গম চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক

আহমেদ ইসমাম, ঠাকুরগাঁও

দেশের উত্তরের কৃষিপ্রধান জেলা ঠাকুরগাঁও। খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ বলে উত্তরের শস্যভাণ্ডার নামেও পরিচিত জেলা। জেলায় সব ধরনের ফসল শস্য উৎপাদন হলেও দেশের মোট উৎপাদিত গমের সিংহভাগই হয় জেলায়। তবে ঠাকুরগাঁওয়ে গম চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষক। ফলে কয়েক বছরে ধীরে ধীরে অঞ্চলে কমেছে গম চাষ।

জেলা কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০১৬-১৭ মৌসুমে জেলায় ৬৭ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়। এরপর কমতে থাকে গম চাষ। ২০১৭-১৮ মৌসুমে ৬১ হাজার হেক্টর, ২০১৮-১৯ মৌসুমে ৫০ হাজার ২২০, ২০১৯-২০ মৌসুমে ৫০ হাজার ৬৫০, ২০২০-২১ মৌসুমে ৪৭ হাজার ৪৫০ ২০২১-২২ মৌসুমে ৪৫ হাজার ১৯২ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়।

বিগত বছরগুলোর জরিপ দেখলেই বোঝা যায়, অঞ্চলে গমের চাষ প্রতি বছরই কমছে। এভাবে চলতে থাকলে গম উৎপাদনের হার অর্ধেকেরও নিচে নেমে যেতে পারে। দাম ভালো পাওয়ায় এবং ঝামেলা কম থাকায় জেলায় গমের চেয়ে ভুট্টা আলু বেশি উৎপাদন হচ্ছে। আলু-ভুট্টার পাশাপাশি সরিষা চাষ করছেন কৃষক।

বীজ সংকট, বীজ পেতে ভোগান্তি, বীজ সার ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে চড়া দাম, সরকার নির্ধারিত দামে অসন্তোষসহ নানা কারণে কৃষক গম চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন বলে জানা গেছে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রহিমানপুর এলাকার কৃষক মকবুল হোসেন বলেন, যেসব জমি আগে গমে ভরে থাকত সেসব জমিতে এখন ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসল দেখা যায়। আমি বছর পাঁচ বিঘা জমিতে গম আবাদ করছি। বীজ কিনতে যে ভোগান্তিতে পড়েছি আর সারের যে সিন্ডিকেট চলছে তাতে আগামী বছর আর গম চাষ করব কিনা তা জানি না।

বিএডিসি বীজ বিক্রয় বিতরণ কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, জেলায় বিএডিসির ১৬১ জন বীজ পরিবেশক রয়েছেন। বছর ৫৫৭ টন বীজ বরাদ্দসহ বিএডিসির বুথ থেকে ৪০ টন বীজ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক . আব্দুল আজিজ বলেন, গম চাষ কমলেও এসব জমিতে সরিষা ভুট্টার চাষ হচ্ছে। জমি ফাঁকা নেই। সরিষার পরে কৃষক বোরো আবাদ করবেন। তবে আমরা কৃষকদের গম চাষে আগ্রহী করার চেষ্টা করছি।

জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাদের জেলা গম চাষে দেশের অন্যতম জেলা। বীজ সার সিন্ডিকেটের যে কথা কৃষক উল্লেখ করেছেন তাতে আমরা নজর দেব।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন