দেশে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের প্রবর্তক হিসেবে ব্যাংক এশিয়া গর্বিত

ব্যাংকিং সেবাবহির্ভূত বিশাল জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল সেবার আওতায় আনতে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম আমরাই (ব্যাংক এশিয়া) ২০১৪ সালে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা প্রবর্তন করি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সরাসরি পর্যবেক্ষণ নিবিড় কার্যক্রমে দ্রুততম সময়ে উদ্যোগ আজ অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হচ্ছে। বর্তমানে ব্যাংক এশিয়াসহ দেশের ৩১টি ব্যাংক ২০ হাজারেরও বেশি এজেন্ট আউটলেটের মাধ্যমে কোটি ৬৬ লাখেরও বেশি গ্রাহকের কাছে সেবা পৌঁছে দিচ্ছে। ব্যাংক এশিয়া একাই সেবা দিচ্ছে ৩২ দশমিক ৩৭ শতাংশ অ্যাকাউন্টধারী গ্রাহকের।

ব্যক্তিক প্রাতিষ্ঠানিক এজেন্ট, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার, সিটি ডিজিটাল সেন্টার, ডিজিটাল পোস্ট অফিস মাইক্রো-মার্চেন্ট চ্যানেল ব্যবহার করে ব্যাংক এশিয়া রেমিট্যান্সসহ নানা ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দিচ্ছে গ্রাহকের দোরগোড়ায়।

এজেন্ট ব্যাংকিং ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে একটা আর্থিক ইকোসিস্টেম তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। সেবা বৈধ উপায়ে সব ধরনের লেনদেন সহজ করেছে, ঝুঁকিপূর্ণ লেনদেন কমিয়ে এনেছে এবং সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে ভূমিকা রাখছে। এখন গ্রাম পর্যায়ে সব শ্রেণীর মানুষের সঞ্চয়প্রবণতা যেমন বাড়ছে, তেমনি চাহিদামতো ঋণপ্রাপ্তির সুযোগ সম্ভাবনা প্রসারিত হচ্ছে। নিরক্ষর, স্বল্পশিক্ষিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে সেবা এখন আস্থাভাজন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

সব ব্যাংক মিলে বর্তমানে (সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) চ্যানেলে আমানতের পরিমাণ ৩০ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকারও বেশি। আর প্রদেয় ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে হাজার ৮৮০ কোটি টাকারও অধিক। একই সঙ্গে এজেন্ট ব্যাংকিং চ্যানেলে নারীর অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। মোট গ্রাহকের ৪৮ দশমিক ৮৪ শতাংশ নারী। মূলত যারা গ্রামে বসবাস করে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ীই এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা সাজানো হয়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এজেন্ট ব্যাংকিং বড় ভূমিকা পালন করছে। আমি মনে করি, বিশেষায়িত ব্যাংকিং আমাদের দেশের, বিশেষত গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখছে।

দেশে রেমিট্যান্স (ইনওয়ার্ড রেমিট্যান্স) আসছে যেমন পিনের মাধ্যমে, তেমনি সরাসরি গ্রাহকের অ্যাকাউন্টেও। চলতি বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমাদের ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৩৭ হাজারেরও বেশি গ্রাহক অ্যাকাউন্টে রেমিট্যান্স গ্রহণ করেছেন হাজার ২৫৩ কোটি টাকা। আর পিনের মাধ্যমে হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা গ্রহণ করেছেন ১৮ লাখ ১৪ হাজার গ্রাহক।

সরাসরি অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া টাকা ব্যাংক এশিয়ার গ্রাহক কাছাকাছি যেকোনো এজেন্ট আউটলেট থেকে অথবা এটিএম ব্যবহার করে উত্তোলন করার সুযোগ পাচ্ছেন। আবার ব্যাংক এশিয়া মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে ঘরে বসেও কাঙ্ক্ষিত লেনদেন সম্পন্ন করতে পারছেন।

এজেন্ট ব্যাংকিং চ্যানেলের ৯৩ শতাংশ গ্রাহকই গ্রামীণ জনগোষ্ঠী। স্বাভাবিকভাবে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লাখ কোটিরও বেশি রেমিট্যান্সের টাকা গ্রাহকের হাতে পৌঁছে যাওয়া একটা মাইলফলক। অথচ একসময় রেমিট্যান্সের একটা বড় অংশ আসত অবৈধ ঝুঁকিপূর্ণ উপায়ে। দেশে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার প্রবর্তক হিসেবে ব্যাংক এশিয়া অর্জনের গর্বিত অংশীদার।

রেমিট্যান্স সেবাপ্রাপ্তিকে আরো বেশি সহজ, দ্রুততর ঝুঁকিমুক্ত করার জন্য ব্যাংক এশিয়া প্রবর্তন করেছে রোবোটিক অটোমেশন প্রসেস। অ্যান্টি মানি লন্ডারিং চেকিংও হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে। আবার ব্যাংক এশিয়া যাতে এজেন্ট পয়েন্ট থেকে সরাসরি টাকা দিতে পারে সেজন্য ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নসহ বিভিন্ন গেটওয়ে এজেন্টদের বিশেষ অনুমোদন দিয়েছে। এসব সহায়তা ইনোভেশন রেমিট্যান্স সেবাকে অনেক বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে এবং এর প্রবাহ বাড়িয়েছে। গ্রাহককে দেয়া প্রণোদনাও সেবাপ্রবাহ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে।

শিগগিরই ব্যাংক এশিয়ার ডিজিটাল নেটওয়ার্কে সংযোজন হতে যাচ্ছে ভয়েস ব্যাংকিং আমি মনে করি, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে ইনোভেশন ভূমিকা রাখবে।

রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর জন্য আমরা বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রচারণা এবং টেকনোলজিক্যাল ইনোভেশন অব্যাহত রাখব। হাতের কাছে গ্রাহক যাতে সেবা উপভোগ করতে পারেন সেজন্য আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন