বিএনপিকে ২৬ শর্তে সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশের অনুমতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপিকে আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) তবে এক্ষেত্রে দলটিকে ২৬ শর্ত দেয়া হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। ডিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (সদর দপ্তর প্রশাসন) আব্দুল মোমেনের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে গতকাল বিকালে তথ্য জানানো হয়েছে।

নয়াপল্টনে নিজেদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে ১৫ নভেম্বর পুলিশের কাছে আবেদন করেছিল বিএনপি। তবে আবেদনটি ২০ নভেম্বর দাখিল হয়েছে উল্লেখ করে ডিএমপির প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সড়কে সমাবেশ করলে যানজট নাগরিক দুর্ভোগ সৃষ্টি হবে। কারণে ওই স্থানের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির উদ্যোগে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ করার অনুমতি দেয়া হলো। শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন সাপেক্ষে দুপুর ১২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত দলটি ওই খোলা প্রান্তর ব্যবহার করতে পারবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।

ডিএমপির দেয়া শর্তগুলো হলো: স্থানটি অর্থাৎ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের জন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। সেই সঙ্গে স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রে উল্লেখিত শর্ত যথাযথভাবে পালন করতে হবে। সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরেই। নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের ভেতরে বাইরে উন্নত রেজল্যুশনযুক্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে; প্রতিটি প্রবেশগেটে স্থাপন করতে হবে আর্চওয়ে এবং সমাবেশস্থলে আগতদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে চেকিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। সেই সঙ্গে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভেহিকল স্ক্যানার বা সার্চ মিররের মাধ্যমে সমাবেশস্থলে আগত সব যানবাহন তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে; সমাবেশস্থলে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও রাখতে হবে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে বা সড়কের পাশে মাইক বা সাউন্ড ব্যবহার এবং প্রজেক্টর স্থাপন করা যাবে না। উদ্যানের বাইরে, রাস্তায় বা ফুটপাতে কোথাও লোক সমবেত হওয়া যাবে না। আজান, নামাজ অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক বা শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে, এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন বা বক্তব্য দেয়া বা প্রচার করা যাবে না।

শর্তে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, অনুমোদিত সময়ের মধ্যে সমাবেশের সার্বিক কার্যক্রম শেষ করতে হবে। সমাবেশ শুরুর ঘণ্টা আগে লোকজন সমবেত হওয়ার জন্য আসতে পারবে। সমাবেশস্থলের আশপাশসহ রাস্তায় কোনো অবস্থাতেই সমবেত হওয়াসহ যান জন চলাচলে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না। পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে ব্যবহার করা যাবে না কোনো ধরনের লাঠিসোঁটা কিংবা রড। আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থী জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়, এমন কার্যকলাপ করা যাবে না। রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ বক্তব্য দেয়া যাবে না; উসকানিমূলক কোনো বক্তব্য বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না। মিছিল সহকারেও সমাবেশস্থলে আসা যাবে না। পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থানে গাড়ি পার্ক করতে হবে, মূল সড়কে কোনো গাড়ি পার্ক করা যাবে না। সমাবেশস্থলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণপূর্বক সমাবেশ পরিচালনা করতে হবে। উল্লেখিত শর্তাবলি যথার্থভাবে পালন না করলে তাত্ক্ষণিকভাবে অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে এবং জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে অনুমতির আদেশ বাতিলের ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন