স্লিপ অ্যাপনিয়া

জনজীবনে প্রভাব প্রতিরোধ ও প্রতিকার

বণিক বার্তা ডেস্ক

জৈবিক ঘড়ি বা বায়োলজিক্যাল ক্লক আমাদের শরীরের ঘুম, তাপমাত্রা, হরমোন নিঃসরণ, স্মৃতিশক্তি, ভালো লাগা, মন্দ লাগা, সবকিছুকে নিয়ন্ত্রণ করে। জৈবিক ঘড়ির নিয়মমাফিক আবর্তনের ফলেই আমাদের ঘুম সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু সঠিক ঘুমের অভাবে বেশ কিছু বিপত্তি ঘটে, যেমন উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, সড়ক দুর্ঘটনা, বিবাহ বিচ্ছেদ, মানসিক বিভিন্ন ধরনের রোগ, কাজেই আমাদের পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন।

ঘুম না হওয়ার বেশকিছু প্রভাব পড়ে জনজীবনের ওপরও। এর ফলে বেশকিছু সমস্যায় ভুগতে হয় আমাদের। শিশু বা প্রাপ্তবয়স্ক সবার ক্ষেত্রেই প্রতিদিন ঘণ্টার কম ঘুমালে ওজন বৃদ্ধি পায়। এর একটি মূল কারণ ঘুম কম হলে আমাদের ক্ষুধা লাগার প্রবণতা বেড়ে যায়। মানুষের শরীরে দুই ধরনের হাঙ্গার হরমোন আছে। গ্রেলিন এমন একটি হরমোন মস্তিষ্কে ক্ষুধা লাগার বার্তা পাঠায়। তখন মস্তিষ্ক আমাদের খাবার খেতে বলে। আর আমাদের ক্ষুধা ভাব কমিয়ে আনে লেপটিন নামের হরমোন। ঘুম কম হলে গ্রেলিন হরমোন বেড়ে যায় আর লেপটিনের পরিমাণ কমতে থাকে। ফলে অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণের মাধ্যমে ওজন বেড়ে যেতে পারে।

পর্যাপ্ত ঘুম ডিপ্রেশন কমাতে সাহায্য করে। মানসিক স্বাস্থ্যর সঙ্গে ঘুমের সম্পর্ক নিয়ে অনেকগুলো গবেষণা রয়েছে। যারা ডিপ্রেশনে ভুগছে তাদের অনেকেরই দেখা গেছে পর্যাপ্ত ঘুম হয় না। পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের দেহে ইনফেকশন কিলার সেলগুলোকে বৃদ্ধি করে। অনেক সময় দেখা যায় ঘুম কম হলে মেজাজ খিটখিটে বা অতিরিক্ত রাগ হয়। তাই মন ভালো থাকার সম্পর্ক রয়েছে ঘুমের সঙ্গে।

নাক ডাকা রোধ ভালো ঘুমের জন্য কিছু কাজ করতে পারেন। তাতে করে হয়তো কিছুটা উপকার পাবেন। প্রতিদিন অন্তত ১৫ মিনিট সকালের রোদে হাঁটা ভালো। সপ্তাহে ছয়দিন অন্তত ৪০ মিনিট করে ব্যায়াম করতে পারেন। ঘুমানোর অন্তত ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খাবেন। রাতে ঘুমানোর ১০ মিনিট আগে এক গ্লাস পানি পান করবেন। কফি, ধূমপান, মদপান সব ধরনের নেশাজাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকলে উপকার পাবেন। বাম কাতে এবং উঁচু বালিশে শোবেন। প্রতিদিনের ঘুমানোর সময় ঘুম থেকে ওঠার সময় নির্ধারিত রাখুন। স্বাস্থ্যকর জীবনধারায় নিজেকে মানিয়ে নিন। ঘুমানোর জন্য ঘরে আরামদায়ক তাপমাত্রা ভালো বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন। ঘরে বিরক্তিকর শব্দ প্রবেশ পরিহার করুন এবং আলো কমিয়ে রাখুন অথবা বন্ধ রাখুন। দিনে ঘুম পরিহার করুন। আরামদায়ক বিছানা ব্যবহার করুন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন