জাপানে পারিবারিক ব্যয় বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নভেল করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসায় ও বিধিনিষেধ শিথিল করায় আগের চেয়ে অধিক হারে জাপানিরা কেনাকাটা ও রেস্তোরাঁমুখী হয়েছে। অক্টোবরে জাপানের পারিবারিক ব্যয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। এ নিয়ে টানা পাঁচ মাস ধরে দেশটির পারিবারিক ব্যয় ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। যদিও অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাসে এ ব্যয় ১ শতাংশ বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছিল। জাপানভিত্তিক কিয়োদো নিউজের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অক্টোবরে আগের মাসের তুলনায় জাপানের পারিবারিক ব্যয় ১ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। যদিও এ মাসে ১ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন দেশটির অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। মহামারীতে জাপানের পর্যটন খাত ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছিল। ফলে খাতটি পুনরুদ্ধারে সরকার ভ্রমণে ভর্তুকি দেয়ায় তা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
তবে জাপানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য ও গৃহস্থালি পণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে ভোক্তারা ব্যয়ে লাগাম টানতে পারেন বলে আশঙ্কা রয়েছে। ডলারের বিপরীতে ইয়েনের বিনিময় হার পতনের কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। পৃথক আরেকটি পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, অনিয়ন্ত্রিত মূল্যস্ফীতির কারণে অক্টোবরে দেশটির প্রকৃত মজুরিতে বড় ধরনের পতন হয়েছে। এ পতনের হার গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এদিকে অক্টোবরে তাজা খাবার ও জ্বালানির দাম বাদ দিয়ে হিসাব করা কোর ভোক্তা মূল্যসূচক ৩ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে। যদিও ব্যাংক অব জাপানের (বিওজে) পূর্বাভাসে এটি ২ শতাংশের কথা বলা হয়েছিল। দুর্বল ইয়েন ও উচ্চ আমদানি ব্যয়ের কারণে মূল্যস্ফীতি ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে।
দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এক উপাত্তে বলা হয়, জাপানের প্রকৃত মজুরি ভোক্তা ক্রয় ক্ষমতার প্রধান সূচক। এটি অক্টোবরে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। ২০১৫ সালের জুনের পর এবারই তীব্রভাবে প্রকৃত মজুরি সংকুচিত হলো।
প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা কিয়োদো নিউজকে জানান, আগামী বছর বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বার্ষিক প্রকৃত মজুরি নির্ধারণ করা হবে। এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও অন্যান্য কার্যক্রম ত্বরান্বিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এমএমবিসি নিক্কো সিকিউরিটিজের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ কোয়া মিয়ামাই বলেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমে স্বাভাবিকীকরণের ফলে চলতি বছরে ভোক্তা ব্যয় শক্তিশালী থাকবে। যদিও ব্যয়ে উচ্চমূল্যের প্রভাব রয়েছে। ব্যয় পুনরুদ্ধার ধীর হওয়ায় আগামী বছরও মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব থাকবে।
এদিকে তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) জিডিপি সংকোচনের পরিসংখ্যান সংশোধন করেছে জাপান। গতকাল দেশটির মন্ত্রিসভা অফিস এ সময়ে দশমিক ৮ শতাংশ জিডিপি সংকোচনের তথ্য জানিয়েছে। যদিও নভেম্বরের মাঝামাঝিতে ১ দশমিক ২ শতাংশ সংকোচনের কথা বলা হয়েছিল।