
সার্কাসের
পরিত্যক্ত একটি কুকুর হয়ে উঠেছে বাজার কাঁপানো চিত্রশিল্পী। বক্সার জাতের সংকর চারপেয়েটির নাম
উদ্ধারকারীরা দিয়েছেন দুনিয়া কাঁপানো চিত্রশিল্পীর নামে- ভ্যান গগ, যার কানকাটা নিয়ে বিস্তর গল্প রয়েছে। উদ্ধারের পর চিকিৎসার প্রয়োজনে তার একটি কান কেটে ফেলতে হয়েছিল।
এই প্রতিভাধর কুকুরটিকে খবরে এনেছে দ্য গার্ডিয়ান। সেখানে বলা হয়েছে, নিজের পেইন্টিং প্রতিভার জন্য কুকুরটি এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো সেলিব্রেটি। ‘কানকাটা ভ্যান গগের’ আঁকা ছবি এখন নিলামে লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নিউ
ইংল্যান্ডের কানেকটিকাট থেকে উদ্ধারের পর কুকুরটিকে পোষার জন্য প্রথমে কাউকেই
পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে যখন শিল্পী প্রতিভা আবিস্কৃত হলো এবং উদ্ধারকারীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করলেন, অল্প সময়েই বাজার কাঁপানো শিল্পীর সমাদর জুটে গেল তার
কপালে। এখন তো পোষ্য নেয়ার জন্য রীতিমতো লাইন পড়ে
গেছে।
অবশ্য
প্রথমবার যখন ভ্যান গঘের ‘একক চিত্রশিল্প
প্রদর্শনী’ হয়, তখন খুব বেশি সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। তাতে কী আসে যায়, জগতের কোন শিল্পী প্রথমেই বাজিমাত করতে পেরেছেন! একটু সময়, একটু অধ্যাবসায় তো লাগেই। আমাদের ভ্যান গঘের সে তুলনায় খুব
বেশি ধৈর্য পরীক্ষা দিতে হয়নি। শুধু প্রথম প্রদর্শনীই ফ্লপ গিয়েছে তার। পরেরবার থেকেই
সুপারহিট। আর এখন তো চাহিদা সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছে ভ্যান গগ।
এরই মধ্যে সে শিল্পী ক্যারিয়ারের ১৪০তম ছবিটিও শেষ করে ফেলেছে। এ গতিতে চর্চা চালিয়ে গেলে ঊনিশ শতকের ভ্যান গগকে ছাড়িয়ে যেতে খুব বেশি সময় লাগবে না। কতই বা ছবি এঁকেছিলেন ভ্যান গগ, হাজার খানেকেরও কম!
উদ্ধারকারীরা
জানিয়েছেন, পিনাট বাটার ও লিভারওয়ার্স্ট চেটে
চেটে ক্যানভাসের গায়ে মাস্টারপিস উৎপাদন করে যাচ্ছে গগ। প্রথমে ছবি আঁকার ব্যাপারে খুব আগ্রহ না দেখালেও শিল্পীর স্বীকৃতি
পাওয়ার পর থেকেই তার অনুপ্রেরণা বেড়ে গেছে। এখন সে ছবি
আঁকতেই ভালোবাসে। তার ওপর খাবার চেটে চেটে ছবি আঁকা; ব্যাপারটাতে অন্যরকম আনন্দও আছে।
উদ্ধারকারীরা
জানিয়েছেন, কুকুরটির শিল্পপ্রতিভার আবিষ্কার
মূলত প্রয়োজনের তাগিদেই। কারণ অনেকেই উদ্ধার কার্যক্রমের প্রশংসা করেন, কিন্তু পরিত্যক্ত এবং এক অর্থে রাস্তার কুকুরগুলো পোষার
জন্য কাউকেই পাওয়া যায় না। সাধারণ মানুষের দৃষ্টি
আকর্ষণের জন্যই এ কৌশলে নামতে হয়েছে তাদের।
ভ্যান গঘের
বর্তমান মালিক জানিয়েছেন, কুকুরটিকে তার ‘পোস্ট-ইম্প্রেশনিস্ট’ ধারার শিল্পকর্ম চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বাধা তো দেবেনই না, উল্টো সাহায্য করবেন। আপাতত তার শিল্প নয়, শিষ্টাচার শিক্ষা কার্যক্রমে মনযোগ দিচ্ছেন তিনি।