চাল রফতানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিল ভারত

বণিক বার্তা ডেস্ক

ভাঙা চালসহ অর্গানিক নন-বাসমতি চালের ওপর থেকে রফতানি নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিয়েছে ভারত। দেশটির বাণিজ্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন ডিরেক্টোরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড এক প্রজ্ঞাপনে তথ্য জানিয়েছে।

বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুতে ভারত ভাঙা চাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পরিবর্তন আনা হয় অন্য চালের রফতানি নীতিমালায়। সময় কেন্দ্র সরকার সেদ্ধ চাল ব্যতীত নন-বাসমতি চালের ওপর ২০ শতাংশ রফতানি শুল্ক আরোপ করে। সরকারের এমন সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বাড়ানোর মাধ্যমে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রফতানি নীতিতে আনা পরিবর্তন সফলতার মুখ দেখেছে। এরই মধ্যে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বেড়েছে। পাশাপাশি দামও স্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। কারণেই নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হয়েছে।

তিন মাস ধরে এসব চাল রফতানি বন্ধ ছিল। ফলে প্রধান আমদানিকারক দেশগুলো বিপাকে পড়ে যায়। ফের রফতানি শুরুর ঘোষণা আসায় আমদানিকারক দেশগুলোয় স্বস্তি ফিরেছে। শস্যটির রফতানি মূল্যও কমে আসতে পারে।

আন্তর্জাতিক চাল বাণিজ্যে ৪০ শতাংশ বাজার হিস্যাই ভারতের। ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশটি সব মিলিয়ে কোটি ১২ লাখ ৩০ হাজার টন চাল রফতানি করে। এর আগের অর্থবছর রফতানির পরিমাণ ছিল কোটি ৭৭ লাখ ৮০ হাজার টন। কভিড-১৯ মহামারী শুরুর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশটি রফতানি করেছিল ৯৫ লাখ ১০ হাজার টন। অর্থাৎ গত অর্থবছর চাল রফতানি মহামারীপূর্ব পর্যায় ছাড়িয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বছর পণ্যটি রফতানিতে মন্দার মুখে পড়তে যাচ্ছে দেশটি।

সরকারি তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (এপ্রিল-আগস্ট) ভারত ৯৩ লাখ ৫০ হাজার টন চাল রফতানি করেছে। গত বছরের একই সময় রফতানির পরিমাণ ছিল ৮৩ লাখ ৬০ হাজার টন। অর্থাৎ বছরের এখন পর্যন্ত দেশটির রফতানি বেশ ভালো আকারের প্রবৃদ্ধি দেখেছে। কিন্তু নীতিগত পরিবর্তনের কারণে গত তিন মাস চাল রফতানি ব্যাপক বাধাগ্রস্ত হয়, যা মোট রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তবে খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, নিষেধজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ায় রফতানিতে আবারো গতি ফিরবে।

চলতি খরিপ মৌসুমে ধান আবাদ গত বছরের তুলনায় কমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। সরকারসংশ্লিষ্টরা মনে করছিলেন, এতে উৎপাদন ব্যাপক কমে যেতে পারে। পাশাপাশি দামও ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠবে। কারণেই সরকারের কাছে রফতানি বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

চলতি খরিপ মৌসুমে দেশটির কৃষকরা তুলনামূলক কম ধান আবাদ করেছেন। খরিপ মৌসুমে জুন-জুলাইয়ের মধ্যে ধানের বীজ বপন করা হয়। পরিপক্ক হলে ধান কাটা হয় অক্টোবরে-নভেম্বরের মধ্যে।

কৃষকরা জানান, চলতি মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না থাকায় আবাদ কমে গিয়েছে। আবার কোথাও কোথাও অতি বৃষ্টিও আবাদে বাধা সৃষ্টি করেছে।

রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট বিভি কৃষ্ণ রাও বলেন, ভারত রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় আফ্রিকা মহাদেশের নিম্ন আয়ের দেশগুলো বিপাকে পড়েছে। তারা অন্যান্য উত্স থেকে বেশি দামে চাল কিনতে বাধ্য হচ্ছিল। নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়ায় সংকট কেটে যাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন