হয়রানিমুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে আইন করার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

কর্মজগতে সব ধরনের সহিংসতা হয়রানি নিরসনে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সুরক্ষা আইন প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে শ্রম অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনের জোট জেন্ডার প্লাটফর্ম বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ-২০২২ উপলক্ষে গতকাল জেন্ডার প্লাটফর্ম বাংলাদেশ আয়োজিত কর্মজগতে সহিংসতা হয়রানি নিরসন: প্রত্যাশা করণীয় শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক থেকে আহ্বান জানানো হয়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জোটের সদস্য সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সালমা আলী। বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক একেএম আশরাফ উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম কর্মসংস্থানবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুন নাহার ভূইয়া, এমপি। কর্মজগতে সহিংসতা হয়রানি নিরসন বিষয়ে জেন্ডার প্লাটফর্মের কার্যক্রম তুলে ধরেন বিলস্ পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামসুন নাহার ভূইয়া বলেন, কর্মক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের যৌন হয়রানি প্রতিকূল অবস্থার সৃষ্টি করে, যা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন উন্নয়নের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা। নারীরা ঘরে-বাইরে  অনেক পরিশ্রম করেন কিন্তু তাদের গৃহকর্মের কাজের কোনো স্বীকৃতি নেই। তারা বিভিন্নভাবে হয়রানি নির্যাতনের শিকার হন। কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা হয়রানি নিরসন করতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা খুবই জরুরি।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় নারী পুরুষ প্রায় সমান অবদান রাখছে উল্লেখ করে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন বিচার বিভাগের উপসচিব নুসরাত জাহান বলেন, দেশে অনেক ভালো আইন রয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আইনের সঠিক বাস্তবায়ন হলে নারীর প্রতি সহিংসতা হয়রানি আরো কমে আসবে। এক্ষেত্রে আইন মানার বিষয়ে সকলের মানসিক পরিবর্তন অত্যন্ত জরুরি।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন উপপরিচালক সুস্মিতা পাইক বলেন, যৌন হয়রানি প্রতিরোধে মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনার সংজ্ঞাতেই বলা আছে কোন আচরণগুলো যৌন হয়রানি। তার পরও কর্মক্ষেত্রে আচরণগুলো দ্বারা নারীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বিষয়ে সকলের মানসিক পরিবর্তন অনেক জরুরি। পরিবার থেকে একজন শিশুকে গড়ে তুলতে হবে ভালো মানুষ হিসেবে। সে যেন বুঝতে পারে কোন কাজটা ভালো আর কোনটা খারাপ।

শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) যুগ্ম সমন্বয়কারী আহসান হাবীব বুলবুল বলেন, নারীরা কর্মক্ষেত্রে, যাতায়াত বিভিন্ন স্থানে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। যা তার মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করছে। শ্রমিকদের জন্য কর্মপরিবেশ নিরাপদ করতে না পারলে তাদের উৎপাদনশীলতা কম হবে, যার প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতেও।

সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, আমাদের নিষ্ক্রিয়তাই সহিংসতার ক্ষেত্রটা বাড়িয়েছে। সকলের ইতিবাচক মনোভাবই পারে সমস্যার সমাধান করতে। সচেতনতা বৃদ্ধি যেমন দরকার, সেই সঙ্গে ভিকটিমকে সহযোগিতা করাও একান্তভাবে প্রয়োজন। সামাজিকভাবে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেখানে নারীরা সুরক্ষিত থাকবেন এবং সকল অধিকার ভোগ করবেন। যেখানে থাকবে না কোনো বৈষম্য, সহিংসতা হয়রানি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন