২০৩০ সাল

পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে ব্যয় ২ ট্রিলিয়নে পৌঁছবে

বণিক বার্তা ডেস্ক

কিছুটা ধীরগতিতে হলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার পরিচ্ছন্ন পরিবেশবান্ধব জ্বালানি খাতে ব্যয় বাড়াচ্ছে। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) বলছে, গত মার্চ থেকে দেশগুলো পরিবেশবান্ধব জ্বালানি খাতকে সমর্থন দিতে ৫০ হাজার কোটি ডলারের বেশি ব্যয় বাড়িয়েছে। বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সংকটের কারণে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে নতুন নতুন নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায়ই বাড়ছে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি খাতে ব্যয়। খবর অ্যারাবিয়ান বিজনেস।

কভিড-১৯ মহামারী শুরুর পর দেশগুলো পরিবেশবান্ধব জ্বালানি খাতে যে পরিমাণ ব্যয় করেছে, তা সব মিলিয়ে দশমিক ২১ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। আইইএর সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালের মার্চ থেকে মোট ৬৭ দেশের হাজার ৬০০ সরকারি সংস্থার মাধ্যমে ব্যয় হয়েছে।

সরকারি ব্যয় বেসরকারি বিনিয়োগের টেকসই প্রবাহ নিশ্চিত করতে ব্যবহার হয়েছে। নতুন নীতির কারণে ২০৩০ সাল নাগাদ বছরে পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ আরো ৫০ শতাংশ বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সে হিসাবে খাতে ব্যয় ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে।

আইইএর নির্বাহী পরিচালক ফাতিহ বিরোল বলেন, চলমান সংকটে সরকারগুলোর কাছ থেকে যে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে, তা সঠিক পথেই এগোচ্ছে। নিরাপদ জ্বালানিতে রূপান্তরের পথে আমরা অভূতপূর্ব আর্থিক সাড়া পাচ্ছি। এর মাধ্যমে জ্বালানি নিরাপত্তার উন্নতি হচ্ছে এবং ভোক্তাদের ওপর অতিরিক্ত জ্বালানি তেলের দামের যে বোঝা সেটিও কমতে শুরু করবে।

ফাতিহ বিরোল আরো বলেন, এক্ষেত্রে ভৌগোলিকভাবে কিছু অসামঞ্জস্য তৈরির শঙ্কাও তৈরি হচ্ছে। যেহেতু আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো পরিচ্ছন্ন জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না, তাই অনেক উদীয়মান উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ পিছিয়ে পড়তে পারে বলে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

উল্লেখ্য, মহামারী শুরুর পর বিশ্বজুড়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে যে পরিমাণ বিনিয়োগ সহায়তা এসেছে, তার ৯৫ শতাংশই উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর অবদান। উদীয়মান উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলো তাদের সীমিত সামর্থ্য ব্যবহার করেছে পরিবহন, বিদ্যুৎ রান্নার জ্বালানি সুলভে সহজলভ্য করার জন্য।

বিনিয়োগে সবচেয়ে বড় উল্লম্ফন হয় গত বছর। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি হ্রাস আইন এবং বেশকিছু ইউরোপীয় দেশের নেয়া পদক্ষেপের কারণে। বিনিয়োগের মূল অংশ কম কার্বন নিঃসরণকারী বিদ্যুৎ উৎপাদনে এবং বিদ্যুৎ সক্ষমতা বাড়ানো সংক্রান্ত অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় করা হবে।

এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ক্রমবর্ধমান জ্বালানি খরচের হাত থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে আরো অন্তত ৬৩ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করছে। সরকারের অব্যাহত সহায়তার পরেও উন্নয়নশীল দেশের মানুষের জন্য সুলভ মূল্যে বিদ্যুৎ পাওয়ার সম্ভাবনা কমছে। আইইএ বলছে, মুহূর্তে সাড়ে সাত কোটি মানুষ রয়েছে, যারা সম্প্রতি মৌলিক প্রয়োজনে বিদ্যুৎ সেবা নিতে পারছে, তারা শিগগিরই সক্ষমতা হারাবে। সেই সঙ্গে বিশ্বজুড়ে আরো অসংখ্য মানুষ বিদ্যুত্হীন অবস্থায় কাটাতে শুরু করবে। আইইএর পর্যবেক্ষণ শুরুর পর এবারই প্রথম পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন