বিশ্ববাজারে ১১ মাসের সর্বনিম্নে জ্বালানি তেলের দাম

বণিক বার্তা ডেস্ক

আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমে ১১ মাসের সর্বনিম্নে নেমেছে। গতকাল ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে পণ্যটি আগের কার্যদিবসের তুলনায় শতাংশেরও কম দামে বিক্রি হয়েছে। খবর রয়টার্স।

চীনে কভিড-১৯ ভাইরাসের রেকর্ড সংক্রমণ প্রতিরোধে একের পর এক কঠোর পদক্ষেপের কারণে জ্বালানিটির চাহিদায় ভাটা পড়ছে। অন্যদিকে এসব পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দেশটিতে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। দেশটির বিভিন্ন শহরে রাস্তায় নেমেছে বিক্ষুব্ধ মানুষ। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিষয়টিও চাহিদায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

আইসিই ফিউচারসে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের জানুয়ারিতে সরবরাহ চুক্তির দাম দশমিক ৮৩ শতাংশ কমেছে। প্রতি ব্যারেলের দাম স্থির হয়েছে ৮১ ডলার ২৬ সেন্টে, যা বছরের জানুয়ারির পর সর্বনিম্ন।

অন্যদিকে নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) জানুয়ারিতে সরবরাহ চুক্তির দাম দশমিক ৮৮ শতাংশ শতাংশ কমেছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৭৪ ডলার শূন্য সেন্ট।

তথ্য বলছে, গতকাল চীনে নতুন করে ৪০ হাজার ৫২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর আগের দিন শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৩৯ হাজার ৫০৬। অব্যাহত সংক্রমণ বৃদ্ধি এবং তা প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপ চীনের অর্থনীতি সার্বিক পরিস্থিতিকে অস্থির করে তুলেছে।

এদিকে বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে চীনে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। শি জিংপিং দেশটির প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এমন বিক্ষোভ আর দেখা যায়নি। বিক্ষোভের কারণে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেকেই বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করছেন। কারণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদায়। চীন বিশ্বের শীর্ষ জ্বালানি তেল ব্যবহারকারী দেশ। দেশটির অর্থনীতিতে অস্থিরতা দেখা দিলে জ্বালানি তেলের বিশ্ববাজারে তার প্রভাব স্বাভাবিকভাবেই পড়ে।

এদিকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা বৃদ্ধির হার আরো শ্লথ হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পণ্যটির চাহিদা প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস আবারো কমিয়েছে ওপেক। এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত নিয়ে টানা পাঁচবার পূর্বাভাস কমানো হলো। চলতি বছরের পাশাপাশি আগামী বছরের পূর্বাভাসও কমানো হয়েছে। উচ্চমূল্যস্ফীতি, সুদহার বৃদ্ধিসহ বিশ্ব অর্থনীতিতে পাহাড়সম চ্যালেঞ্জের কারণেই মূলত চাহিদায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

সম্প্রতি মাসভিত্তিক এক প্রতিবেদনে ওপেক জানায়, চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা দৈনিক ২৫ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল বা দশমিক শতাংশ করে বাড়বে। আগের তুলনায় চাহিদা পূর্বাভাস দৈনিক এক লাখ ব্যারেল করে কমানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে ওপেক জানায়, বিশ্ব অর্থনীতি ভয়াবহ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। চলতি প্রান্তিকে (অক্টোবর-নভেম্বর) পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করতে পারে। উচ্চমূল্যস্ফীতি, শীর্ষ অর্থনীতির কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর মুদ্রানীতি সংকোচন, শ্রমবাজারে সংকট, সরবরাহ চেইনে অব্যাহত প্রতিবন্ধকতাসহ নানা বিষয় নিম্নমুখী ঝুঁকি তৈরি করেছে।

ওপেক এর মিত্র জোট ওপেক প্লাস আগামী ডিসেম্বর জ্বালানি তেল উত্তোলন নীতি নিয়ে বৈঠকে বসবে। তার আগ পর্যন্ত এটিই ওপেকের সর্বশেষ প্রতিবেদন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন