি, মিশ্র মাধ্যম (প্রিন্ট)

ভিজুয়াল আর্টিস্ট ফারজানা রহমান ববি মূলত একজন ছাপচিত্রী। ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইউডা) থেকে স্নাতক স্নাতকোত্তর শেষ করে তিনি এখন কিবরিয়া প্রিন্ট মেকিং প্লাটফর্মের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। এছাড়া রাশিয়ান কালচারাল সেন্টারে শিশুদের আর্ট ইনস্ট্রাক্টর হিসেবেও কাজ করছেন। অংশ নিয়েছিলেন চলতি মাসে শেষ হওয়া ১৯তম এশীয় দ্বিবার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনীতে। বছর নিজের দ্বিতীয় একক চিত্র প্রদর্শনীর পরিকল্পনা রয়েছে তার

শৈশব-শিল্প: ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকতাম। মূলত মায়ের অনুপ্রেরণাতেই আঁকাআঁকি শুরু। খেলাঘরের সদস্য ছিলাম। ফলে নাচ-গান-ছবি আঁকার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের সাংগঠনিক কাজেও যুক্ত হই। সে সময় বিভিন্ন বইয়ের ইলাস্ট্রেশন দেখে ছবি আঁকার প্রতি ভালো লাগা তৈরি হয়। এইচএসসির পর প্রথমে নাট্যতত্ত্বে পড়তে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিবারের অনুমতি মেলেনি। পরে ইউডায় ফাইন আর্টসে ভর্তি হই। এক্ষেত্রেও ছিল মায়ের সমর্থন।

স্বচ্ছন্দের মাধ্যম: ছাপচিত্রের একটি মাধ্যমে এচিংয়ে সবচেয়ে বেশি স্বচ্ছন্দ আমি। ১০-১২ বছর ধরেই এচিং নিয়েই কাজ করছি। এটার সঙ্গে অন্য কিছুর মিশেলে নতুন ধরন তৈরি করছি। যেমন কোলাজ বা জলরঙের ওয়াশ দিয়ে কাজ ডেভেলপ করি। এছাড়া পেইন্টিংও করি। ২০২০ সালে লকডাউন শুরুর পর স্টুডিওতে যেতে পারতাম না। ছাপচিত্র একেবারেই স্টুডিওকেন্দ্রিক কাজ, এজন্য নির্দিষ্ট যন্ত্রের প্রয়োজন। তখন দেখা গেল যে বাসায় বসে অ্যাক্রিলিক-ওয়াটার কালারে পেইন্টিং করা হচ্ছে বেশি। আমি প্রকৃতি নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করি। এখন যে সিরিজটা করছি সেটার শিরোনাম ভূমি সেখানে মানুষের সঙ্গে ভূমির সম্পর্কের বিষয়টি তুলে ধরছি।

প্রিয় শিল্পী কাজ: শুরু থেকেই আমার রেমব্র্যান্টের কাজ খুব ভালো লাগে। তার সাদা-কালো এচিংয়ের কাজগুলো দেখেই মূলত আমার মাধ্যমে কাজ করার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। এছাড়া স্প্যানিশ শিল্পী ফ্রান্সিসকো গয়ার কাজও ভালো লাগে। 

কাজ-প্রদর্শনী: ২০১৫ ২০২০ সালে দুটি দ্বৈত প্রদর্শনী করেছি। এছাড়া ২০১৯ সালের জুলাইয়ে দ্য সৌল অব দ্য সয়েল শিরোনামে নিজের কাজের প্রথম প্রদর্শনী করি। এর আগে ২০১৭ সালে আর্জেন্টিনায় মিনি প্রিন্ট বিয়েনাল প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছিলাম। ২০১৮ সালে কিবরিয়া প্রিন্ট মেকিং স্টুডিওর আয়োজনে ঢাকা ব্রিসবেন এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশ নিই। ২০২০ সালে ২০২২ সালে দিল্লি প্রিন্ট বিয়েনালে অংশ নিই। কভিডকালীন কাজ নিয়ে ভারতের পলা সেনগুপ্তর কিউরেটিংয়ে লিভিং ডার্ক নাইট শিরোনামে একটি প্রদর্শনীতে অংশ নিই। এছাড়া ২০১৪-২২ পর্যন্ত এশীয় দ্বিবার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনীতে নিয়েছি, ২০০৯-২১ পর্যন্ত অংশ নিয়েছি জাতীয় চিত্রকলা প্রদর্শনীতে। ২০২২ সালে গ্যালারি চিত্রকে সাতজন মিলে একটি গ্রুপ এক্সিবিশন করেছি, যেটার নাম ছিল মনোমন্থন

আর্টক্যাম্প-রেসিডেন্সি: ২০০৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় শিল্পী পিনাকি বড়ুয়া নির্মলেন্দু দাসের অধীনে ওয়ার্কশপ করার সুযোগ হয়েছিল। ২০১১ সালে কসমসে জাপানি প্রিন্ট মেকার কুদেছকা তোশিহিশা ২০১৯ সালে তোশিহিকো ইকেদার অধীনে দুটি আর্টক্যাম্পে কাজ করেছি। ২০১৭ সালে শহীদ কবীর স্যারের সঙ্গে কলাকেন্দ্রে, ২০১৭ সালে কসমসে উত্তম কুমার বংশাল রোকেয়া সুলতানার যৌথ উদ্যোগে ওয়ার্কশপ করেছি। এছাড়া ২০২০ সালে কলকাতার নন্দনে একটি আর্টক্যাম্পে অংশ নিই।

 

গ্রন্থনা: সিরাজুম মুনিরা নীরা

ফারজানা রহমান ববির ছবি: ফরিদ আহমেদ রাফি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন