
গর্ভকালে প্রসূতি ও অনাগত সন্তানের সঠিক পরিচর্যার জন্য দেয়া হয় প্রসবপূর্ব সেবা বা অ্যান্টিনেটাল কেয়ার (এএনসি)। পরিপূর্ণভাবে এ সেবা নিতে পারছে না দেশের প্রসূতিদের বড় একটি অংশ। অন্তত দুই-তৃতীয়াংশের বেশি প্রসূতি প্রসবপূর্ব সেবার চতুর্থ পর্যায়ে এসে ঝরে যাচ্ছেন। এতে মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হারে পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব। মূলত সচেতনতার অভাব, অবকাঠামো ও লোকবলের সংকট, প্রচার ও প্রচারণার অভাবের কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।
গর্ভধারণ থেকে শুরু করে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত প্রসূতিকে কমপক্ষে চারবার এ পর্যবেক্ষণের আওতায় আনার সুপারিশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। প্রসবপূর্ব সেবায় ঘাটতি হলে প্রসূতি ও গর্ভের সন্তান ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন গাইনি, প্রসূতি ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশে সাধারণত গর্ভের সন্তানের বয়স ১২ সপ্তাহ, ২৮ সপ্তাহ, ৩২ সপ্তাহ ও ৩৬ সপ্তাহ থাকাকালে চিকিৎসক বা প্রসূতিবিদ্যায় অভিজ্ঞ ব্যক্তির পর্যবেক্ষণ প্রসূতির জন্য জরুরি।
গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. সামিনা চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, শুরুতে প্রসবপূর্ব সেবা বা অ্যান্টিনেটাল কেয়ারে প্রসূতিদের আনতে পারলেও পরবর্তী সময়ে তাদের আনা যাচ্ছে না। এএনসির মাধ্যমেই আমরা নির্ণয় করতে পারি ওই প্রসূতি কতটুকু ঝুঁকিপূর্ণ।
গর্ভকালে প্রসবপূর্ব সেবা দিয়ে অনেক ঝুঁকি এড়িয়ে নেয়া যায়। তবে সরকারের পরিসংখ্যানে দেশের প্রসূতিদের সব চিত্র উঠে আসছে না বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য) ডা. মো. মাহমুদুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, সচেতনতার অভাবে প্রসবপূর্ব সেবা থেকে প্রসূতিরা বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রসূতিরা মনে করেন তারা সুস্থ রয়েছেন। এ অবস্থাই প্রসবপূর্ব সেবা নিতে হাসপাতাল বা মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার প্রয়োজন মনে করেন না। তবে যন্ত্রপাতি ও ওষুধের পর্যাপ্ততা থাকলেও অবকাঠামো এবং লোকবলের কিছুটা সংকট রয়েছে।