ঋণখেলাপিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবেন অর্থঋণ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ঋণখেলাপিদের দেশত্যাগে চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের দেয়া নিষেধাজ্ঞার আদেশ বহাল রেখে এক রায় প্রদান করেছেন। বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের দ্বৈত বেঞ্চ রিট খারিজ করে চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের দেয়া আদেশ বহাল রেখেছেন। চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত সূত্রে গতকাল এ তথ্য পাওয়া গেছে।
শীর্ষ ঋণখেলাপি মোহাম্মদ আলী, তার স্ত্রী জেবুন্নেসা ও ছেলে আলী ইমামের পাসপোর্ট জব্দের জন্য আইএফআইসি ব্যাংকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি বিবাদীদের পাসপোর্ট আদালতে জমা প্রদান এবং আদালতের অনুমতি ব্যতীত দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের এ আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে আলী ইমাম হাইকোর্ট বিভাগে রিট মামলা করেন। রিট মামলায় ইস্যুকৃত রুলের ওপর পূর্ণাঙ্গ শুনানি শেষে ২০২২ সালের ৪ আগস্ট বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের দ্বৈত বেঞ্চ রুল খারিজ করে দেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ব্যাংক জনগণের আমানতের টাকা ঋণ প্রদান করে। জনস্বার্থ রক্ষা করার প্রয়োজনে ঘটনা ও পরিস্থিতি বিবেচনায় অর্থঋণ আদালত আইনের ৫৭ ধারা মোতাবেক ঋণখেলাপিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করতে পারবে অর্থঋণ আদালত।
মামলার নথিপত্রে দেখা গেছে, ৬১ কোটি ৩ লাখ ৩১ হাজার ৬২৩ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ে চট্টগ্রামের ইমাম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রী-সন্তানের বিরুদ্ধে ২০১২ সালে চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতে মামলা করে আইএফআইসি ব্যাংক। চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতে শীর্ষ ঋণখেলাপি মোহাম্মদ আলী ও তার বিভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে বিচারাধীন ২০টির অধিক মামলায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বেশি খেলাপি ঋণের দাবি রয়েছে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আগেই মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রী বিদেশে পলাতক রয়েছেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে আলী ইমাম দেশ ছাড়তে পারেননি। শীর্ষস্থানীয় ঋণখেলাপিরা বিদেশে পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ ফলপ্রসূ হচ্ছে না। যার কারণে বছরের পর বছর খেলাপি ঋণের মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না।
আইএফআইসি ব্যাংকের প্যানেল আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আরিফ উদ্দিন এ বিষয়ে বণিক বার্তাকে বলেন, হাইকোর্টের এ রায় খেলাপি গ্রাহকদের অর্থ পাচারসহ ঋণের টাকা ফেরত দেয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে। ইমাম গ্রুপের বিরুদ্ধে আইএফআইসি ব্যাংকের করা মামলায় বিবাদীদের করা রিট খারিজ হয়ে যাওয়ার কারণে অর্থঋণ আদালত জনগণের আমানত ফেরত পাওয়ার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।
