অর্থনৈতিক অবস্থানের দিক দিয়ে ব্যাপক ব্যবধান সত্ত্বেও এশিয়ার দুটি দেশ বাংলাদেশ ও জাপানের সরকার ও জনগণের মধ্যেকার সুসম্পর্ক ও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা প্রবহমান সময়ের সঙ্গে সবসময়ই অগ্রগামী। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যস্বার্থ দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের আধুনিক পর্যায়ে প্রাধান্য পেলেও বর্তমান সম্পর্কের ভিত্তি সুদীর্ঘ সময়ের গভীরে প্রথিত। ওইসিডি সদস্য দেশগুলোর মধ্যে শিল্পোন্নত জাপানই সর্বপ্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। এশিয়ার সমৃদ্ধ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শোচনীয় পরাজয়ের প্রেক্ষাপটে মিত্রশক্তির নেতৃত্বদানকারী যুক্তরাষ্ট্রের পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার সময় জাপান তখনো মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির প্রভাববলয়েরই একটি দেশ। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জাপান সরকার ও জনগণের সমর্থন এবং বিজয়ের অব্যবহিত পরে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের সিদ্ধান্ত নিয়ে জাপান নিঃসন্দেহে তাত্পর্যবাহী ও সুদূরপ্রসারী কূটনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দেয়।
জাপানিদের
মধ্যে তাকেশি হায়াকাওয়া (১৯১৭-৮২) জাপান বাংলাদেশের সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রে অবিস্মরণীয় অবদান রাখেন। তিনি একটানা ৪০ বছর জাপানের জাতীয় সংসদ ’ডায়েট’ এ নির্বাচিত সদস্য ছিলেন এবং ‘ফাদার অব দ্য ডায়েট’ উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আমেরিকা বলয়ের দেশ হওয়া সত্ত্বেও উন্নত বিশ্বের শিল্পসমৃদ্ধ দেশগুলোর মধ্যে জাপানই প্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় তারই প্রচেষ্টায় ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি। স্বীকৃতি দানের এক মাসের মধ্যে ঢাকায় জাপানি দূতাবাসের কার্যক্রম শুরু হয় এবং ১৩-১৪ মার্চ, ১৯৭২ হায়াকাওয়ার নেতৃত্বে তিন সদস্যের জাপানি সংসদীয় প্রতিনিধি দল প্রথম বাংলাদেশ সফরে আসে। দেশে ফিরে ২৪ মার্চ জাপানের প্রধানমন্ত্রী সাতোর কাছে পেশ করা রিপোর্টে তিনি প্রস্তাব রাখেন (ক) বাংলাদেশকে ১০ মিলিয়ন ডলারের জরুরি অনুদান অবিলম্বে প্রদান এবং (খ) পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের হিস্যা আদায়ে জাপানের মধ্যস্ততা।
১৯৭৩
সালের অক্টোবরে জাপানে বাংলাদেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে শীর্ষ পর্যায়ের প্রথম সফরের সময় বাংলাদেশ জাপান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের ক্ষেত্রে যে সুযোগ সৃষ্টি হয় হায়াকাওয়া ছিলেন তার অন্যতম রূপকার। ২৩ অক্টোবর, ১৯৭৩ সন্ধ্যায় টোকিওতে তার সম্মানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী কাকুই তানাকা ও তার স্ত্রী প্রদত্ত Banquet
ভাষণে বঙ্গবন্ধু দুই দেশের সম্পর্কের পটভূমি তুলে ধরেন এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় সহায়তা ও সমর্থনের জন্য জাপান সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। দুই দেশের কূটনৈতিক, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহায়তা সম্পর্ক সুদৃঢ় হবে এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। প্রত্যুত্তরে কাকুই তানাকা বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার ব্যক্তিগত শ্রদ্ধা, জাপান সরকারের সমর্থন এবং জাপানি জনগণের ভালোবাসা নিবেদন করেন।
১৯৭৩
সালেরই ১৬ ডিসেম্বর হায়াকাওয়া সস্ত্রীক বাংলাদেশ সফরে এলে রাষ্ট্রাচার উপেক্ষা করে বাংলাদেশের সরকারপ্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্যদের নিয়ে পদ্মা গেস্ট হাউজে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও সম্মান প্রদর্শনে আসার ঘটনাটিকে জাপান বাংলাদেশের মধ্যে সুদূরপ্রসারী সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সোপান বলে হায়াকাওয়া তার স্মৃতিকথায় উল্লেখ করেছেন।
এ
সফরের সময় হায়াকাওয়ার নেতৃত্বে সফরকারী জাপানি প্রতিনিধি দলের কাছে যমুনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণে জাপানি সহায়তা আহ্বান করা হয়। এই সফরের এক পর্যায়ে প্রতিনিধি দল ভোলায় গেলে সেখানে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এবং বর্তমানে বাণিজ্যমন্ত্রী জনাব তোফায়েল আহমদ এবং তত্কালীন কৃষিমন্ত্রী জনাব আবদুস সামাদ আজাদ (১৯২২-২০০৫) হায়াকাওয়া সাহেবকে ‘মি. বাংলাদেশ’ নামে অভিহিত করলে তিনি অভিভূত হন। স্মৃতিকথায় তিনি উল্লেখ করেছেন এ যেন নিজের নির্বাচনী এলাকায় সংবর্ধিত হচ্ছি। পরবর্তীকালে জাপানের জনগণ ও সরকারের কাছে তিনি ‘মি. বাংলাদেশ’ হিসেবেই আমৃত্যু পরিচিতি পেয়ে গর্ববোধ করেছেন।
সাধারণত
শীর্ষ সফরের সময় জাপান-বাংলাদেশ আর্থিক সহযোগিতা দিগন্ত উন্মোচিত হয়। যমুনা সার কারখানা, কর্ণফূলি সার কারখানা, যমুনা সেতুসহ কয়েকটি বড় প্রকল্প জাপানি অর্থায়নে বাস্তবায়নের উদ্যোগ গৃহীত হয়। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে জাপানের সাবেক এবং সদ্য প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী সিনজো আবে দুই শতাধিক শীর্ষ জাপানি বিনিয়োগকারী সমভিব্যাহারে ৬ বিলিয়ন ডলারের জাপানি সহায়তার প্রস্তাব নিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসেন। এটি একটি অনন্য সাধারণ সাফল্য সূচক দুই দেশের বন্ধুত্বের।
বাংলাদেশ
জাপানের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের একটি বড় অনুষঙ্গ হলো গত পাঁচ দশকে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বাণিজ্যিক আদান-প্রদানের প্রসারতা। এ কথা প্রনিধানযোগ্য যে আধুনিক পর্যায়ে দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতা এবং গতি-প্রকৃতিতে অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং বাংলাদেশ-জাপান দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের উত্থান-পতন বিশেষ নির্দেশক হিসেবে কাজ করেছে। আগেই উল্লেখ করা হয়েছে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের অব্যবহিত পরে জাপান সরকার বাংলাদেশের যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠনে এগিয়ে আসে। বাংলাদেশে জাপানি বাণিজ্য এবং সে সুবাদে বিনিয়োগে জাপানিরা বরাবরই আগ্রহ দেখিয়ে এসেছে। জাপানই হচ্ছে এশিয়ায় বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্যের অন্যতম গন্তব্যস্থল। আবার জাপানি পণ্য বাংলাদেশের আমদানি বাণিজ্যের সিংহভাগ দখল করে আছে। জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক কোনো বাণিজ্য চুক্তি না থাকলেও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চলে মুক্তবাজার নীতিতে এবং গ্যাট ও অধুনা ডব্লিউটিও নিয়ন্ত্রিত অনুশাসন অনুসারে। বাংলাদেশের পণ্য জাপানের বাজারে প্রবেশে ৩৮টি স্বল্পোন্নত দেশের মতো জিএসপি সুবিধা পায়। জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) জাপানে বাংলাদেশী পণ্যের বাজার সৃষ্টিতে নানা টেকনিক্যাল অ্যাসিসট্যান্স দিয়ে থাকে। বাংলাদেশের হিমায়িত চিংড়ি জাপানের বাজারে বেশ জনপ্রিয়তা পেলেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের তুলনায় মূল্য কাঠামো ভিন্নতর হওয়ায় বাংলাদেশী চিংড়ির জাপানে সরবরাহ কমছে। জাপানিরা এখন প্রক্রিয়াজাত চিংড়ির দিকে ঝুঁকছে। বাংলাদেশ থেকে রেডিমেড গার্মেন্টসের চাহিদা থাকলেও সরবরাহ সময় বেশি লাগার দরুন জাপানে তৈরি পোশাকের প্রবেশ আশানুরূপ হচ্ছে না। জাপানের বাজারে বাংলাদেশ অন্যতম চামড়া সরবরাহকারী দেশ। বিশেষ করে বাংলাদেশের ছাগলের চামড়ার বেশ কদর জাপানের বাজারে। বাংলাদেশের চা ’দ্য স্টার অব বেঙ্গল’ ব্র্যান্ড নামে জাপানের বাজারে ঠাঁই পেয়েছে। জাপান বাংলাদেশ বাণিজ্য প্রসারের ক্ষেত্রে জাপান চেম্বার অব কমার্স, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স (এফবিসিসিআই) এবং সাম্প্রতিককালে সংগঠিত বাংলাদেশ জাপান চেম্বার অব কমার্সের ভূমিকা বিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ। বাংলাদেশের ইপিজেডগুলোয় জাপানি বিনিয়োগ বাড়ছে আর সে সুবাদে জাপানে বাংলাদেশের রফতানি বাড়ছে। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ জাপান যৌথ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা কমিটি আত্মপ্রকাশের পর দুই দেশের সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ যোগাযোগের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়।
বাংলাদেশে
জাপানি বিনিয়োগের সিংহভাগ এসেছে রাসায়নিক সেক্টরে (৫৭ শতাংশ), এর
পরে টেক্সটাইল সেক্টরের (১৬ শতাংশ) স্থান, তারপর মেটাল প্রডাক্টস (১৩ শতাংশ), ইলেকট্রনিকস
(১১ শতাংশ) এবং অন্যান্য (৩ শতাংশ)। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক গ্যাস তুলনামূলকভাবে কম দামে পাওয়ার ফলে রাসায়নিক সার প্রস্তুতিতে এর সহজ জোগান সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশের প্রাগ্রসরমান গার্মেন্টস শিল্পের পশ্চাৎ সংযোগ হিসেবে টেক্সটাইল সেক্টরে জাপানি বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তার প্রেক্ষাপটে জাপানের নিশিমেন, টয়োবো করপোরেশন এবং বাংলাদেশের এ কে খান গ্রুপ ইন্টারন্যাশনাল
মিলস প্রজেক্ট স্থাপনের একটি উদ্যোগ এবং ১৫০ মিলিয়নের মারুবেনী—এসার এর আরেকটি বড় প্রকল্প (কোল্ড রোল স্টিল মিলস লি.) দীর্ঘদিন
ধরে বাস্তবায়নের অপেক্ষায় ছিল। ১৯৯৫ সালে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) দ্য
স্টাডি
অন
ইন্ডাস্ট্রিয়াল
ডেভেলপমেন্ট
অন
চিটাগং
রিজিওন
ইন
দ্য
পিপলস
রিপাবলিক
অব
বাংলাদেশ
নামে একটি বিশেষ সমীক্ষা বাংলাদেশ সরকারের নিকট পেশ করে। এ প্রতিবেদনে বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে স্পেশাল ইকোনমিক জোনগুলো গঠনের পরামর্শ প্রদান করা হয়। সমীক্ষায় ২৫ বছর মেয়াদি একটি বিনিয়োগ
মহাপরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়। যার মধ্যে কর্ণফূলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে জাপানিদের জন্য একটি বিশেষ রফতানি প্রক্রিয়াজাত অঞ্চল, গভীর সমুদ্রে আধুনিক কনটেইনার সুবিধাসংবলিত সমুদ্রবন্দর এবং চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয়। চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামসংলগ্ন এলাকা ঘিরে শিল্প বেষ্টনী গড়ে তুলতে পারলে সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক ও চট্টগ্রামকে নিয়ে একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রাায়াংগেল গঠিত হতে পারে বলে প্রতিবেদনে অভিমত প্রকাশ করা হয়। এরই মধ্যে চট্টগ্রামে শুধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জাপানি সহায়তায়। জাপানিদের জন্য ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠায় জাপানিদের আগ্রহ আয়োজনে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয় চট্টগ্রামের অদূরে কোরীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ ইপিজেড প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে। সম্প্রতি ঢাকার অদূরে আড়াই হাজারে জাপানিদের জন্য বিশেষ শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠেছে। মাতারবাড়ী সোনাদিয়া অঞ্চলে জাপানি বিনিয়োগ হাব গড়ে উঠছে, বিগ বি মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হচ্ছে।
জাপান বাংলাদেশের অন্যতম দ্বিপক্ষীয় দাতা দেশ। জাপান থেকে বাংলাদেশ গত পাঁচ দশকে (১৯৭২-২০২১) মোট ১৬ হাজার ১৮৯ মিলিয়ন আর্থিক সহায়তা পেয়েছে। তার মধ্যে খাদ্য সাহায্য মোট ৪০৯ মিলিয়ন (২ দশমিক ৫২ শতাংশ), পণ্য সাহায্য মোট ৩ হাজার ৬৪৬ মিলিয়ন (২২ দশমিক ৫২ শতাংশ) এবং প্রকল্প সাহায্য মোট ১২ হাজার ১৩৫ মিলিয়ন (৭৫ শতাংশ)। মোট প্রাপ্ত সাহায্যের মধ্যে অনুদান ২১ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং লোন ৭৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। জাপানি প্রকল্প সাহায্য লোনের সুদের হার ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ছিল বার্ষিক ১ দশমিক ২৫০ শতাংশ এবং ১৯৮৮ থেকে বর্তমান পর্যন্ত বার্ষিক ১ শতাংশ। ১০ বছর রেয়াতি সুবিধাসহ ৩০ বছরে তা পরিশোধযোগ্য। জাপান বাংলাদেশকে প্রকল্প সাহায্য হিসেবে যা দিয়েছে তার মধ্যে যমুনা সেতুসহ যোগাযোগ সেক্টরে ২৭ শতাংশ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২৫ শতাংশ, কেমিক্যাল সেক্টরে ২৩ শতাংশ, টেলিযোগাযোগ খাতে ৯ শতাংশ, বিমানবন্দর উন্নয়নসহ পর্যটন খাতে ৭ শতাংশ, সোশ্যাল সেক্টরসহ অন্যান্য খাতে ৯ শতাংশ ব্যবহার হয়েছে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে জাপান বাংলাদেশের মেঘনা সেতু, গোমতী সেতু, সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ, সাধারণ শিক্ষা, পানি নিষ্কাষণ ও সেচ প্রকল্প, পল্লী উন্নয়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত সুবিধা নির্মাণে অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়েছে।
কূটনৈতিক সম্পর্কের সার্বজনীন সংস্কৃতি অনুযায়ী বাংলাদেশ-জাপান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কও দুই দেশের জনগণের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের ভিত্তিতে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এ সম্পর্ক সুদৃঢ় ও সাবলীল রাখার ক্ষেত্রে দুই দেশের সরকার ও জনগণের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সাহায্য-সহযোগিতা বৃদ্ধিতে পারস্পরিক সমঝোতা অনস্বীকার্য হয়ে উঠছে।
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ: বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান, জাপানে বাংলাদেশের ভূতপূর্ব বাণিজ্য দূত