এশিয়া-ইউরোপকে যুক্ত করা তুরস্কের সেতু ও টানেলগুলো

বণিক বার্তা অনলাইন

১৫ জুলাই শহীদ সেতু। ছবি: সিএনএন

উত্তরে কৃষ্ণ সাগর আর দক্ষিণে মর্মর সাগর। তাদের যুক্ত করেছে ১৯ মাইল দীর্ঘ বসফরাস প্রণালী। এ জলধারার পূর্বে এশিয়া ও পশ্চিমে ইউরোপ। দুই মহাদেশ নিয়ে বিস্তৃত ইস্তানবুল নগরী।

বসফরাস প্রণালী অতিক্রম করে এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে পা রাখছে মানুষ। একই কথা প্রযোজ্য দার্দানেলিস প্রণালীর জন্য। এখানে যুক্ত হয়েছে মর্মর সাগর ও ইজিয়ান সাগর।

শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে দুই তীরের মানুষ যাওয়া-আসা করেছে দুই পারে। কেবল প্রয়োজনের জন্যই না, স্থানগুলোর ঐতিহাসিকতার কারণেও। ফলে ফেরির পাশাপাশি গড়ে ওঠেছে সেতু ও টানেল।

১৫ জুলাই শহীদ সেতু

মূলত ‌'বসফরাস সেতু' নামেই পরিচিত। বসফরাস প্রাণালীতে নির্মিত প্রথম সেতু হিসেবে ১৯৭৩ সালের ২৯ অক্টোবর খুলে দেয়া হয়। নামের পরিবর্তন ঘটে ২০১৬ সালে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর। ১৫ জুলাই শহীদ সেতু নামকরণ করা হয়। পর্যটকদের কাছে অন্যরকম আকর্ষণ এ সেতু। 

ছবি: সিএনএন

ফাতিহ সুলতান মুহম্মদ সেতু

১৯৮৮ সালের ৩ জুলাই এশিয়া ও ইউরোপকে যুক্ত করে নির্মিত হয় ফাতিহ সুলতান মুহম্মদ সেতু। ১৪৫৩ সালে উসমানি সুলতান দ্বিতীয় মুহম্মদ বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের রাজধানী কনস্টান্টিনোপল জয় করেন। তাকে স্মরণ করেই প্রণালীর অপেক্ষাকৃত সরু অংশে এর অবস্থান। বলা হয়, পারসিক সম্রাট দারিয়ুস এখানেই খ্রিষ্টপূর্ব ৫১২ অব্দে ভাসমান সেতু নির্মাণ করেছিলেন।

ছবি: সিএনএন

ইয়াভুজ সুলতান সেলিম সেতু

২০১৬ সালে বসফরাসের ওপর নির্মিত হয় এশিয়া ও ইউরোপকে যুক্ত করা তৃতীয় সেতুটি। উসমানি সুলতান সেলিম ছিলেন দ্বিতীয় মুহম্মদের নাতি ও সুলতান সুলেমানের পিতা। তার প্রতি শ্রদ্ধা হিসেবেই রাখা হয় সেতুর নাম। বিশ্বের উচ্চতম সেতুর তালিকায় এর অবস্থান পঞ্চম। ৩২২ মিটার উঁচু।

ছবি: সিএনএন

চানাক্কালে ১৯১৫

এশিয়া ও ইউরোপকে যুক্ত করা নবীনতম ব্রিজ চানাক্কালে ১৯১৫ সেতু। দার্দানেলিস প্রাণালীর উপর নির্মিত এই সেতুর মাধ্যমে যুক্ত হয়েছে ইউরোপের গ্যালিপলি ও এশিয়ার ল্যাপসেকি। ২০২২ সালের ১৮ মার্চ খুলে দেয়া হয় সেতুটি। ১৯১৫ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় মিত্রপক্ষের উপর উসমানি সামরিক বাহিনীর বিজয়ের স্মৃতি হিসেবে এই নাম।

ছবি: সিএনএন

ইউরেশিয়া টানেল

৫ দশমিক ৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই টানেল প্রকৌশলী ছাত্রদের জন্য চিন্তার খোরাক জোগাবে। পানির গভীর দিয়ে চলে যাওয়া সরু পথে মিলিত হয়েছে ইউরোপের কালিচেশমে ও এশিয়ার ইউজতাপে। ২০১৬ সালে শেষ হয় নির্মাণ কাজ। এর মাধ্যমে সহজ হয়েছে যোগাযোগ। আগেকার ১০০ মিনিটের রাস্তা বর্তমানে পনেরো মিনিটে পার হওয়া যায়।

ছবি: সিএনএন

মারমারয়

১৮৬০ সালে সুলতান আবদুল হামিদ সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে রেল যোগাযোগের পরিকল্পনা নেন। সেই চিন্তা থেকেই ১৮৯২ সালে ফরাসি প্রকৌশলী আনা হলেও কোন অগ্রগতি হয়নি। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়ে এক শতাব্দি পর। ২০০৪ সালে নির্মিত হয় টানেল। অবশ্য ২০১৩ সালের আগে তা সর্বসাধারণের জন্য খোলা হয়নি।  

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন