কয়লানির্ভরতা কমাতে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন দক্ষিণ আফ্রিকা

বণিক বার্তা ডেস্ক

জোহানেসবার্গের পূর্বে অবস্থিত কয়লাভিত্তিক দুভা বিদ্যুৎকেন্দ্র ছবি: এপি

ক্রমেই পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ছে। কয়লানির্ভর জ্বালানি উষ্ণতা বৃদ্ধির অন্যতম অনুঘটক। তাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশই কয়লাভিত্তিক জ্বালানির ওপর থেকে নির্ভরতা কমাতে আগ্রহী। দক্ষিণ আফ্রিকাও নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। কিন্তু এটি করতে গিয়ে ভিন্ন ধরনের সংকটের সম্মুখীন হয়েছে দেশটি। খবর এপি।

একদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার নীতিনির্ধারকরা সবুজ জ্বালানির দিকে অগ্রসরের চেষ্টা চালাচ্ছেন, অন্যদিকে কাজ হারানোর দুশ্চিন্তায় ভুগছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীল মানুষগুলো। কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার মাসাখান অঞ্চলের বাসিন্দাদের বড় একটি অংশ নির্ভর করে ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর। অবস্থায় সবুজ জ্বালানির দিকে অগ্রসরের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হলে তারা চাকরি হারানোর আশঙ্কা করছেন।

দক্ষিণ আফ্রিকায় উৎপাদিত বিদ্যুতের প্রায় ৮০ শতাংশই আসে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে, যা পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণও। তাই দেশটির সরকার পর্যায়ক্রমে তাদের প্রায় ১৫টি কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়িয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর ৫৯ শতাংশ নির্ভরতা কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির। পাশাপাশি ২০৫০ সালের মধ্যে দেশটি কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামানোর পরিকল্পনা নিয়েও অগ্রসর হচ্ছে।

গত বছর স্কটল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলনে ৮৫০ কোটি ডলারের তহবিল প্রাপ্তির প্রতিশ্রুতি পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। চলতি মাসে মিসরে অনুষ্ঠিত কপ২৭ সম্মেলনে ঋণ তহবিলের জন্য কয়লার ওপর নির্ভরতা হ্রাস সংক্রান্ত একটি চুক্তিতেও স্বাক্ষর করে।

কিন্তু কয়লাভিত্তিক জ্বালানির ওপর থেকে নির্ভরতা কমানো উন্নত অর্থনীতির জন্য খুব একটা সহজ হবে না। দক্ষিণ আফ্রিকার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসাগুলো বিদ্যুৎ সংকটে ভুগছে। দেশটির দৈনিক লোডশেডিংয়ের মাত্রা কখনো কখনো ঘণ্টারও বেশি হচ্ছে। কারণ রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাওয়ার ইউটিলিটি ইসকম পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না।

এর মধ্যেই চলছে রূপান্তর কার্যক্রম। এমপুমালাঙ্গা প্রদেশের কোমাটি পাওয়ার স্টেশনটি বন্ধ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের ঘোষণা অনুসারে, ৪৯ কোটি ৭০ লাখ ডলারের বিনিময়ে এটিকে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎকেন্দ্রে রূপান্তরের কার্যক্রম চলছে। এদিকে মাসাখানের বাসিন্দারা বলছেন, কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হলে তারা চাকরি হারাবেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বর্তমান বেকারত্বের হার ৩০ শতাংশের ওপরে। তাই সব মিলিয়ে দেশটির নীতিনির্ধারকরা নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন