চার বছর ধরে লোকসানে জাহিনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জাহিনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড সর্বশেষ চার বছর ধরে টানা লোকসানে রয়েছে। ধারাবাহিকভাবে প্রতি বছরই কোম্পানিটির লোকসানের বোঝা বড় হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে গত বছরের শুরুতে কোম্পানিটিকে টেনে তুলতে তিনজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর পরও সর্বশেষ হিসাব বছরে আগের বছরগুলোর তুলনায় কোম্পানিটির লোকসানের বোঝা বেড়েছে। এমনকি সর্বশেষ প্রকাশিত চলতি ২০২২-২৩ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকেও (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির লোকসান বেড়েছে।

কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৮-১৯ হিসাব বছর থেকে লোকসানে রয়েছে জাহিনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির বিক্রি হয়েছিল ৩৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরে বিক্রি হয়েছিল ৮০ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বিক্রি কমেছে ৪৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা বা ৫৫ দশমিক ১১ শতাংশ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা হয়েছে কোটি ২১ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরে পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ১৮ কোটি লাখ টাকা। ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটির বিভিন্ন খরচ শেষে কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ১৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরে নিট মুনাফা হয়েছিল কোটি ৮৮ লাখ টাকা। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে টাকা ২৪ পয়সা। যেখানে আগের হিসাব বছরে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছিল ৬০ পয়সা।

আলোচ্য হিসাব বছরের ধারাবাহিকতায় পরের বছর অর্থাৎ ২০১৯-২০ হিসাব বছরেও লোকসান হয়েছে কোম্পানিটির। ওই হিসাব বছরে আগের হিসাব বছরের তুলনায় কোম্পানিটির বিক্রি কমেছে কোটি ৫০ লাখ টাকা বা দশমিক ৭২ শতাংশ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির বিক্রি হয়েছে ৩২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। বিক্রি কমায় আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটিকে পরিচালন লোকসান গুনতে হয়েছে কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আর বিভিন্ন খরচ শেষে ২০২০-২১ হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ৩০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে টাকা ৭৭ পয়সা।

২০২০-২১ হিসাব বছরে কোম্পানিটির পণ্য বিক্রি আরো কোটি ৫৪ লাখ টাকা বা দশমিক ৭৫ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৩০ কোটি ৯৫ লাখ টাকায়। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটিকে পরিচালন লোকসান গুনতে হয়েছে কোটি ২১ লাখ টাকা। আর বিভিন্ন খরচ শেষে কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ২৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। ২০২০-২১ হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে টাকা পয়সা।

সর্বশেষ ২০২১-২২ হিসাব বছরে কোম্পানিটির লোকসান আরো বেড়েছে। হিসাব বছরে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ২৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আর শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে টাকা ১১ পয়সা। আলোচ্য হিসাব বছর শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ১২ টাকা ৫৯ পয়সায়।

মূলত লোকসানের কবলে পড়ার পর থেকেই অর্থাৎ ২০১৮-১৯ হিসাব বছর থেকে টানা চার বছর শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেয়নি কোম্পানিটি। এমন পরিস্থিতিতে গত বছরের জানুয়ারিতে তিনজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয় বিএসইসি। কিন্তু স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয়ার পরও কোম্পানিটি লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারেনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন