বছরের প্রথম ১০ মাস

আরো গভীর হয়েছে চীনের শিল্প মুনাফার পতন

বণিক বার্তা ডেস্ক

নতুন করে আবারো বিভিন্ন শহরে লকডাউন ঘোষণা করা হচ্ছে। স্থবিরতা তৈরি হচ্ছে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার ঝুঁকি চাহিদা কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে রফতানিনির্ভর দেশগুলোয় অনিশ্চয়তা দেখা দিচ্ছে। অবস্থায় চীনের শিল্প খাতের মুনাফায় পতন আরো ত্বরান্বিত হয়েছে। আবাসন খাতের সংকটও কারখানা কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। সব মিলিয়ে চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি সংকুচিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কিছু বিশ্লেষক। খবর রয়টার্স।

গতকাল প্রকাশিত ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের (এনবিএস) তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে চীনের শিল্প মুনাফা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় শতাংশ কমেছে। যেখানে জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে মুনাফা কমার হার ছিল দশমিক শতাংশ। প্রথম আট মাসে যা ছিল দশমিক শতাংশ। অর্থাৎ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চীনা অর্থনীতির শিল্প খাত খাদের দিকে যাচ্ছে। মূল কার্যক্রম থেকে বার্ষিক কোটি ইউয়ানের বেশি আয় করা প্রতিষ্ঠানগুলো হিসাবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

চীনের ৪১টি প্রধান শিল্প খাতের মধ্যে ২২টির মুনাফা কমেছে। কভিড সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে নাগরিকদের ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষা বিচ্ছিন্ন করার জন্য চীনের জিরো কভিড নীতি দেশটির অর্থনীতি উৎপাদন খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বৈশ্বিক চাহিদা দুর্বল হওয়ার লক্ষণগুলো রফতানিমুখী নির্মাতাদের ওপর আরো বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এনবিএস একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে পুনরায় কভিড প্রাদুর্ভাব বাড়ছে এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এতে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো আরো চাপের সম্মুখীন হচ্ছে।

চায়না এভারব্রাইট ব্যাংকের বিশ্লেষক জো মাওহুয়া বলেন, সামগ্রিকভাবে দুর্বল অভ্যন্তরীণ চাহিদার কারণে দাম কমে যাওয়ায় এবং কিছু খাতে উৎপাদন ব্যয় বেশি থাকায় শিল্প মুনাফা চাপের মধ্যে রয়েছে।

বছরের প্রথম ১০ মাসে উৎপাদন খাতের মুনাফা ১৩ দশমিক শতাংশ কমেছে। জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে মুনাফায় পতনের হার ছিল ১৩ দশমিক শতাংশ। চীনের শিল্প মুনাফায় পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে পেট্রোলিয়াম, কয়লা জ্বালানি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প। খাতগুলোয় মুনাফার পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭০ দশমিক শতাংশ কমে গিয়েছে। যেখানে বছরের প্রথম নয় মাসে প্রতিষ্ঠানগুলোর মুনাফা কমার হার ছিল ৬৭ দশমিক শতাংশ। জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি পাওয়া খাতগুলোর মুনাফাও মন্থর হয়েছে। যেমন খনি খাতে প্রথম নয় মাসে ৭৬ শতাংশ মুনাফা প্রবৃদ্ধির তুলনায় জানুয়ারি-অক্টোবরে বেড়েছে ৬০ দশমিক শতাংশ।

এদিকে কিছু বিশ্লেষক আশঙ্কা করছেন, চতুর্থ প্রান্তিকে চীনের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) তৃতীয় প্রান্তিকের তুলনায় সংকুচিত হতে পারে। পাশাপাশি তারা আগামী বছরের পূর্বাভাসেও কাটছাঁট করছেন। কারণ দেশটির জিরো কভিড নীতি থেকে বেরিয়ে আসার পথটি ধীর হতে যাচ্ছে। জাপানভিত্তিক আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান নোমুরার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চতুর্থ প্রান্তিকের জিডিপি আগের তিন মাসের তুলনায় দশমিক শতাংশ সংকুচিত হবে। পাশাপাশি তারা সময়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক থেকে দশমিক শতাংশে নামিয়ে এনেছেন। একইভাবে অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের বিশ্লেষকরা ২০২২ ২০২৩ সালে চীনের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছেন।

গত মাসে চীনের শিল্পোৎপাদন এক বছর আগের তুলনায় শতাংশ বেড়েছে। যদিও রয়টার্সের জরিপে বিশ্লেষকরা দশমিক শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। শিল্পোৎপাদন বৃদ্ধি সেপ্টেম্বরের দশমিক শতাংশের চেয়েও মন্থর হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন