পাঠক মত

থানায় জিডি করতে বিড়ম্বনা

১৭ নভেম্বর ২০২২ রাতে (ঘটনার সময় অনুমান রাত্র থেকে সাড়ে ৮টা) মহাখালী থেকে সিএনজিযোগে পুরান ঢাকার ফরিদাবাদ-গেন্ডারিয়ায় আমার নিজ বাসায় যাওয়ার পথে সিএনজিচালক সেগুনবাগিচার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট এনএসআই সদর দপ্তরের মাঝখানের জায়গায় সিএনজি নষ্টের অজুহাতে দাঁড়ায়। পেছনে প্যাসেঞ্জারের সিটের দরজা খুলে সিএনজিচালক ঠিক করার ভান করতে না করতেই আচমকা তিন যুবক মুখে মাস্ক পরা অবস্থায় সিএনজির ভেতরে ঢুকে আমার মুখ চেপে ম্যানিব্যাগ থেকে হাজার ২০০ টাকা নিয়ে আমাকে হাইকোর্টের সামনে চলন্ত সিএনজি থেকে নামিয়ে দিয়ে তারা শাহবাগের দিকে চম্পট দেয়।

নামার সময় তারা আমাকে চিত্কার বা চেঁচামেচি না করার ভয়ভীতির হুমকি দেয়। তবে ঘটনাস্থল ছিল নীরব এবং অন্ধকার। পরে বুঝতে আর বাকি রইল না, সিএনজিচালকের ইশারায় ঘটনা ঘটে এবং তিনি হচ্ছেন ছিনতাইকারীদের মূল হোতা। ছিনতাইকারীরা বয়সে তরুণ নিজেদের ছাত্র বলে পরিচয় দেন। ঘটনাস্থলে কোনো টহল পুলিশ চোখে পড়েনি। 

ব্যাপারে গত শুক্রবার (১৮ নভেম্বর ২০২২রাজধানীর রমনা থানায় জিডি করতে গেলে থানার ডিউটি অফিসার জানান, থানায় ছিনতাই সম্পর্কিত সাধারণ ডায়েরি নেয়া যাবে না, বরং টাকা হারিয়ে গিয়েছে মর্মে জিডি করতে পরামর্শ দিলেন। পরে থানার ওসি (তদন্ত) একই কথা বলে বলেন ঘটনাটি আগে সিসি ক্যামেরা কর্তৃক সত্যতার প্রমাণ পাওয়ার পর ঘটনার মামলা নেয়া যেতে পারে, তবে জিডি বা সাধারণ ডায়েরি নেয়া সম্ভব নয়। শেষ পর্যন্ত থানা কর্তৃপক্ষ জিডি এবং মামলা দুটির একটিও নিলেন না। ওসির সঙ্গে দেখা করতে চাইলে বলা হয় উনি রেস্টে আছেন।

থানা কর্তৃপক্ষ ছিনতাই উল্লেখ না করে বরং টাকা হারিয়ে গিয়েছে মর্মে জিডি দিয়ে যেতে বলেন। এতে আমি রাজি হইনি।  জিডি করতে থানায় কতটা বিড়ম্বনা যা সচেতন নাগরিক হিসেবে নিজ চোখে দেখে আমি নিজেই হতবাক। থানায় জিডি গ্রহণ না করা জনগণের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করার শামিল। থানাগুলোয় সেবার পরিবর্তে অহেতুক হয়রানি বিড়ম্বনা অমানবিক। এখনো থানা জনগণের আস্থার জায়গা হয়ে ওঠেনি। রমনা থানা কর্তৃপক্ষ কবে যে আমার জিডি বা মামলা গ্রহণ করবে বা আর কতদিন তার অপেক্ষায় থাকতে হবে জানি না।

অবস্থায় সেবাপ্রার্থীরা ভবিষ্যতে রাজধানীর রমনা থানার মতো দেশের যেকোনো থানা থেকে সত্য ঘটনার জিডি করতে কোনো ধরনের হয়রানি, ভোগান্তি, হেনেস্তা, দুর্ভোগের শিকার না হয় সেজন্যে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা নিষ্ঠার সঙ্গে পুলিশকে কাজ করার বিষয়টি নিশ্চিতকরণ এবং ঘটনার বিষয়টি তদন্তের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ  করছি।

 

মাহবুবউদ্দিন চৌধুরী: লেখক গণমাধ্যমকর্মী

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন