ভোজ্যতেল উৎপাদন বাড়ানোর ওপর জোর দিলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএসএমআরএইউ দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছবি: পিআইডি

দেশে ভোজ্যতেল উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ৯৮ শতাংশ ভোজ্যতেল আমদানি করতে হয়। আমদানিনির্ভরতা কমাতে আমাদের দেশে তিল, তিষি বাদাম থেকে তেল উৎপাদনে আরো বেশি গবেষণা হওয়া দরকার। সেজন্য সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ নিতে হবে। গতকাল গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমআরএইউ) ২৫তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস এবং প্রযুক্তি প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে উৎপাদিত সরিষার তেল গবেষণা করে দেখা গিয়েছে যে সেটি পরিশোধন করে আরো হালকা উন্নতমানের করা যায়। বাদাম তেল, তিষি থেকে শুরু করে চালের কুঁড়া বা তুষ থেকেও এখন তেল উৎপাদন হচ্ছে।

গবেষণার মাধ্যমে অনেক উন্নতমানের বীজ ফসলের জাত উদ্ভাবন করায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ধন্যবাদ জানান সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষিবিজ্ঞানী কৃষিবিষয়ক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর যথেষ্ট অবদান রয়েছে। তবে আমাদের গবেষণাকে আরো গুরুত্ব দিতে হবে বলে আমি মনে করি।

নিজের বক্তব্যে খাদ্য উৎপাদনের জন্য আবাদি জমি সংরক্ষণের ওপর জোর দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, নগরায়ণ এবং আবাসনের কারণে বিপুল পরিমাণ উর্বর আবাদি জমি হারিয়ে গিয়েছে। কারণ পূর্ববর্তী সরকারগুলো এতে মনোযোগ দেয়নি। আমরা ধরনের জমি আর হারাতে চাই না এবং সে কারণেই আমরা এসব সংরক্ষণের জন্য কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি। কোনো আবাদি জমি, যা সারা বছর তিন ধরনের ফসল উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা হয় তা শিল্পায়নের জন্য ব্যবহার করা যাবে না। কেউ যদি ধরনের জমিতে শিল্প স্থাপন করে, তবে তারা সরকারের কাছ থেকে কোনো সুবিধা পাবে না।

ভৌগোলিকভাবে ছোট হলেও বিপুল মানুষের দেশের খাদ্য উৎপাদন নিরাপদ করতে বিদ্যমান আবাদি জমি রক্ষার ওপর জোর দেন তিনি।

দেশে গবেষণা বাড়ানোর পাশাপাশি গবেষণালব্ধ মেধাস্বত্ব যেন সঠিক উপায়ে সংরক্ষিত হয় তা নিশ্চিত করতে বিজ্ঞানীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, অতীতে দানাদার শস্য মাত্র কোটি ৬৯ লাখ টনের মতো উত্পন্ন হতো। সেখানে এখন প্রায় কোটি ৭২ লাখ টন চালসহ দানাদার শস্য উৎপাদনে সক্ষম হচ্ছি। এটা কিন্তু গবেষণার ফসল। গবেষণা করেই আমরা এটা করতে সক্ষম হয়েছি।

তিনি আরো বলেন, সাফল্য আমরা দেখাতে পেরেছি বলেই আমাদের কখনো খাদ্য ঘাটতি হয়নি। তার পরও আমাদের বন্যা হয়, খরা হয়, নদীভাঙন, ঝড় হয়। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণেও অনেক সময় ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয়। এসব মোকাবেলা করেই আমরা ফসল উৎপাদনে বহুমুখীকরণকে কাজে লাগাচ্ছি।

সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বক্তব্য রাখেন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএসএমআরএইউর উপাচার্য অধ্যাপক . মো. গিয়াসউদ্দীন মিয়া। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়।

সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত বিএসএমআরএইউ বাংলাদেশের ১৩তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এটি গাজীপুরের সালনায় অবস্থিত। এটি ১৯৯৮ সালে সরকার প্রবর্তিত একটি আইনের মাধ্যমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন