যাত্রীদের ৫৮% হবে এশিয়া-প্যাসিফিক ও মধ্যপ্রাচ্যের

আগামী ২০ বছরে দ্বিগুণ হবে উড়োজাহাজে ভ্রমণের চাহিদা

বণিক বার্তা ডেস্ক

অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য তৈরির অংশ হিসেবে আরব দেশগুলো এভিয়েশন খাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করছে ছবি: রয়টার্স

কভিডজনিত বিধিনিষেধ শিথিলের পর বিশ্বজুড়ে উড়োজাহাজে ভ্রমণ বাড়ছে। বেশির ভাগ দেশ সীমান্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়ায় ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বৈশ্বিক এয়ারলাইনসগুলো। আগামী বছরের মধ্যে মহামারী-সম্পর্কিত বিপর্যয় কাটিয়ে মুনাফায় ফিরতে যাচ্ছে খাতটি। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ২০ বছরে আকাশ ভ্রমণের চাহিদা দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মোট যাত্রীর ৫৮ শতাংশ হবে এশিয়া-প্যাসিফিক মধ্যপ্রাচ্যের। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি পূর্বাভাসে এয়ারপোর্টস কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনাল (এসিআই) তথ্য জানিয়েছে।

এসিআই এশিয়া-প্যাসিফিকের এয়ারপোর্ট ইন্ডাস্ট্রি আউটলুক শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৪০ সাল নাগাদ বিশ্বজুড়ে উড়োজাহাজে ভ্রমণ করা যাত্রী সংখ্যা প্রায় হাজার ৯০০ কোটিতে উন্নীত হবে। ২০১৯ সালে সংখ্যা ছিল ৯২০ কোটি। এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের বিমানবন্দরগুলো ১১০ কোটি যাত্রী পরিচালনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সংখ্যা ২০১৯ সালে পরিচালনা করা ৫০ কোটি ৫০ লাখের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি।

এসিআই এশিয়া-প্যাসিফিকের মহাপরিচালক স্টেফানো ব্যারোনসি বলেন, এশিয়ায় উড়োজাহাজে ভ্রমণ করা যাত্রীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়তে চলেছে। ফলে অঞ্চলটিকে বিপুলসংখ্যক যাত্রী পরিবহনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। যাত্রীর সংখ্যা ধারাবাহিক উন্নতি তাদের আস্থা পুনর্গঠনের পাশাপাশি এভিয়েশন শিল্পের টেকসই পুনরুদ্ধারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ভ্রমণ পুনরুদ্ধার হতে আরো বেশি সময় লাগবে। বিশেষ করে বিশ্বের সঙ্গে পুনরায় সংযোগ স্থাপন আংশিকভাবে চীনের ওপর নির্ভর করছে। যদিও পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় এশিয়ায় সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতাগুলো কম। ফলে সীমাবদ্ধতা ছাড়াই ভ্রমণের স্বাধীনতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের বাধা দেয়া উচিত নয়। বরং এভিয়েশন ইকোসিস্টেমের সঙ্গে জড়িত সবাইকে উড়োজাহাজে ভ্রমণ বাড়ানোর জন্য প্রস্তুত হতে হবে।

ভ্রমণের জন্য মধ্যপ্রাচ্য একটি আদর্শ অঞ্চল। সেখান থেকে উড়ে যাওয়া উড়োজাহাজগুলো ঘণ্টার মধ্যেই প্রায় সমগ্র এশিয়া, আফ্রিকা ইউরোপে পৌঁছতে পারে। অবস্থায় বাজারটি ধরতে আরব দেশগুলো অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে দেশগুলো এভিয়েশন খাতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করছে এবং উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিচ্ছে। যেমন সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০ লক্ষ্যমাত্রার অনত্যম স্তম্ভ পর্যটন। কারণ খাতটি অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য, বিনিয়োগ আকর্ষণ, আয়ের উৎস বৃদ্ধি এবং নাগরিকদের চাকরির সুযোগ বাড়াতে পারে।

গত মাসে বিশ্ব পর্যটন সংস্থা জানায়, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে আন্তর্জাতিক পর্যটক প্রবাহে শীর্ষ ২০ দেশের মধ্যে রয়েছে সৌদি আরব। ইন্দোনেশিয়ার বালিতে অনুষ্ঠিত জি২০ পর্যটন মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে সৌদি ভ্রমণকারীদের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। তবে দাবি করা হয়েছে, ২০২২ সালের প্রথমার্ধে খাতটি ১২১ শতাংশ বেড়েছে। ইভেন্ট চলাকালে দেশটির পর্যটনমন্ত্রী আহমেদ আল-খতিব বলেন, পর্যটক প্রবাহের বৃদ্ধি অর্থনীতি বহুমুখীকরণ নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ভিশন ২০৩০-এর রূপরেখা অনুযায়ী দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) পর্যটন খাতের অবদান বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

সৌদি আরবকে পর্যটনের জন্য দ্রুতবর্ধনশীল বাজারগুলোর একটি হিসেবে অভিহিত করে আল-খতিব বলেন, প্রাক-কভিড সময়ের তুলনায় সৌদির পর্যটন খাত ১৪ শতাংশ বেড়েছে।

চলতি বছরের মাঝামাঝিতে পর্যটন টেকসই খাতে কাজের জন্য এক লাখ মানুষকে প্রশিক্ষণ দিতে ১০ কোটি ডলার বরাদ্দ দিয়েছিল আরব দেশটি। দেশটির পর্যটনমন্ত্রী বলেন, পর্যটন খাত বিকশিত করতে এরই মধ্যে ৯০টি হোটেল চালু করা হয়েছে এবং শিগগিরই আরো হোটেল খোলা হবে। এসব বিনিয়োগের ৭০ শতাংশই এসেছে বেসরকারি খাত থেকে। চলতি বছর দেশটি কোটি ২০ লাখ বিদেশী পর্যটক আকর্ষণ করবে বলে আশা করছে। ২০২১ সালে দেশটিতে ভ্রমণ করা বিদেশীদের সংখ্যা ছিল ৪০ লাখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন