বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের (বাজেয়াপ্ত) আদেশ দিয়েছেন আদালত। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় গতকাল ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালত এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে ক্যান্টনমেন্ট থানার ওসিকে ১৯ জানুয়ারির মধ্যে এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এর আগে গত ১ নভেম্বর তারেক রহমান ও ডা. জোবায়দার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন আদালত। গ্রেফতারসংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য গতকাল দিন ধার্য ছিল। সম্প্রতি আদালতে প্রতিবেদন এসেছে, তারেক রহমান ও তার স্ত্রী পলাতক রয়েছেন। তাই ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী পলাতক এ দুই আসামির সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেয়া হয়েছে। ১৯ জানুয়ারির মধ্যে ক্যান্টনমেন্ট থানার ওসিকে এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ওইদিনই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য রয়েছে বলে দুদকের কোর্ট পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।
৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তারেক, জোবায়দাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলাটি করে দুদক। আরেক আসামি হলেন তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানু। তদন্ত শেষে ২০০৮ সালে দুদক তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
এদিকে মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন ডা. জোবায়দা। ওই বছরই এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। এরপর দীর্ঘ ১৪ বছর মামলাটির বিচারকাজ স্থগিত ছিল। তবে চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে রায় দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই মামলায় আট সপ্তাহের মধ্যে ডা. জোবায়দাকে বিচারিক আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেয়া হয়।
উচ্চ আদালতের এ খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ওই বছরই লিভ-টু-আপিল করেন জোবায়দা। এরপর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ তা খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রাখেন। বর্তমানে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান লন্ডনে অবস্থান করছেন। আইনের দৃষ্টিতে তারা পলাতক।