বিএনপি লাশ ফেলার দুরভিসন্ধি কার্যকর করেছে —ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে তারা সংঘাতের উসকানি দিচ্ছে। সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী শক্তি মাঠে নামিয়েছে। আগুন সন্ত্রাসে নেমেছে। লাশ ফেলার দুরভিসন্ধি তারা বুধবার কার্যকর করেছে। দেশে আগুন সন্ত্রাস শুরু করে দিয়েছে। পুলিশের ওপর হামলা করেছে। তাদের এসব কর্মকাণ্ডের কারণে দেশের মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের এক যৌথ সভায় তিনি অভিযোগ করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, পুলিশ রাস্তায় পড়ে ছিল, সেই ছবি মিডিয়া দেখায়নি। তারা সরকারি গাড়ি পুড়িয়ে ফেলবে, সেই ছবি দেখাবে না। মিডিয়া এমন আচরণ কেন করছে? একটি অংশ কেন একটি পক্ষ নিচ্ছেএটা আমার অভিযোগ। কক্সবাজারে এত বড় সমাবেশ, মিডিয়া ঠিকভাবে দেখায়নি। পত্রিকার প্রথম পাতায় কার্পণ্য হয়, শেষ পাতায়ও কার্পণ্য দেখা যায়। কী অপরাধ আমাদের? শেখ হাসিনা দেশের জন্য এত কিছু করলেন। সব রেকর্ড ছাড়িয়ে বিস্ময়কর উন্নয়নের প্রতিদান! আমরা সত্যকে তুলে ধরার আহ্বান জানাই।

রাস্তা বন্ধ করে আর কোনো সমাবেশ করতে দেয়া হবে না জানিয়ে সরকারের মন্ত্রী বলেন, রাস্তা বন্ধ করে জনগণকে কষ্ট দিয়ে আর সমাবেশ করতে দেয়া হবে না। আমরাও করব না। শুক্রবার মহানগরের (ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগ) সমাবেশ স্টেডিয়ামের দক্ষিণ গেটে ছিল। তাদের বলে দিয়েছি তারা যেন নাট্যমঞ্চে করে। কারণ জনগণকে ভোগান্তিতে রাখা যাবে না। আমরা যদি জনগণের কথা ভেবে আমাদের সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করতে পারি, তাহলে বিএনপি কেন অনড় অবস্থানে আছে? বিশৃঙ্খলা করবে, সরকার পতন ঘটাবেওইসব দুরভিসন্ধি আমরা জেনে গেছি।

লন্ডন থেকে ফরমাশ আসে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চাকরি রক্ষার জন্য সেই ফরমাশ পালন করেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সব বিভাগ, জেলা, উপজেলা, থানা, ওয়ার্ডে সতর্ক অবস্থায় থাকবেন। তবে আমরা সরকারি দল, মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে। আমাদের যেন কোনো বদনাম না হয় আক্রমণকারী হিসেবে। তাই আক্রমণ আমরা করব না, কিন্তু আক্রমণের উসকানি দিলে সমুচিত জবাব দেয়া হবে, যদিও তারা আক্রমণ শুরু করে দিয়েছে। আক্রমণকারী হিসেবে শুরু তারা করেছে, আমরাও দেখব।

নয়াপল্টনে বিএনপি-পুলিশের সংঘর্ষের প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের বিদেশী বন্ধুরা একতরফাভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। এটা উচিত নয়, এটা কূটনৈতিক শিষ্টাচার নয়। ঢাকা, যশোর, চট্টগ্রাম কক্সবাজারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে বিপুল মানুষের উপস্থিতি ছিল। এটা দেখে আপনারা কিছুই কি বুঝতে পারছেন না? দেশের জনগণ কী চায়, একটুও বুঝছেন না! বিএনপি ষড়যন্ত্রের চোরাগলি দিয়ে সরকারকে হটানোর চেষ্টা করছে। সাম্প্রদায়িক শক্তির হাতে আমরা দেশকে তুলে দিতে পারি না। এটা আমাদের শপথ।

যৌথ সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, . হাছান মাহমুদ, বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেনসহ সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ভার্চুয়ালি উদ্বোধনকালে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিজয়ের মাস। সবাই প্রস্তুত আছেন? খেলা হবে বিএনপির ভোট চুরি আর ভুয়া ভোটার তালিকার বিরুদ্ধে, তাদের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। এবার ডিসেম্বরে খেলা হবে বিএনপির লুটপাটের বিরুদ্ধে, নাশকতার বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, অগণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে। লালমাই উপজেলার বাগমারা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল, যিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগেরও সভাপতি। প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন