হাওর-বিলে পানি সংকট

সিলেটের বিপুল ভূমি অনাবাদি থাকার শঙ্কা

নূর আহমদ, সিলেট

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার গড়াইয়ার হাওরে নেই পানি। বিকল্প সেচ ব্যবস্থাও না থাকায় অনাবাদি পড়ে আছে শতাধিক একর জমি ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

সিলেটে বিভিন্ন উপজেলার হাওর বিলে পানি না থাকায় সেচনির্ভর বোরো ধান চাষাবাদ নিয়ে বেশ সংকটে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। এসব অঞ্চলে বিকল্প কোনো সেচ ব্যবস্থাপনা না থাকায় বিপুল পরিমাণ জমি এবার অনাবাদি থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, কোম্পানীগঞ্জসহ হাওর-বাঁওড় অধ্যুষিত এলাকাগুলোর কৃষকরা এমন পরিস্থিতিতে বেশ হতাশ।

দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বরইকান্দি, কামুশানা, ধরাধরপুর, তেতলী তেলিবাজার সংলগ্ন সিলেট-সুনামগঞ্জ বাইপাস সড়কের পূর্ব-পশ্চিম পাশে গড়াইয়ার হাওর বিস্তৃত। সরেজমিনে হাওরপারের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, বর্ষা মৌসুমে বন্যা জলাবদ্ধতার কারণে গড়াইয়ার হাওরের অধিকাংশ জমি পতিত থাকে। কিছু উঁচু জমিতে তখন আউশ আমন ফসল উত্পাদন করেন কৃষকরা। মূল আবাদ বোরো ধান। কিন্তু কৃষি বিভাগের উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট এলাকায় কোনো সুষ্ঠু সেচ ব্যবস্থা না থাকায় কৃষকরা বোরো ফসল উত্পাদনে পিছিয়ে রয়েছেন। বিলের জলেই করতে হয় সব চাষবাস। এবার হাওরে পানি না থাকায় বেশ বিপাকেই পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। সেচ ব্যবস্থাপনার অভাবে শতাধিক একর জমি কৃষির আওতায় আনতে পারছেন না বলে জানান। 

বরইকান্দি গ্রামের জালাল হোসেন জানান, গড়াইয়ার হাওরে তার কয়েক বিঘা জমি রয়েছে। সেখানে সেচের ব্যবস্থা করতে পারলে ওই জমিতে ভালো বোরো চাষ হবে। কিন্তু পাশের সুরমা নদী থেকে পানি এনে চাষাবাদ করলে লাভের চেয়ে উল্টো ক্ষতির ভাগই বেশি। তাই জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কৃষি অফিসকে এক্ষেত্রে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সেচসহ অন্যান্য সহযোগিতা পেলে কৃষকরা আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবেন এবং কৃষি উত্পাদনে উত্সাহিত হবেন বলেও মনে করেন জালাল হোসেন। 

এদিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার হিঙ্গি কুড়ি বিলে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় সেচ সংকটে পড়েছে প্রায় তিনশ একর জমি। পানির অভাবে বিলের দুই পাশের এসব জমিতে চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। কৃষকদের অভিযোগ, বিলের খাস কালেকশনের দায়িত্বে থাকা লোকজন পানি ছেড়ে দিয়ে মাছ ধরায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।

বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং বলেন, হিঙ্গি কুড়ি বিলে কৃষকদের চাষাবাদ নিশ্চিতকরণে বিলের ইজারাদারদের ডাকা হয়েছিল। তারা যাতে পানি না ছাড়ে ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। কৃষি অধিদপ্তর সিলেটের উপপরিচালক কাজী মুজিবুর রহমান জানান, সিলেটের অনাবাদি জমি চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসতে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এর আওতায় কৃষকদের সেচ ব্যবস্থা দেয়ারও সুযোগ রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন