ভারতে তুলা রফতানি নিয়ে উদ্বেগ ব্যবসায়ীদের

বণিক বার্তা ডেস্ক

ভারতের গুজরাট প্রদেশে কদি শহরের একটি প্রক্রিয়াকরণ ইউনিটে তুলা নিয়ে যাচ্ছেন এক কর্মী ছবি: রয়টার্স

চলতি মৌসুমে ভারতে তুলা উৎপাদন ব্যাপক বেড়েছে। এর পরও দেশটির ব্যবসায়ীরা পণ্যটি রফতানিতে হিমশিম খাচ্ছেন। আশঙ্কা রয়েছে রফতানি তলানিতে নামার। দেশটির কৃষকদের প্রত্যাশা কয়েক মাসের মধ্যে তুলার দাম আরো বাড়বে। অধিক লাভের আশায় তারা উৎপাদিত তুলা বিক্রি না করে মজুদ করে রেখেছেন। ফলে ব্যবসায়ী রফতানিকারক পর্যায়ে তুলা পৌঁছতে পারছে না। শিল্পসংশ্লিষ্টরা সম্প্রতি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তথ্য জানিয়েছে।

এদিকে সীমিত সরবরাহের কারণে স্থানীয় বাজারে তুলার দাম ব্যাপক বেড়েছে। বর্তমানে ভারতীয় তুলার বাজার মূল্য আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শের ঊর্ধ্বে অবস্থান করছে। কারণে শীর্ষ তুলা উৎপাদক দেশটি থেকে পণ্যটি ক্রয়ে আগ্রহ হারাচ্ছেন বিদেশী ক্রেতারা।

কটন অ্যাসোসিয়েমন অব ইন্ডিয়ার (সিএআই) প্রেসিডেন্ট অতুল গানাত্রা বলেন, গত মাসেই খেত থেকে নতুন মৌসুমের তুলা উত্তোলন শুরু হয়েছে। কিন্তু অনেক কৃষকের মাঝেই তুলা বিক্রিতে অনীহা লক্ষ করা গেছে। তারা গত মৌসুমের মতো ঝুঁকি নিয়ে দাম বাড়ার প্রত্যাশায় এসব তুলা মজুদ করে রাখছেন।

তিনি আরো বলেন, গত মৌসুমে ভারতের কৃষকরা তুলা বিক্রি করে রেকর্ড সর্বোচ্চ দাম পেয়েছিলেন। কিন্তু মৌসুমে উৎপাদন ভালো হওয়ায় সে সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারেও তুলার দর পড়ে গিয়েছে।

গত জুনে দেশটিতে তুলার দাম রেকর্ড উচ্চতা পৌঁছে। ১৭০ কেজি তুলার মূল্য স্থির হয় ৫২ হাজার ৪১০ রুপি। উৎপাদন কমে যাওয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে ঊর্ধ্বমুখী দাম এক্ষেত্রে জ্বালানি জুগিয়েছে। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত দাম কমেছে প্রায় ৪০ শতাংশ।

গুজরাটের বাবুলাল প্যাটেল নামের এক কৃষক বলেন, গত বছর আমদানি অপরিশোধিত তুলা বিক্রি করেছি হাজার রুপিতে (প্রতি ১০০ কেজি) কিন্তু পরে এটির দাম বেড়ে ১৩ হাজার রুপিতে উন্নীত হয়। কিন্তু বছর আমরা একই ভুল করব না। ১০ হাজার রুপির নিচে তুলা বিক্রি করব না।

ফিলিপ ক্যাপিটাল ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের কমোডিটি রিসার্চ বিভাগের প্রধান আশ্বীনি বানসুদ বলেন, কয়েক মৌসুম ধরে কৃষকরা তুলা সংরক্ষণ অবকাঠামো তৈরিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে।

শিল্পসংশ্লিষ্টদের প্রাক্কলন অনুযায়ী, ব্যাপক উৎপাদন সত্ত্বেও স্পট মার্কেটে স্বাভাবিকের তুলনায় অন্তত এক-তৃতীয়াংশ কম সরবরাহ এসেছে। ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে ভারতে কোটি ৪৪ লাখ বেল তুলা উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছরের তুলনায় উৎপাদন বাড়বে ১২ শতাংশ। অক্টোবরে মৌসুম শুরু হয়েছে।

ভারতের ব্যবসায়ীরা মৌসুমের এখন পর্যন্ত ৭০ হাজার বেল তুলা রফতানির চুক্তি করেছেন। অথচ গত মৌসুমের একই সময় চুক্তি করা হয়েছে পাঁচ লাখ বেলেরও বেশি। অর্থাৎ রফতানিতে ধস নামতে পারে। বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম চীন ভারতীয় তুলার প্রধান ক্রেতা।

ডিলারদের দাবি, স্থানীয় বাজারে দর সংশোধন না করলে রফতানিতে গতি ফিরবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন