নিতাইগঞ্জে অস্থির চিনির বাজার

মানা হচ্ছে না সরকারের বেঁধে দেয়া দাম

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, নারায়ণগঞ্জ

দেশের অন্যতম বৃহৎ পাইকারি বাজার নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জে সরকারের বেঁধে দেয়া দামের তোয়াক্কা না করে বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে চিনি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিল গেট থেকে পর্যাপ্ত সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে মিল থেকেই বেশি দামে চিনি কিনতে হচ্ছে।

চিনির সরকারি নির্ধারিত দাম ১০২ টাকা। কিন্তু বাজারে এর চেয়ে কেজিপ্রতি - টাকা বেশি দামে ভোগ্যপণ্যটি বিক্রি হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারি বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে ১০৬ টাকা কেজি দরে। সে হিসাবে বাজারে এক মণ চিনি বিক্রি হচ্ছে হাজার ২৪০ টাকায়। খুচরা বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। মণপ্রতি বিক্রি হচ্ছে হাজার ৮০০ টাকা দরে।

নিতাইগঞ্জের চিনি ব্যবসায়ী গোপিনাথ ভাণ্ডারের স্বত্ব্বাধিকারী দিলিপ সাহা জানান, চাহিদা অনুযায়ী মিল গেট থেকে বাজারে চিনি সরবরাহ করা হচ্ছে না। ফলে সংকট রয়েছে। এখনো মিল গেট থেকে এক ট্রাক চিনি পেতে ১০-১৫ দিন, অনেক সময় তার চেয়ে বেশি অপেক্ষা করতে হয়। প্রতিদিন ট্রাক মিল গেটের সামনে বসিয়ে রাখতে গিয়ে আমাদের - হাজার টাকা করে বেশি ট্রাকের ভাড়া গুনতে হয়। পরিবহন খরচ যোগ করে চিনি বিক্রি করতে গিয়ে দাম বেশি রাখতে হয়। কিন্তু কোম্পানি থেকে চিনি ছাড় করার সময় আমাদের নির্ধারিত দাম লিখে দিচ্ছে।

চিনি ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান জানান, সরকার নির্ধারিত ১০২ টাকা দামে মিল গেট থেকে চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। ১০৩ টাকা কেজি দরে চিনির ডিও করতে হচ্ছে। ফলে পরিবহন খরচ দিয়ে আমাদের ১০৬ টাকা কেজি দরে চিনি পাইকারিতে বিক্রি করতে হচ্ছে।

চিনি ব্যবসায়ী আবজাল হোসেন বলেন, চিনির দাম কেজিপ্রতি ১২ টাকা বাড়িয়ে সরকার ১০২ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও ভোক্তারা সে দামে কিনতে পারছেন না। মিল মালিকরা দোষ চাপাচ্ছেন পাইকার ডিলারদের ওপর। তারা বলছেন, মিল গেট থেকে বেশি দামে চিনি ক্রয় করতে হচ্ছে। দুই পক্ষের মাঝে পড়ে আমাদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। পাইকাররা বিক্রির সময় পাকা রসিদ দিচ্ছেন না। ফলে ভ্রাম্যমাণ আদালত আমাদের জরিমানা করছেন।

মেঘনা গ্রুপের ফ্রেশ চিনি মিলের চিফ অপারেটিং অফিসার এমএ বাকার বলেন, মিল গেট থেকে চিনির সরবরাহের কোনো ঘাটতি নেই। বাজারে চাহিদা অনুযায়ী মিল থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতিদিন আমাদের মিল থেকে আড়াই হাজার টন চিনি সরবরাহ করা হচ্ছে। গত অক্টোবরে মিল থেকে প্রায় ৭০ হাজার টন চিনি সরবরাহ করা হয়েছে। সরকার নির্ধারিত দামেই চিনি দিচ্ছি। পাইকারি বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষকে ঠকাচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। সরকারকে পাইকারি বাজারে মনিটরিং বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

মোনায়েম গ্রুপের ইগলু চিনির কারখানার ম্যানেজার ডিস্ট্রিবিউশন মাসুদ আলম বলেন, ইগলু চিনির কারখানায় চিনি পেতে অপেক্ষা করতে হয় না। আমরা উৎপাদিত চিনি স্বাভাবিক গতিতে সরবরাহ করছি। গ্যাস সংকটের কারণে আমাদের উৎপাদন কম হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু কারখানা থেকে পণ্য সরবরাহের সময় ইউনিট মূল্য উল্লেখ করে দেয়া হচ্ছে। বেশি দাম চিনি বিক্রির কোনো সুযোগ নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন