গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষি উপকরণ সহজলভ্য করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সার, কীটনাশক, সেচ, বীজ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সহজলভ্য এবং এর সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। রোববার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত এক গোলটেবিলে এ মত দিয়েছেন বক্তারা। ইউএসএআইডি ও ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউনের যৌথ উদ্যোগে‘টেকসই উন্নয়নের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা’ শীর্ষক এ গোলটেবিলের আয়োজন করা হয়।  

ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদের সঞ্চালনায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আনোয়ার ফারুক বলেন, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে সব খাদ্যপণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। বেড়েছে পরিবহন খরচও। সামনে বোরো মৌসুম আসছে। এ মৌসুম পুরোটাই সেচ নির্ভর। এর আগেই ডিজেলের দাম কমাতে হবে। তা না হলে সেচে ভর্তুকি দিতে হবে। আমন মৌসুমে সরকার ধানের দাম ১ টাকা বাড়িয়েছে। চালের দাম বাড়িয়েছে দুই টাকা। এখানেও মিলারদের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এটা কৃষকদের জন্য পর্যাপ্ত নয়। এজন্য সরকার ধান-চাল সংগ্রহে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।

কৃষি বিজ্ঞানীরা দেশের কৃষি উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন উল্লেখ করে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, বীজের উন্নয়নে আমাদের আরও বিনিয়োগ করতে হবে। কৃষকরা সবজি উৎপাদন করে যে দামে বিক্রি করেন তার চেয়েও অনেক বেশি দামে বাজার থেকে ভোক্তাদের কিনতে হয়। কৃষকরা এক্ষেত্রে ৩০ ভাগ দামও পান না। মাঝেমধ্যে এটা ১৫ ভাগেও নামে।

বাংলাদেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি চাল গ্রহণ করেন উল্লেখ করে এফবিসিসিআই এর সাবেক সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধ চাল বেশি খান। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের মানুষ আতপ চাল খায়। চাল নিয়ে অনেক ধরনের রাজনীতি হয়। গ্রামে এখন কৃষিকাজ করার লোক খুজে পাওয়া যায় না। এটা দিনদিন বাড়ছে। ব্যাটারিচালিত হুইলার চালালেও এর চেয়ে বেশি দাম পাওয়া যায়। কোন খাতে কি শ্রমিক লাগবে এগুলা নিয়ে পরিকল্পনা নেয়া হয় না। এদিকে সরকারকে নজর দিতে হবে। 

বৈঠকে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট এর সাবেক মহাপরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পরিসংখ্যান ব্যুরো ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যে সামঞ্জস্যতা নেই। এর মধ্যে বিস্তর ফারাক। মোট খাদ্যশস্যের উৎপাদনের তথ্যে এ দুই সরকারী সংস্থার মধ্যে ৪০ লাখ টনের ফারাক থাকে। সঠিক তথ্য দিতে হবে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ বলা হলেও আসলে কত স্বয়ংসম্পূর্ণ তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আমন ধানের দাম ২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ উৎপাদন খরচই সাড়ে ২৭ টাকা। কৃষকদের দাম নিশ্চিত না করা গেলে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে। 

গোলটেবিল বৈঠকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক এনামুল হক ও কৃষি সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন