উন্নয়ন অধ্যয়ন

জাতীয় উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে

দেশে-বিদেশে উন্নয়ন এবং উন্নয়নসংশ্লিষ্ট খাতে জনবলের চাহিদা বাড়ছে দিন দিন। কাজের পরিধি বাড়িয়েছে বিভিন্ন এনজিও উন্নয়ন সংস্থাগুলো। তৈরি হয়েছে নতুন কর্মসংস্থান। উন্নয়নসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে পড়ার বিষয়ই হলো ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বা উন্নয়ন অধ্যয়ন। ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ গ্র্যাজুয়েটদের সরকারি, আধা সরকারি সংস্থা, জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা, এনজিও, বেসরকারি খাতের পরামর্শদাতা সংস্থা, করপোরেট প্রতিষ্ঠান, কনসালট্যান্সি ফার্ম, গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কাজ করাসহ বিভিন্ন পেশাগত সুযোগ তৈরি হয়েছে।

উন্নয়ন অধ্যয়নে পড়াশোনার আগে উন্নয়নসংশ্লিষ্ট বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট রাষ্ট্রগুলোর ভূমিকা জানাও জরুরি। আমাদের সবার ভবিষ্যৎ কী হবে তা জানিয়ে জাতিসংঘ ১৯৮৭ সালে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করে। প্রতিবেদনে বিশ্ব ধরিত্রীর প্রধান বিবেচ্য বিষয় অতি গুরুত্ব সহকারে উল্লিখিত হয়েছে। যে বিষয়গুলোর সঙ্গে সবাই একমত। যেমন আমাদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে’— বিষয়ে বিশ্বনেতারা আন্তরিকভাবেই একমত। বলা হয়ে থাকে ধরিত্রী একটি, কিন্তু বিশ্ব একটি নয় একই ধরিত্রীর সম্পদ নিয়ে দেশে দেশে কাড়াকাড়ি। শক্তি খাটিয়ে ধনী দেশগুলো দরিদ্র দেশের সম্পদ আহরণের মাধ্যমে নিজেদের আরো  উন্নত করেছে। এর ফলাফল দাঁড়িয়েছে ধনী-দরিদ্র দেশের মধ্যে বৈষম্য। প্রাকৃতিক পরিবেশের বিপর্যয় চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। উন্নয়ন ধারা পরিচালিত হচ্ছে ভুল পথে। যার খেসারত দিচ্ছে ধরিত্রী এবং তার পৃষ্ঠে বসবাসকারী মানুষ প্রাণিজগৎ। ধারা অব্যাহত থাকলে আমাদের ধরিত্রী নিশ্চিত হুমকির মুখে পড়বে। তাই জাতিসংঘ সব সদস্য দেশকে নিয়ে ২০১৫ সাল থেকে একটি নতুন উন্নয়ন ধারার সূচনা করেছে। নাম দিয়েছে সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস। সংক্ষেপে এসডিজি। বাংলাদেশে তা টেকসই উন্নয়ন নামে অভিহিত। প্রাথমিকভাবে জাতিসংঘ ২০৩০ সাল নাগাদ ১৭টি সুনির্দিষ্ট টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। জাতিসংঘের সব সদস্য দেশ এসডিজির আলোকে তাদের জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের অঙ্গীকার করেছে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নেয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ। আর এসব কর্মযজ্ঞে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ আছে উন্নয়ন অধ্যয়নের গ্র্যাজুয়েটদের।

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্ব পরিক্রমা, বিশ্বের পরিবর্তন এবং তার প্রভাবে বাংলাদেশের পরিবর্তন পরিবর্তনকেন্দ্রিক জ্ঞান দক্ষতার চাহিদার ভিত্তিতে শিক্ষা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে ১৯৭০ সাল থেকে এবং পর্যায়ক্রমে এর গুরুত্ব বেড়েছে। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশবাদীদের অংশগ্রহণে টেকসই উন্নয়ন কৌশলের চাহিদা স্বীকৃত হয়েছে। বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি এনজিওগুলো অনেক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

 

. হামিদুল হক

অধ্যাপক, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন