দেশের খবর

নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার দুই বছরের মধ্যেই মাগুরা শহরের চার লেন সড়কের বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের বেশকিছু অংশ উঁচু-নিচু হয়ে পড়েছে। ফলে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। বেহাল এ সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। তবে সড়ক বিভাগের প্রকৌশলীরা বলছেন, এ অবস্থার পেছনে নির্মাণ ত্রুটি দায়ী নয়। মূলত ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

মাগুরা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে সদর উপজেলার রামনগর থেকে আবালপুর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্ত করার প্রকল্প নেয়া হয়। এর মধ্যে যুব উন্নয়ন ভবনের সামনে থেকে পুলিশ লাইন পর্যন্ত শহর অংশে সড়কটি চার লেনে উন্নীত করা হয়। ভূমি অধিগ্রহণে ২৯ কোটিসহ পুরো প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ১১২ কোটি ৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে শহরের ঢাকা রোড একতা কাঁচাবাজার থেকে পুলিশ লাইনস পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের সংস্কারকাজ শেষ হয় ২০২০ সালের মার্চে। জমি অধিগ্রহণের জটিলতা থাকায় বাকি অংশের কাজ সম্প্রতি শেষ হয়েছে।

সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে  কথা বলে জানা যায়, প্রথম দফায় শেষ হওয়া ঢাকা রোড একতা কাঁচাবাজার থেকে পুলিশ লাইনস পর্যন্ত অংশেই মূলত সড়কে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ অংশের সড়ক বিভাজকের দুই পাশের লেনে বেশকিছু অংশ উঁচু-নিচু হয়ে গিয়েছে। বেশি খারাপ অবস্থা ভায়নার মোড়ে, স্টেডিয়াম গেট ও পুলিশ লাইনসের গতিরোধকের দুই পাশে কয়েকশ মিটার অংশে। এসব এলাকায় প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

ইজিবাইক চালক জুবায়ের আহম্মেদ জানান, আমরা যারা ধীরগতির যানবাহন চালাই তারা খুব সমস্যার মধ্যে আছি। এক লেন থেকে অন্য লেনে যেতে গেলে মাঝখানে সড়ক বিভাজকের মতো উঁচু হয়ে গিয়েছে। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।

স্টেডিয়াম এলাকার ব্যবসায়ী সাগর বিশ্বাস বলেন, এ সড়কে ঝুঁকি নিয়ে মোটরসাইকেল চালাই। এছাড়া ভ্যান-রিকশাসহ ছোট যানবাহনগুলো প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ছে। এত অল্প সময়ে সড়ক কেন বেহাল হলো বুঝতে পারছি না। অন্য সড়কগুলোয় একই যানবাহন চলছে কিন্তু সেখানে তো এমন হচ্ছে না।

পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক কাওছার উদ্দিন জানান, মাগুরা শহর অংশে সড়ক উঁচু-নিচু হয়ে যাওয়ায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে স্টেডিয়ামের সামনে ও পুলিশ লাইনস এলাকায় বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে। সড়কের এ অবস্থার কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে মোটরসাইকেল চালকরা।

সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ প্রকল্পে রাজশাহীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস কনস্ট্রাকশন ও এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার নামে দুটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজ করেছে। কাজ হস্তান্তরের পর তিন বছরের মধ্যে সড়কে কোনো ত্রুটি দেখা দিলে সেটা সংস্কার করে দেয়ার বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছিল।

সড়ক উঁচু-নিচু হয়ে যাওয়ার পেছনে নির্মাণ ত্রুটি নেই বলে দাবি করে মাগুরা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম জানান, সড়ক বিভাজক ঘেঁষা দুটি লেনেই বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দিয়েছে। আর এটা বেশি হয়েছে যেসব এলাকায় গতিরোধক রয়েছে। গতিরোধকে ভারী যানবাহন এসে ব্রেক করে বলে চাপও সেখানে বেশি পড়ে। সড়কের এ রাটিং (উঁচু-নিচু) সংস্কারের জন্য এরই মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয়া হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে।