কিবরিয়া স্মরণ...

সুকান্ত কুমার

শিল্পী কিবরিয়া স্মরণে অনুষ্ঠিত ছাপচিত্র মেলা ঘুরে দেখছেন দর্শনার্থীরা ছবি: কলাকেন্দ্র

ছাপচিত্র স্টুডিওনির্ভর কাজ। দেশে বর্তমানে প্রিন্টমেকিংয়ের অনেক প্রাইভেট স্টুডিও রয়েছে। তবে একটা সময় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর ছাপচিত্রের শিক্ষার্থীদের জন্য ধারাবাহিক কাজ চালিয়ে যাওয়া খানিকটা মুশকিল হয়ে পড়ত। ২০১১ সালের জানুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় কিবরিয়া প্রিন্টমেকিং স্টুডিও, যা হয়ে ওঠে ছাপচিত্রের চর্চা চালিয়ে যাওয়ার অন্যতম পরিসর। প্রিন্টমেকিংকে আরো প্রশস্ত রূপ দিতে পরের বছর থেকে নিয়মিত আয়োজন করা হয় কিবরিয়া ছাপচিত্র মেলা।

কিবরিয়া প্রিন্টমেকিং স্টুডিও

ছাপচিত্র বিষয়ে যারা শিক্ষা লাভ করেছে অথচ নিজের কোনো স্টুডিও না থাকায় কাজ করতে পারছে না কিংবা যারা ছাপচিত্র নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী কিন্তু কাজ শেখার বা করার কোনো সুযোগ নেই তাদের কথা বিবেচনায় নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় কিবরিয়া প্রিন্টমেকিং স্টুডিও। উদ্যোগটির সূত্রধর হয়ে কাজ করেন শিল্পী চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেন এবং অধ্যাপক সৈয়দ আবুল বার্ক আলভী। শিল্পী মোহাম্মদ কিবরিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই স্টুডিওর নামকরণ। প্রতিষ্ঠিত প্রিন্টমেকারদের পাশাপাশি শৌখিন অনেকেই স্টুডিওতে কাজ করতে করতে প্রিন্টমেকিংয়ের বিভিন্ন টেকনিক আত্মস্থ করে সৃষ্টি করতে পারেন শিল্পকর্ম। পাশাপাশি ছাপচিত্র মেলাতেও প্রদর্শন করতে পারেন কাজ। কিবরিয়া প্রিন্টমেকিং স্টুডিওর কার্যক্রমের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে প্রতি বছর ছাপচিত্র মেলার আয়োজন। কিবরিয়া ছাপচিত্র মেলা উপলক্ষে নবীন ছাপচিত্রীদের প্রতিযোগিতার আয়োজন, নবীন ছাপচিত্রীদের পুরস্কৃত উৎসাহিত করার পাশাপাশি একজন প্রবীণ শিল্পীকে ছাপচিত্রে অবদানের জন্য আজীবন সম্মাননা জানানো হয়। তরুণদের উৎসাহিত করতে প্রবর্তিত হয় তরুণ শিল্পী পুরস্কার, আয়োজন করা হয় তাদের কাজের প্রদর্শনীর। ২০১৯ সালে আয়োজিত হয় সাউথ এশিয়ান ইয়াং প্রিন্টমেকার্স অ্যাওয়ার্ড।

কিবরিয়া ছাপচিত্র মেলা

সবার জন্য ছাপচিত্র, সুলভ মূল্যে ছাপচিত্র স্লোগান নিয়ে ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে কিবরিয়া প্রিন্টমেকিং স্টুডিওর পক্ষ থেকে শুরু হয় কিবরিয়া ছাপচিত্র মেলা। উদ্দেশ্য ছাপচিত্রের মাধ্যমকে জনপ্রিয় করে তোলা। আগামী -১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার কলাকেন্দ্রে শুরু হচ্ছে ১১তম কিবরিয়া ছাপচিত্র মেলার। যেখানে ১৫টির বেশি প্রিন্টমেকিং স্টুডিও অংশ নেবে। সম্পর্কে আধুনিক শিল্পী কিউরেটর ওয়াকিলুর রহমান বলেন, পেইন্টিংয়ের পাশাপাশি মোহাম্মদ কিবরিয়ার অন্যতম কাজের জায়গা ছিল প্রিন্ট। তিনি দীর্ঘদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার প্রিন্টমেকিং বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন। কিবরিয়া প্রিন্টমেকিং স্টুডিও তার নামেই উৎসর্গকৃত। তাকে স্মরণ করেই বাংলাদেশের যতগুলো প্রিন্টমেকিং স্টুডিও রয়েছে তাদের অংশগ্রহণে ঢাকার মধ্যে স্থায়ী আয়োজনে পরিণত হয়েছে এটি। যেখানে সাধারণ দর্শকরা এসে স্বল্পমূল্যে প্রিন্ট ক্রয় করতে পারে। ২০১৯ সালে মেলার অষ্টম আয়োজনটি হয়েছিল আন্তর্জাতিকভাবে। সেখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ব্যক্তি পর্যায়ের স্টুডিওসহ ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা থেকে বিভিন্ন স্টুডিও অংশগ্রহণ করে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন