চুক্তি সম্প্রসারণের পরও গতিহীন ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রফতানি

বণিক বার্তা ডেস্ক

কৃষ্ণসাগরীয় খাদ্যশস্য রফতানি চুক্তি সম্প্রসারণের পরও ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রফতানিতে গতি ফেরেনি। ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়ার সংশ্লিষ্টরা রফতানির জন্য প্রস্তুতকৃত জাহাজ যাচাই-বাছাই বা পর্যবেক্ষণের কাজ দ্রুততার সঙ্গে করছে না। তাদের অবহেলার কারণেই রফতানিতে ধীরগতি দেখা দিয়েছে। খবর রয়টার্স।

জাতিসংঘ তুরস্কের মধ্যস্থতায় গত সপ্তাহে চুক্তিটি চার মাসের জন্য বাড়ানো হয়। উদ্দেশ্য ছিল বৈশ্বিক খাদ্যসরবরাহ সংকট শিথিল করা। প্রত্যাশা ছিল, চুক্তি সম্প্রসারণের পর কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর থেকে সরবরাহ ব্যাপক বাড়বে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমতে পারে।

এদিকে চুক্তি সম্প্রসারণের পর থেকে এখন পর্যন্ত একদিন পাঁচটির বেশি খাদ্যশস্যবাহী জাহাজ ইউক্রেন ছেড়ে যেতে পারেনি। অথচ এর আগের সপ্তাহে এবং মাসে প্রতিদিন অন্তত ১০টি জাহাজ যাচাই-বাছাই শেষে বন্দর ছেড়ে রফতানি গন্তব্যে পাড়ি দিয়েছে।

জাতিসংঘের মুখপাত্র ইসমিনি পালা বলেন, চুক্তি সম্প্রসারণ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। ফলে জাহাজ চলাচল প্রবাহ ব্যাহত হয়। তার ওপর ইস্তানবুলে বৈরী আবহাওয়াও এক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করেছে। জয়েন্ট কো-অর্ডিনেশন সেন্টারে (জেসিসি) কর্মী পরিদর্শকদের রদবদলকে দায়ী করছেন অনেকে।

২৩ নভেম্বর পর্যন্ত সাতদিনে ইউক্রেন ছেড়ে গিয়েছে ২৭টি খাদ্যশস্যবাহী জাহাজ। অথচ এর আগের সপ্তাহে গিয়েছিল ৩৬টি জাহাজ। এছাড়া ২৭ অক্টোবর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ছেড়ে গিয়েছে ৩৮টি জাহাজ। শুধু - নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র আটটি জাহাজ ছেড়ে গিয়েছিল। কারণ ওই সময় রাশিয়া চুক্তি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয়।

২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রফতানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩২ শতাংশ কমেছে। রফতানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে কোটি ৬২ লাখ টনে। দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে তথ্য জানিয়েছে।

মোট খাদ্যশস্যের মধ্যে গম রফতানি করা হয়েছে ৬৩ লাখ টন, ভুট্টা ৮৬ লাখ যব ১৩ লাখ টন। রাশিয়া হামলা চালানোর পর থেকেই খাদ্যশস্য রফতানি নিয়ে বিপাকে পড়ে ইউক্রেন। ছয় মাস ধরে অবরুদ্ধ থাকায় কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর দিয়ে রফতানি তলানিতে নেমে আসে। সময় দেশটি স্থল, রেল নদীপথ দিয়ে সামান্য পরিমাণে রফতানি অব্যাহত রেখেছিল। সংশ্লিষ্টরা জানান, যুদ্ধের আগে ইউক্রেন প্রতি মাসে গড়ে ৬০ লাখ টন খাদ্যশস্য রফতানি করত। কিন্তু যুদ্ধের পর তা ১০ লাখ টনে নেমে আসে। এতে বিশ্বজুড়ে খাদ্যনিরাপত্তা চরম ঝুঁকির মুখে পড়ে। পরিস্থিতি উত্তরণে উদ্যোগ নেয় জাতিসংঘ তুরস্ক। তাদের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ইউক্রেনের মধ্যে গত জুলাইয়ের শেষের দিকে একটি চুক্তি হয়। এরপর ইউক্রেন আবারো কৃষ্ণসাগর দিয়ে শস্য রফতানি শুরু করে। দ্রুতই রফতানিতে প্রবৃদ্ধি আসে। কিন্তু এখনো তা যুদ্ধপূর্ব অবস্থায় ফিরে যেতে পারেনি।

চলতি মাসের প্রথম ২০ দিনে কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর দিয়ে বিভিন্ন ধরনের অন্তত ৩০ লাখ টন শস্য রফতানি হয়েছে, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৩০ শতাংশ কম।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন