ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে বড় পতন

অক্টোবরে সংকোচনের মুখোমুখি সিঙ্গাপুরের শিল্পোৎপাদন

বণিক বার্তা ডেস্ক

কয়েক মাস ধরে শ্লথগতির পর এবার সংকোচনের মুখোমুখি হয়েছে সিঙ্গাপুরের শিল্পোৎপাদন। অক্টোবরে এক বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো দেশটির উৎপাদন খাত সংকুচিত হলো। ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে বড় পতন পুরো শিল্পোৎপাদন খাতে ধস নামিয়েছে। পাশাপাশি ইলেকট্রনিকস খাতের নিম্নমুখী প্রবণতা এক্ষেত্রে অবদান রেখেছে। উচ্চমূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিশ্বজুড়ে মুদ্রানীতি কঠোর এবং অর্থনৈতিক মন্দার ঝুঁকির মধ্যে উৎপাদন খাতে পতনের তথ্য জানাল এশিয়ার নগর রাষ্ট্রটি। খবর স্ট্রেইটস টাইমস।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন বোর্ডের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে সিঙ্গাপুরের শিল্পোৎপাদন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক শতাংশ কমেছে। তবে বায়োমেডিকেল বাদ দিলে অন্যান্য উৎপাদন বছরওয়ারি দশমিক শতাংশ বেড়েছে। গত মাসে উৎপাদন খাতের সংকোচন আশঙ্কার চেয়ে কিছুটা কম। বিশ্লেষকরা দশমিক শতাংশ সংকোচনের পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। সর্বশেষ কারখানা উৎপাদন সংকুচিত হয়েছিল ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে। সে সময় ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে বড় পতনের কারণে পুরো শিল্পোৎপাদন শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল।

মেব্যাংকের অর্থনীতিবিদ চুয়া হাক বিন লি জু ইয়ে বলেন, অক্টোবরে পুরো উৎপাদনে মন্দা এবং জ্বালানি তেলবহির্ভূত রফতানিতে সংকোচন ২০২৩ সালে সম্ভাব্য মন্দার প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। বিশ্বজুড়ে দুর্বল চাহিদার কারণে উৎপাদন বাণিজ্য-সম্পর্কিত পরিষেবাগুলো সংকুচিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে ভ্রমণের মতো কিছু খাতে পুনরুদ্ধার অব্যাহত থাকবে এবং সেগুলো প্রাক-কভিড পর্যায়ে উন্নীত হবে। তাছাড়া আগামী বছর অর্থনীতিতে মন্দা হলেও সেটা খুব বেশি তীব্র হওয়ার ঝুঁকি কম বলেও মনে করেন তারা।

মালয়েশিয়াভিত্তিক আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান আরএইচবির জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ বার্নাবাস গ্যান মনে করেন আগামী বছরের প্রথমার্ধ পর্যন্ত সিঙ্গাপুরের উৎপাদন খাতে মন্দা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, আমরা চীনের অর্থনৈতিক মন্দা এবং বিশ্বজুড়ে চাহিদা হ্রাসের বিরূপ প্রভাবের জন্য সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। ইলেকট্রনিকস রাসায়নিকসহ আগামী ছয় থেকে আট মাস সিঙ্গাপুরের রফতানিনির্ভর উৎপাদন নিম্নমুখী থাকবে। কারণ চীন বিশ্বের বৃহত্তম সেমিকন্ডাক্টর পেট্রোকেমিক্যালের আমদানিকারক।

তিনি যোগ করেন, সময়ের মধ্যেও পিকআপে ভ্রমণ বাড়তে থাকায় পরিবহন প্রকৌশল এবং খাদ্য পানীয় বিভাগ পুরো কারখানা উৎপাদনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি বায়োমেডিকেল উৎপাদন খাতেও পুনরুদ্ধার হতে পারে।

গত মাসে ইলেকট্রনিকস খাতের উৎপাদনে সংকোচন কিছুটা ধীর হয়েছে। সময়ে খাতটির উৎপাদন দশমিক শতাংশ কমেছে। কমার হার সেপ্টেম্বরে দশমিক শতাংশ এবং আগস্টে দশমিক শতাংশের তুলনায় অনেক কম। সিঙ্গাপুরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চাবিকাঠি হিসেবে বিবেচনা করা হয় শিল্পকে। তবে সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে এটি বিশ্বজুড়ে চাহিদা হ্রাসের মুখোমুখি হচ্ছে। দেশটির সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন অক্টোবরে দশমিক শতাংশ বেড়েছে। যেখানে সেপ্টেম্বরে বিভাগটিতে উৎপাদন দশমিক শতাংশ পতন হয়েছিল। সিঙ্গাপুরে বিশ্বের সেমিকন্ডাক্টরের ১১ শতাংশ এবং শিল্পের সরঞ্জামের ২০ শতাংশ সরবরাহ করে।

এছাড়া অন্যান্য ইলেকট্রনিক মডিউল যন্ত্রাংশ বিভাগের উৎপাদন ২৩ দশমিক শতাংশ কমে গিয়েছে। যদিও ভোক্তা ইলেকট্রনিকস বিভাগের উৎপাদন দশমিক শতাংশ প্রসারিত হয়েছে। সময়ে বায়োমেডিকেলের উৎপাদন বছরওয়ারি ১৪ দশমিক শতাংশ কমেছে। এর মধ্যে ফার্মাসিউটিক্যাল বিভাগের উৎপাদন কমার হার ২৭ দশমিক শতাংশ। যদিও উচ্চ রফতানি চাহিদার কারণে মেডিকেল প্রযুক্তি বিভাগের উৎপাদন দশমিক শতাংশ বেড়েছে।

অক্টোবরে রাসায়নিক উৎপাদনও দশমিক শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। তবে বিশ্বজুড়ে উড়োজাহাজ ভ্রমণে পুনরুদ্ধার অব্যাহত থাকায় পেট্রোলিয়ামের উৎপাদন ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। গত মাসে খাতের উৎপাদন ১৪ দশমিক শতাংশ বেড়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন