ইয়াবা কারবারে অভিযুক্ত ১০১ জনের কারাদণ্ড

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, কক্সবাজার

কক্সবাজারের টেকনাফে আত্মসমর্পণ করা সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির চার ভাইসহ ১০১ ইয়াবা কারবারিকে মাদক মামলায় দেড় বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এছাড়া দায়েরকৃত অস্ত্র মামলা থেকে তাদের খালাস দেয়া হয়েছে।

গতকাল দুপুরে কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল রায় ঘোষণা করেন। সময় আদালতে উপস্থিত  ছিলেন ১৭ জন। বাকি ৮৪ জনকে পলাতক দেখানো হয়েছে। তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. ফরিদুল আলম।

তিনি জানান, ১০১ জনের প্রত্যেককে বছর মাস করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। প্রত্যেককে ২০ হাজার করে জরিমানা করা হয়। এছাড়া ওই সময় দায়েরকৃত অস্ত্র মামলায় অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেয়া হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, পলাতকদের মধ্যে অনেক জনপ্রতিনিধিসহ প্রভাবশালীরা রয়েছেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির চার ভাই আব্দুল আমিন, আব্দু শুক্কুর, শফিকুল ইসলাম, ফয়সাল রহমান, ভাগিনা সাহেদ রহমান নিপু, চাচাতো ভাই মোহাম্মদ আলম, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিহাদ বড় ভাই আব্দুর রহমান, বর্তমান জেলা পরিষদ সদস্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমেদের ছেলে দিদার মিয়া, টেকনাফ পৌরসভার নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুল বশর নুরশাদ, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের এনামুল হক এনাম মেম্বার প্রমুখ।

আদালতের বরাতে পিপি বলেন, আদালত অবজারভেশনে বলেছেন, যাতে আগামী দিনে কেউ পেশায় না ফেরেন সে জন্য রায় ভূমিকা রাখবে। এর আগে বেলা ১১টার দিকে কারাগারে থাকা ১৭ আসামিকে আদালতে আনা হয়। তারপর দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে রায় পড়া শুরু করেন বিচারক।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে ১০২ জন ইয়াবা কারবারি সাড়ে তিন লাখ ইয়াবা, ৩০টি দেশীয় তৈরি বন্দুক ৭০ রাউন্ড গুলিসহ আত্মসমর্পণ করেন। আত্মসমর্পণকারী ১০২ জনকে আসামি করে টেকনাফ মডেল থানায় অস্ত্র মাদক আইনে মামলা করেন টেকনাফ থানার তত্কালীন পরিদর্শক (অপারেশন) শরীফ ইবনে আলম। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় পরিদর্শক এবিএমএস দোহাকে। মামলা দায়েরের দিনই আদালতের মাধ্যমে সব আসামিকে গ্রেফতার দেখিয়ে কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। ১০২ আসামির মধ্যে মামলার বিচারকাজ চলাকালে ২০১৯ সালের আগস্ট মোহাম্মদ রাসেল নামে এক আসামি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এদিকে, মাদক মামলায় ১০১ জন ইয়াবা কারবারির দেড় বছর করে কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানাকে লঘু দণ্ড বলছে কক্সবাজারের নাগরিক সমাজ। তারা রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে এজন্য রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যপ্রমাণ তুলে ধরার ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন। তারা দণ্ডপ্রাপ্তদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন