ভারতে পাইকারি বিতরণ ব্যবসাও বন্ধ করছে অ্যামাজন

বণিক বার্তা ডেস্ক

ভারতে পাইকারি বিতরণ ব্যবসাও বন্ধ করে দিচ্ছে অ্যামাজন। বার্ষিক পরিচালন কার্যক্রম পর্যালোচনা এবং খরচ কমানোর অংশ হিসেবে পদক্ষেপ নিচ্ছে মার্কিন -কমার্স জায়ান্টটি। এর আগে বেঙ্গালুরুতে খাদ্যসরবরাহ ব্যবস্থা এবং স্কুল লার্নিং প্লাটফর্মের কার্যক্রমও বন্ধের ঘোষণা দেয় অ্যামাজন।

ইন্ডিয়া টুডের খবর অনুসারে, অ্যামাজনের পাইকারি পণ্য বিতরণ ব্যবসা বেঙ্গালুরু, মাইসুরু হুবলি শহরে পরিচালিত হয়। প্রতিষ্ঠানটি ছোট ব্যবসাগুলোকে সহায়তায় স্থানীয় দোকান যেমন কিরানা স্টোর, ফার্মেসি ডিপার্টমেন্ট স্টোরে সরাসরি পণ্য বিতরণ করে।

মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কায় ব্যয় সংকোচনের উদ্যোগ নিয়েছে। উদ্যোগের অংশ হিসেবে বড় ধরনের কর্মী ছাঁটাই করছে অ্যামাজন। একটি বিবৃতিতে সংস্থাটি নিশ্চিত করেছে, প্রতিষ্ঠানটি বার্ষিক পরিচালন কার্যক্রম পর্যালোচনার অংশ হিসেবে পাইকারি বিতরণ ব্যবসা অ্যামাজন ডিস্ট্রিবিউশন বিভাগটি বন্ধ করে দেবে। আগামী ২৯ ডিসেম্বর পরিষেবাটি বন্ধ হয়ে যাবে।

নিয়ে ভারতে তৃতীয় ব্যবসা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে অ্যামাজন। চলতি সপ্তাহের শুরুতে সংস্থাটি খাদ্যসরবরাহ পরিষেবা অ্যামাজন ফুড এবং অনলাইন লার্নিং প্লাটফর্ম অ্যামাজন একাডেমি বন্ধ করে দেয়ার কথা বলা হয়। অ্যামাজনের খাদ্য বিতরণ পরিষেবাটি বেঙ্গালুরুভিত্তিক একটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে ২০২০ সালে শুরু করেছিল। তবে ব্যবসাটি সেভাবে বিস্তৃত করতে পারেনি সংস্থাটি। নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, আগামী ২৯ ডিসেম্বর থেকে অ্যামাজনের ফুড ডেলিভারি বন্ধ হয়ে যাবে। এদিন থেকে ভোক্তারা আর খাবারের অর্ডার দিতে পারবেন না। তবে ২৯ ডিসেম্বরের আগ পর্যন্ত যথারীতি অর্ডার অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করা হবে।

এছাড়া আগামী বছরের আগস্টে অ্যামাজন একাডেমি বন্ধ করে দেয়া হবে। অ্যামাজন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের জন্য জেইইর মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অনলাইন লার্নিং প্লাটফর্ম হিসেবে অ্যামাজন একাডেমি চালু করেছিল।

অ্যামাজন ভারতে ব্যবসা বিস্তৃত করতে ৬৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছিল। অবস্থায় একের পর এক ব্যবসা বন্ধের ঘোষণায় মনে করা হচ্ছে, সংস্থাটি দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে লাগাম টানছে। পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদ পোর্টাল টেক ক্রাঞ্চ জানিয়েছে, অ্যামাজন ভারতে মূল কার্যক্রম -কমার্স ব্যবসা চালিয়ে যাবে। গত সপ্তাহে সংস্থাটি দেশটিতে দ্বিতীয় এডব্লিউসি উন্মোচন এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ক্লাউড কার্যক্রমে ৪৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

এদিকে চলতি মাসের মাঝামাঝিতে বিশ্বজুড়ে সংস্থাটির প্রায় ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা সামনে আসে। এরই মধ্যে করপোরেট প্রযুক্তি বিভাগের এসব কর্মীকে ছাঁটাইয়ের কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অ্যান্ডি জ্যাসি একটি বিবৃতিতেও কর্মী ছাঁটাইয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ২০২৩ সালের শুরুর দিকেও কর্মী ছাঁটাইয়ের পদক্ষেপ অব্যাহত রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। যদিও কর্মীদের সরাসরি বরখাস্ত করা হয় না। সংস্থাটি তার কর্মীদের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বিভাগ পরিবর্তন কিংবা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে বলেছে।

স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলে কর্মীরা ২২ সপ্তাহের মূল বেতন এবং চাকরিজীবনে প্রতি ছয় মাসের পরিষেবার জন্য আরো এক সপ্তাহের মূল বেতন পাবেন। পাশাপাশি কর্মীরা বীমা সুবিধা নীতির আওতায় ছয় মাসের জন্য চিকিৎসা বীমা বা পরিবর্তে একটি সমপরিমাণ বীমা প্রিমিয়াম পাবেন। তবে কর্মীরা যদি পারফরম্যান্স ইমপ্রুভমেন্ট প্রোগ্রামের অধীনে থাকেন, তাহলে এসব সুবিধা পাবেন না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন