আন্তর্জাতিক বাজারে গতকাল কমেছে তামার দাম। চীনে অব্যাহত করোনা সংক্রমণ বাড়ায় দেশটিতে শিল্প ধাতুটির চাহিদা নিয়ে উদ্বেগ তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ কারণে বৈশ্বিক সরবরাহ সংকট থাকা সত্ত্বেও তামার বাজার নিম্নমুখী চাপে পড়েছে। খবর বিজনেস রেকর্ডার।
এদিকে বিনিয়োগকারীরা মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার নির্ধারণের অপেক্ষায় আছেন। সুদের হার আরো বাড়ানো হবে কিনা সে বিষয়ে আগামী বৈঠকে ফেড সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ৭৫ বেসিস পয়েন্টে সুদের হার বাড়ানোর সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এমনটি ঘটলে ধাতুটির দাম আরো কমতে পারে।
গতকাল লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জে (এলএমই) তিন মাস সরবরাহ চুক্তিতে তামার দাম দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। প্রতি টনের মূল্য স্থির হয়েছে ৭ হাজার ৯৮৪ ডলারে। অন্যদিকে সাংহাই ফিউচারস এক্সচেঞ্জে ডিসেম্বরে সরবরাহ চুক্তিতে তামার দাম দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। প্রতি টনের মূল্য স্থির হয়েছে ৬৪ হাজার ৬৯০ ইউয়ান বা ৯ হাজার ৪৬ ডলার ২৯ সেন্টে।
গত ২২ নভেম্বর চীনে নতুন করে আরো ২৯ হাজার ১৫৭ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। সাত মাসের মধ্যে একদিনে এটিই সর্বোচ্চ সংক্রমণ। বেইজিং, সাংহাই ও গোয়াংজুসহ বড় শহরগুলোয় করোনা প্রতিরোধে আরো কঠোর নীতিমালা গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে দেশটির অর্থনীতির গতি আরো শ্লথ হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে তামার বৈশ্বিক বিগলন কার্যক্রম গত মাসেও কমেছে। এ নিয়ে টানা দুই মাস মন্দার মুখে এ খাত। দুর্বল চাহিদা, অর্থনৈতিক মন্দা, রক্ষণাবেক্ষণজনিত সমস্যায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাসহ নানা কারণে বিগলন কমছে। খবর রয়টার্স।
পণ্যবাজার ব্রোকার ম্যারেক্স জানায়, উত্তর আমেরিকার দেশগুলো ছাড়া বিশ্বের অন্য সব দেশে বিগলন কার্যক্রম কমেছে। জ্বালানি ও পরিবহনের ঊর্ধ্বমুখী ব্যয়, ধাতব পণ্যের দাম কমে যাওয়া, সুদের হার বৃদ্ধিসহ নানা কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর লাভ কমে গিয়েছে। এ কারণে তামা বিগলন করছে না।
এদিকে বিগলন কমে যাওয়ায় উৎপাদনও কমছে। এতে চলতি বছর বড় আকারের ঘাটতির পথে হাঁটছে তামার বৈশ্বিক বাজার। তবে আগামী বছর ধাতুটির বাজারে লক্ষণীয় উদ্বৃত্ত তৈরি হতে পারে। ইন্টারন্যাশনাল কপার স্টাডি গ্রুপের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কায় বাজারজুড়ে ব্যবহারিক ধাতুটির দাম যেমন কমছে, তেমনি চাহিদাও নিম্নমুখী। কিন্তু একই পরিস্থিতির কারণে ধাতুটির উত্তোলন গতি হারাচ্ছে। ফলে গত বছর যে পরিমাণ ঘাটতি তৈরি হয়েছিল তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আগামী বছর এ ঘাটতি কেটে যাবে।